০৫:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
২০২৫ সালের তারকা: সিনেমার ভবিষ্যৎ আর নতুন তারকাখ্যাতির অর্থ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ২ জানুয়ারির নির্দেশিকা প্রকাশ প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ছিল পরিকল্পিত, সরকারের ভেতরের একটি অংশ জড়িত: নাহিদ ঢাকার ভারতীয় ভিসা কেন্দ্রে হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোতে হামলা গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত: মির্জা ফখরুল খুলনায় ভারতীয় ভিসা সেবা বন্ধ মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সুকুমার রঞ্জন ঘোষের মৃত্যু ১৬ জানুয়ারি পবিত্র শবে মেরাজ পালিত হবে দেশে বাংলাদেশ হাইকমিশনে নিরাপত্তা ভাঙনের অভিযোগ নাকচ ভারতের, দিপু হত্যায় গভীর উদ্বেগ দিপু চন্দ্র দাস হত্যার বিচার দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংখ্যালঘুদের মানববন্ধন

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় ডিনের পদত্যাগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনভর শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, ডিনদের কক্ষে তালা এবং রেজিস্ট্রার দপ্তর অবরুদ্ধ থাকার ঘটনার পর ছয়জন ডিন দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করে পদত্যাগ করেছেন। রোববার রাত আটটার দিকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তারা এই সিদ্ধান্ত জানান বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

আন্দোলনের প্রেক্ষাপট
রোববার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা আওয়ামীপন্থি  ছয় ডিনের পদত্যাগ দাবিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করেন। সকাল দশটার দিকে তারা ডিনস কমপ্লেক্সে গিয়ে বিভিন্ন অনুষদের ডিনদের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। ওই দিন সংশ্লিষ্ট ডিনদের কাউকেই নিজ নিজ বিভাগে ক্লাস নিতে দেখা যায়নি।

রেজিস্ট্রার দপ্তর অবরুদ্ধ
দুপুর আড়াইটার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার দপ্তরে গিয়ে তাদের দাবি তুলে ধরেন। এ সময় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ভবন ত্যাগ না করার ঘোষণা দেন শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদ ফয়সাল। এরপর রেজিস্ট্রার দপ্তরের পাশাপাশি উপ-উপাচার্য ও প্রক্টর দপ্তরেও তালা দেওয়া হয়। প্রায় আধা ঘণ্টা পর তালা খুলে দেওয়া হলেও পরিস্থিতি ছিল উত্তপ্ত।

পদত্যাগের ঘোষণা
রাতের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, প্রক্টর ও জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসকের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের একটি বৈঠক হয়। সেখানে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও পরে আরেকটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় ছয় ডিন দায়িত্ব পালন করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার জানান, শিক্ষার্থী ও ডিনদের সঙ্গে আলোচনার পর এই অবস্থান নেওয়া হয়েছে এবং বিষয়টি নিয়ে সোমবার উপাচার্য সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করলেন রাবির ছয় ডিন

যারা পদত্যাগ করেছেন
পদত্যাগকারী ছয় ডিন হলেন আইন অনুষদের অধ্যাপক ড. আবু নাসের মো. ওয়াহিদ, বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ড. নাসিমা আখতার, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধ্যাপক ড. এ এস এম কামরুজ্জামান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ড. এস এম একরাম উল্লাহ, প্রকৌশল অনুষদের অধ্যাপক ড. বিমল কুমার প্রামাণিক এবং ভূবিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ড. এ এইচ এম সেলিম রেজা।

ডিনদের বক্তব্য ও উপাচার্যের নীরবতা
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এস এম একরাম উল্লাহ বলেন, দিনের ঘটনার সব কিছু তিনি জানেন না, তবে দায়িত্ব পালন করতে তারা আগ্রহী নন—এ কথা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

পূর্বাপর ঘটনা
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর শিক্ষক সমিতি, ডিন, সিন্ডিকেট, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি এবং শিক্ষা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১২টি অনুষদের মধ্যে ছয়টি অনুষদের ডিন নির্বাচিত হন আওয়ামীপন্থি হলুদ প্যানেল থেকে। গত বুধবার এসব ডিনের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হলেও বিশ্ববিদ্যালয় আইনের আওতায় নতুন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত তাদের স্বপদে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন উপাচার্য। সেই সিদ্ধান্ত ঘিরেই মূলত শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়, যা শেষ পর্যন্ত পদত্যাগে গিয়ে পৌঁছায়।

জনপ্রিয় সংবাদ

২০২৫ সালের তারকা: সিনেমার ভবিষ্যৎ আর নতুন তারকাখ্যাতির অর্থ

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় ডিনের পদত্যাগ

০৩:৩৩:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনভর শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, ডিনদের কক্ষে তালা এবং রেজিস্ট্রার দপ্তর অবরুদ্ধ থাকার ঘটনার পর ছয়জন ডিন দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করে পদত্যাগ করেছেন। রোববার রাত আটটার দিকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তারা এই সিদ্ধান্ত জানান বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

আন্দোলনের প্রেক্ষাপট
রোববার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা আওয়ামীপন্থি  ছয় ডিনের পদত্যাগ দাবিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করেন। সকাল দশটার দিকে তারা ডিনস কমপ্লেক্সে গিয়ে বিভিন্ন অনুষদের ডিনদের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। ওই দিন সংশ্লিষ্ট ডিনদের কাউকেই নিজ নিজ বিভাগে ক্লাস নিতে দেখা যায়নি।

রেজিস্ট্রার দপ্তর অবরুদ্ধ
দুপুর আড়াইটার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার দপ্তরে গিয়ে তাদের দাবি তুলে ধরেন। এ সময় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ভবন ত্যাগ না করার ঘোষণা দেন শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদ ফয়সাল। এরপর রেজিস্ট্রার দপ্তরের পাশাপাশি উপ-উপাচার্য ও প্রক্টর দপ্তরেও তালা দেওয়া হয়। প্রায় আধা ঘণ্টা পর তালা খুলে দেওয়া হলেও পরিস্থিতি ছিল উত্তপ্ত।

পদত্যাগের ঘোষণা
রাতের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, প্রক্টর ও জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসকের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের একটি বৈঠক হয়। সেখানে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও পরে আরেকটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় ছয় ডিন দায়িত্ব পালন করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার জানান, শিক্ষার্থী ও ডিনদের সঙ্গে আলোচনার পর এই অবস্থান নেওয়া হয়েছে এবং বিষয়টি নিয়ে সোমবার উপাচার্য সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করলেন রাবির ছয় ডিন

যারা পদত্যাগ করেছেন
পদত্যাগকারী ছয় ডিন হলেন আইন অনুষদের অধ্যাপক ড. আবু নাসের মো. ওয়াহিদ, বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ড. নাসিমা আখতার, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধ্যাপক ড. এ এস এম কামরুজ্জামান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ড. এস এম একরাম উল্লাহ, প্রকৌশল অনুষদের অধ্যাপক ড. বিমল কুমার প্রামাণিক এবং ভূবিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ড. এ এইচ এম সেলিম রেজা।

ডিনদের বক্তব্য ও উপাচার্যের নীরবতা
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এস এম একরাম উল্লাহ বলেন, দিনের ঘটনার সব কিছু তিনি জানেন না, তবে দায়িত্ব পালন করতে তারা আগ্রহী নন—এ কথা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

পূর্বাপর ঘটনা
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর শিক্ষক সমিতি, ডিন, সিন্ডিকেট, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি এবং শিক্ষা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১২টি অনুষদের মধ্যে ছয়টি অনুষদের ডিন নির্বাচিত হন আওয়ামীপন্থি হলুদ প্যানেল থেকে। গত বুধবার এসব ডিনের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হলেও বিশ্ববিদ্যালয় আইনের আওতায় নতুন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত তাদের স্বপদে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন উপাচার্য। সেই সিদ্ধান্ত ঘিরেই মূলত শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়, যা শেষ পর্যন্ত পদত্যাগে গিয়ে পৌঁছায়।