বাংলাদেশে অবস্থানরত ভারতীয় মেডিকেল শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অল ইন্ডিয়া মেডিকেল স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটি জানিয়েছে, বাংলাদেশে থাকা বহু ভারতীয় শিক্ষার্থী বর্তমানে অনিরাপদ ও অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে দিন কাটাচ্ছেন এবং এ নিয়ে তারা ও তাঁদের পরিবার ভয়াবহ মানসিক চাপে রয়েছেন।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পাঠানো এক চিঠিতে সংগঠনটি “তাৎক্ষণিক ও জরুরি হস্তক্ষেপ” চেয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান ভারতবিরোধী মনোভাবের মধ্যে আটকে পড়া ভারতীয় মেডিকেল শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এবং তাঁদের পরিবারের কাছ থেকে সংগঠনটি গুরুতর ও উদ্বেগজনক বার্তা পাচ্ছে।
সংগঠনের বক্তব্য অনুযায়ী, বর্তমান পরিস্থিতির কারণে বহু শিক্ষার্থী নিরাপত্তাহীনতা, ভয়, উৎকণ্ঠা এবং গভীর মানসিক অস্থিরতার মধ্যে রয়েছেন। একই সঙ্গে ভারতের ভেতরেও তাঁদের পরিবারগুলোর মধ্যে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিদেশে চিকিৎসা শিক্ষায় নিয়োজিত ভারতীয় শিক্ষার্থীরা সংকটকালে ভারত সরকারের সহায়তা ও সুরক্ষা পাওয়ার প্রত্যাশা নিয়েই সেখানে যান। সে কারণেই প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানানো হয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় কূটনৈতিক মিশনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত সব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
সংগঠনটি আরও বলেছে, ভারতীয় দূতাবাস ও সংশ্লিষ্ট মিশনের মাধ্যমে মাঠপর্যায়ে সহায়তা জোরদার করা জরুরি। একই সঙ্গে শিক্ষার্থী ও তাঁদের পরিবারের সঙ্গে সময়োপযোগী, স্পষ্ট ও স্বচ্ছ যোগাযোগ বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যাতে আতঙ্ক ও ভ্রান্ত তথ্য ছড়িয়ে না পড়ে। অল ইন্ডিয়া মেডিকেল স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন এই বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারভিত্তিক জরুরি পরিস্থিতি হিসেবে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীদের জীবন, মর্যাদা ও ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত থাকে।

বাংলাদেশে কী ঘটছে
এই আবেদন এমন এক সময়ে এসেছে, যখন বাংলাদেশে নতুন করে রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে যুক্ত রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি আবারও বিক্ষোভ ও ভারতবিরোধী স্লোগান শুরু হয়েছে। ওই জুলাই অভ্যুত্থানের ফলেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ঘটে।
পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক এবং জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম পরিচিত মুখ ওসমান হাদির হত্যার পর। ১২ ডিসেম্বর ঢাকার বিজয়নগর এলাকায় রিকশায় চলার সময় খুব কাছ থেকে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলেও ১৮ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়।
ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ঢাকায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং তাঁর সমর্থকেরা বিচার দাবি করেন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ২০ ডিসেম্বর জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















