০৪:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
জাতীয় নির্বাচনে জামায়াত উলেমা-ই-ইসলাম বাংলাদেশকে চার আসন ছাড়ল বিএনপি নোভোএয়ারের ডিজিটাল সাফল্য: এক্সেলেন্স ইন বিজনেস ২০২৫ পুরস্কার অর্জন দুবাইয়ে সোনার ঝলক, ইতিহাস গড়ে ২২ ক্যারেট ছুঁল ৫০০ দিরহাম বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে হামলা নিয়ে ভারতের কাছে গভীর উদ্বেগ জানাল ঢাকা পদ্মা ব্যাংকের একশ তেত্রিশতম পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত ঘরের মাটিতে যুদ্ধের প্রস্তুতি: ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা পুনর্গঠনে ধীরগতি নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ চিপের স্বনির্ভরতার স্বপ্নে আমেরিকার লাল ফিতার বাধা অর্গান সঙ্গীতে ধ্যানের আমন্ত্রণ এলেন আরকব্রো ম্যানহাটনে ফিরছে বামিয়ান বুদ্ধ, ধ্বংসের স্মৃতি থেকে মানবতার নতুন প্রতীক ক্যামেরায় ধরা পড়ল মেরু ভালুকের বিরল দত্তক গল্প, প্রকৃতিতে নজিরবিহীন ঘটনা

মাদুরো পতনের ছক কি যুদ্ধ ডেকে আনবে ক্যারিবিয়ানে

যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক তৎপরতা যখন রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর দিকে ঘোরানো হচ্ছে, ঠিক তখনই ভেনেজুয়েলা ঘিরে বাড়ছে আরেক সম্ভাব্য সংঘাতের আশঙ্কা। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, ওয়াশিংটন নিকোলাস মাদুরো সরকারকে দ্রুত সরাতে সীমিত সামরিক অভিযানের পথ খোলা রাখছে। তবে এই পদক্ষেপ যতটা দ্রুত সরকার পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়, ততটাই দীর্ঘ অস্থিরতার ঝুঁকি সামনে নিয়ে আসে।

মাদুরোর অবস্থান কতটা দুর্বল
নির্বাচনী কারচুপি ও আন্তঃদেশীয় মাদক পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে মাদুরোর অবস্থান বহুদিন ধরেই চাপে। যুক্তরাষ্ট্র ও একাধিক ইউরোপীয় দেশ সাম্প্রতিক নির্বাচনের ফল মানতে অস্বীকার করেছে। বিরোধী প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করে কূটনৈতিক সমর্থনও দেখানো হয়েছে। তবু অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, শুধু আন্তর্জাতিক চাপেই কারাকাসে ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটেনি।

ওয়াশিংটনের শক্তি প্রদর্শন
ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে মার্কিন নৌ ও বিমান শক্তির উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। যুদ্ধজাহাজ, ঘাঁটি সক্রিয়করণ এবং মাদকবিরোধী অভিযানের ঘোষণা স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে যে যুক্তরাষ্ট্র চাপ বাড়াতে প্রস্তুত। ওয়াশিংটনের বক্তব্যে মাদক পাচার রোধের কথা বলা হলেও, ভেনেজুয়েলা সরকার এটিকে সার্বভৌমত্বের ওপর হুমকি হিসেবে দেখছে।

ভেনেজুয়েলার সামরিক বাস্তবতা
বিশ্লেষকদের ধারণা, সরাসরি সামরিক সংঘর্ষে ভেনেজুয়েলার নিয়মিত বাহিনী দীর্ঘ সময় টিকতে পারবে না। তবে বিষয়টি এখানেই শেষ নয়। দেশটির নিরাপত্তা কাঠামো বহু বছর ধরে অসম যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। সীমিত সংখ্যক সশস্ত্র গোষ্ঠী ও বড় ধরনের নাশকতা চালাতে সক্ষম, বিশেষ করে অর্থনীতি ও অবকাঠামো যখন আগে থেকেই ভঙ্গুর।

US wargames played out scenarios for Maduro's fall. None of them ended well  for Venezuela | Venezuela | The Guardian

গেরিলা ও আঞ্চলিক ঝুঁকি
সবচেয়ে বড় শঙ্কা তৈরি করছে সশস্ত্র গোষ্ঠী ও সীমান্তবর্তী মিলিশিয়াদের ভূমিকা। কলম্বিয়ার গেরিলা সংগঠন সহ নানা সশস্ত্র শক্তি ভেনেজুয়েলার ভেতরে সক্রিয়। মাদুরো পতনের পর এরা যদি সংঘাতে জড়ায়, তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে। এতে শুধু ভেনেজুয়েলা নয়, পুরো লাতিন আমেরিকায় শরণার্থী সংকট ও নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

দীর্ঘ অস্থিরতার আশঙ্কা
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, দ্রুত সামরিক সাফল্য এলেও তার পরের দিনটি হবে সবচেয়ে কঠিন। নতুন সরকার গঠনের প্রশ্ন, নিরাপত্তা বাহিনীর আনুগত্য এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীর দমন সব মিলিয়ে দীর্ঘস্থায়ী অস্থিরতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অতীতের ইরাক কিংবা ইউক্রেন অভিজ্ঞতা দেখায়, পরিকল্পিত স্বল্পমেয়াদি অভিযান অনেক সময় দীর্ঘ সংঘাতে রূপ নেয়।

আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া ও আন্তর্জাতিক দ্বিধা
লাতিন আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলো সামরিক হস্তক্ষেপে অনীহা প্রকাশ করেছে। তাদের আশঙ্কা, বাইরের আক্রমণ জাতীয়তাবাদী আবেগ উসকে দিয়ে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করবে। ফলে ভেনেজুয়েলা প্রশ্নে আন্তর্জাতিক মহলে ঐক্যের অভাব স্পষ্ট।

#ভেনেজুয়েলা #মাদুরো #যুক্তরাষ্ট্র #ভূরাজনীতি #ক্যারিবিয়ান #লাতিনআমেরিকা #আন্তর্জাতিকসংঘাত

জনপ্রিয় সংবাদ

জাতীয় নির্বাচনে জামায়াত উলেমা-ই-ইসলাম বাংলাদেশকে চার আসন ছাড়ল বিএনপি

মাদুরো পতনের ছক কি যুদ্ধ ডেকে আনবে ক্যারিবিয়ানে

১২:৫২:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক তৎপরতা যখন রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর দিকে ঘোরানো হচ্ছে, ঠিক তখনই ভেনেজুয়েলা ঘিরে বাড়ছে আরেক সম্ভাব্য সংঘাতের আশঙ্কা। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, ওয়াশিংটন নিকোলাস মাদুরো সরকারকে দ্রুত সরাতে সীমিত সামরিক অভিযানের পথ খোলা রাখছে। তবে এই পদক্ষেপ যতটা দ্রুত সরকার পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়, ততটাই দীর্ঘ অস্থিরতার ঝুঁকি সামনে নিয়ে আসে।

মাদুরোর অবস্থান কতটা দুর্বল
নির্বাচনী কারচুপি ও আন্তঃদেশীয় মাদক পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে মাদুরোর অবস্থান বহুদিন ধরেই চাপে। যুক্তরাষ্ট্র ও একাধিক ইউরোপীয় দেশ সাম্প্রতিক নির্বাচনের ফল মানতে অস্বীকার করেছে। বিরোধী প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করে কূটনৈতিক সমর্থনও দেখানো হয়েছে। তবু অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, শুধু আন্তর্জাতিক চাপেই কারাকাসে ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটেনি।

ওয়াশিংটনের শক্তি প্রদর্শন
ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে মার্কিন নৌ ও বিমান শক্তির উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। যুদ্ধজাহাজ, ঘাঁটি সক্রিয়করণ এবং মাদকবিরোধী অভিযানের ঘোষণা স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে যে যুক্তরাষ্ট্র চাপ বাড়াতে প্রস্তুত। ওয়াশিংটনের বক্তব্যে মাদক পাচার রোধের কথা বলা হলেও, ভেনেজুয়েলা সরকার এটিকে সার্বভৌমত্বের ওপর হুমকি হিসেবে দেখছে।

ভেনেজুয়েলার সামরিক বাস্তবতা
বিশ্লেষকদের ধারণা, সরাসরি সামরিক সংঘর্ষে ভেনেজুয়েলার নিয়মিত বাহিনী দীর্ঘ সময় টিকতে পারবে না। তবে বিষয়টি এখানেই শেষ নয়। দেশটির নিরাপত্তা কাঠামো বহু বছর ধরে অসম যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। সীমিত সংখ্যক সশস্ত্র গোষ্ঠী ও বড় ধরনের নাশকতা চালাতে সক্ষম, বিশেষ করে অর্থনীতি ও অবকাঠামো যখন আগে থেকেই ভঙ্গুর।

US wargames played out scenarios for Maduro's fall. None of them ended well  for Venezuela | Venezuela | The Guardian

গেরিলা ও আঞ্চলিক ঝুঁকি
সবচেয়ে বড় শঙ্কা তৈরি করছে সশস্ত্র গোষ্ঠী ও সীমান্তবর্তী মিলিশিয়াদের ভূমিকা। কলম্বিয়ার গেরিলা সংগঠন সহ নানা সশস্ত্র শক্তি ভেনেজুয়েলার ভেতরে সক্রিয়। মাদুরো পতনের পর এরা যদি সংঘাতে জড়ায়, তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে। এতে শুধু ভেনেজুয়েলা নয়, পুরো লাতিন আমেরিকায় শরণার্থী সংকট ও নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

দীর্ঘ অস্থিরতার আশঙ্কা
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, দ্রুত সামরিক সাফল্য এলেও তার পরের দিনটি হবে সবচেয়ে কঠিন। নতুন সরকার গঠনের প্রশ্ন, নিরাপত্তা বাহিনীর আনুগত্য এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীর দমন সব মিলিয়ে দীর্ঘস্থায়ী অস্থিরতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অতীতের ইরাক কিংবা ইউক্রেন অভিজ্ঞতা দেখায়, পরিকল্পিত স্বল্পমেয়াদি অভিযান অনেক সময় দীর্ঘ সংঘাতে রূপ নেয়।

আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া ও আন্তর্জাতিক দ্বিধা
লাতিন আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলো সামরিক হস্তক্ষেপে অনীহা প্রকাশ করেছে। তাদের আশঙ্কা, বাইরের আক্রমণ জাতীয়তাবাদী আবেগ উসকে দিয়ে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করবে। ফলে ভেনেজুয়েলা প্রশ্নে আন্তর্জাতিক মহলে ঐক্যের অভাব স্পষ্ট।

#ভেনেজুয়েলা #মাদুরো #যুক্তরাষ্ট্র #ভূরাজনীতি #ক্যারিবিয়ান #লাতিনআমেরিকা #আন্তর্জাতিকসংঘাত