ভারতের তিনটি শহরে বাংলাদেশি কনস্যুলার ও ভিসা সেবা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। অনিবার্য পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মিশনগুলো। সাম্প্রতিক বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও নিরাপত্তা উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে এই পদক্ষেপকে দুই দেশের সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনার ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
নয়াদিল্লিতে ভিসা সেবা বন্ধের প্রেক্ষাপট
নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে অল্পসংখ্যক বিক্ষোভকারীর সমাবেশের পর সোমবার ভিসা কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত সূত্রগুলো জানিয়েছে, নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের কনস্যুলার সেবা বন্ধ থাকবে। হাইকমিশনের নোটিশে অনিবার্য পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করা হলেও নির্দিষ্ট সময়সীমা জানানো হয়নি।
আগরতলা ও শিলিগুড়িতে একই সিদ্ধান্ত
ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সামনে বিভিন্ন সংগঠনের বিক্ষোভের পর রোববার সেখানকার ভিসা কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। একই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত ভিসা সেবাকেন্দ্রে ভাঙচুরের ঘটনার পর সেখানকার কার্যক্রমও স্থগিত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনের কর্মীরা এখনো অবস্থানে রয়েছেন।

বাংলাদেশে বিক্ষোভ ও ভারতবিরোধী স্লোগান
গত সপ্তাহে ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক ছাত্রনেতার মৃত্যুর পর বাংলাদেশে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। এই বিক্ষোভে ভারতবিরোধী স্লোগানও শোনা যায়। চট্টগ্রামে ভারতের সহকারী হাইকমিশনের দিকে জনতা অগ্রসর হলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর পর সেখানে ভারতীয় ভিসা সেবাও সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়। ঢাকাসহ খুলনা ও রাজশাহীতেও ভারতের মিশনের আশপাশে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
নিরাপত্তা নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য
বিক্ষোভের ঘটনায় নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের পক্ষ থেকে বিভ্রান্তিকর প্রচারের অভিযোগ নাকচ করা হয়। একই সঙ্গে সাম্প্রতিক সহিংসতায় এক হিন্দু ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারত। তবে বাংলাদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের বক্তব্যের বিরোধিতা করে এটিকে গুরুতর নিরাপত্তা ব্যর্থতা হিসেবে আখ্যা দেন। বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
তলানিতে নেমে আসা সম্পর্ক
ছাত্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠনের পর থেকেই ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক চাপে রয়েছে। সাম্প্রতিক অস্থিরতা ও ভিসা কার্যক্রম স্থগিতের সিদ্ধান্ত সেই টানাপোড়েন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলে কূটনৈতিক মহলে মনে করা হচ্ছে।
#বাংলাদেশ #ভারত #ভিসাসেবা #কূটনীতি #দ্বিপক্ষীয়সম্পর্ক #নয়াদিল্লি #আগরতলা #শিলিগুড়ি
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















