মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবীণদের মধ্যে একসঙ্গে বহু ওষুধ সেবনের প্রবণতা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, সরকারি স্বাস্থ্য কর্মসূচির আওতায় থাকা প্রতি ছয়জন প্রবীণের একজন একই সময়ে আটটির বেশি ওষুধ গ্রহণ করছেন। এই অতিভার অনেক ক্ষেত্রে পড়ে যাওয়া, বিভ্রান্তি ও গুরুতর আঘাতের কারণ হয়ে উঠছে।
ওষুধের জটিল ফাঁদে প্রবীণ জীবন
একজন তিরাশি বছরের নারীর গল্প এই সংকটকে সামনে এনেছে। দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক সমস্যার জন্য বিভিন্ন চিকিৎসকের পরামর্শে একের পর এক ওষুধ যুক্ত হতে থাকে। ব্যথা, উদ্বেগ ও ঘুমের সমস্যার চিকিৎসা করতে গিয়ে ওষুধের তালিকা এতটাই দীর্ঘ হয় যে, শেষ পর্যন্ত সেগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই তাঁর ঘন ঘন পড়ে যাওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পরিবার ভেবেছিল, হয়তো অজানা কোনো রোগের কারণে এই দুর্ঘটনা। পরে জানা যায়, সমস্যার মূল ছিল ওষুধের মিশ্র প্রভাব।
ঝুঁকিপূর্ণ ওষুধের সতর্কতা
প্রবীণদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত কিছু ওষুধ রয়েছে, যেগুলো একসঙ্গে সেবনে স্নায়ুতন্ত্রে অতিরিক্ত প্রভাব পড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, একাধিক এমন ওষুধ একসঙ্গে নিলে মাথা ঘোরা, তন্দ্রাচ্ছন্নতা ও ভারসাম্য হারানোর আশঙ্কা বেড়ে যায়। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বহু প্রবীণ একই সঙ্গে এসব ঝুঁকিপূর্ণ ওষুধ গ্রহণ করছেন, যা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
বহু চিকিৎসক, এক রোগী
এই সংকটের আরেকটি দিক হলো চিকিৎসা ব্যবস্থার খণ্ডিত চরিত্র। অনেক প্রবীণের ওষুধ আসছে একাধিক চিকিৎসকের কাছ থেকে। প্রত্যেকে আলাদা সমস্যার দিকে নজর দিচ্ছেন, কিন্তু সামগ্রিক ওষুধ তালিকার দিকে কেউই পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকাচ্ছেন না। ফলে ওষুধের সংখ্যা বাড়তেই থাকে, ঝুঁকিও বাড়ে।
পর্যালোচনায় মিলল সমাধানের ইঙ্গিত
বিশেষায়িত প্রবীণ চিকিৎসা কেন্দ্রে ওষুধের পূর্ণ পর্যালোচনার পর ওই নারীর ক্ষেত্রে কয়েকটি ওষুধ বন্ধ বা সীমিত করা হয়। ফলাফল দ্রুতই দেখা যায়। পড়ে যাওয়া বন্ধ হয়, মানসিক স্বচ্ছতা ফিরে আসে। এই অভিজ্ঞতা দেখাচ্ছে, সঠিক পর্যালোচনা ও সমন্বিত চিকিৎসা কতটা জরুরি।
ব্যবস্থাগত সীমাবদ্ধতা
সরকারি নিয়মে ওষুধ পর্যালোচনার কথা থাকলেও বাস্তবে তা সীমিত সংখ্যক প্রবীণের মধ্যেই কার্যকর। অনেক ক্ষেত্রেই এই পর্যালোচনা ওষুধের সংখ্যা কমাতে তেমন ভূমিকা রাখছে না বলে বিশ্লেষণে উঠে এসেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, সমস্যা গুলো কেবল সংখ্যার হিসাবেই ধরা পড়ে না, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন বাস্তব অভিজ্ঞতা ভিন্ন কথা বলছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















