যুক্তরাষ্ট্রে চীনা প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে আলোচিত মামলায় হঠাৎ থমকে গেল বিচার প্রক্রিয়া। নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক শীর্ষ সহকারী লিন্ডা সান ও তাঁর স্বামী ক্রিস হু–এর বিরুদ্ধে চলা ফৌজদারি মামলা শেষ পর্যন্ত অচলাবস্থায় পড়ে। জুরিদের মধ্যে মতভেদ তৈরি হওয়ায় আদালত আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার স্থগিত ঘোষণা করেছে।
জুরি বিভক্তিতে থামল রায়
নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে ফেডারেল আদালতে বিচার চলাকালে জুরি বোর্ডের ফোরম্যান বিচারক ব্রায়ান কোগানকে জানান, লিন্ডা সান ও ক্রিস হু–এর বিরুদ্ধে আনা উনিশটি অভিযোগে কোনো ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। প্রায় এক মাস ধরে চলা শুনানিতে পঞ্চাশের বেশি সাক্ষী হাজির হলেও জুরিদের আলোচনায় একাধিক সময়সূচি জটিলতা তৈরি হয়, যা প্রক্রিয়াকে আরও দীর্ঘ করে তোলে।
গুরুতর অভিযোগের মুখে সাবেক সহকারী
একচল্লিশ বছর বয়সী লিন্ডা সানের বিরুদ্ধে চীনা সরকারের হয়ে কাজ করেও তা নিবন্ধন না করার অভিযোগ আনা হয়। এর পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা ও ঘুষের অভিযোগও ছিল। একই মামলায় তেতাল্লিশ বছর বয়সী স্বামী ক্রিস হুর বিরুদ্ধে প্রতারণা ও কর ফাঁকির অভিযোগ তোলা হয়। আদালতে দুজনকে একসঙ্গে বিচার করা হচ্ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রে চীনা প্রভাব বিতর্ক
এই মামলা যুক্তরাষ্ট্রে চীনা প্রভাব মোকাবিলায় বিচার বিভাগীয় উদ্যোগগুলোর মধ্যে অন্যতম আলোচিত ছিল। সাধারণত এ ধরনের অভিযোগ অনেক সময় সমঝোতায় নিষ্পত্তি হলেও, এই মামলা সরাসরি বিচারে গড়ায়। সরকারের অভিযোগ ছিল, নিউইয়র্কের বর্তমান গভর্নর ক্যাথি হোকুল ও সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমোর উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে লিন্ডা সান বেইজিংয়ের স্বার্থে কাজ করেছেন। এর বিনিময়ে তাঁর স্বামীর ব্যবসায়িক পথ সুগম হয় এবং বিপুল অর্থ উপার্জনের সুযোগ তৈরি হয়।
আইনি জটিলতা ও সরকারের অবস্থান
এই মামলার ফলাফল যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি প্রভাব সংক্রান্ত মামলাগুলোর জটিলতাকেই সামনে আনছে। বিচার বিভাগের শীর্ষ পর্যায় থেকে এর আগে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, বিদেশি এজেন্ট অভিযোগে মামলা চালানোর ক্ষেত্রে নতুন করে ভাবনা হচ্ছে। লিন্ডা সানের আইনজীবী জানান, বিদেশি এজেন্ট নিবন্ধন আইন অনুযায়ী এই মামলা আনা অনুচিত ছিল। বিচার স্থগিত ঘোষণার পরও তিনি একই অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।
পুনরায় বিচার শুরু হবে
অন্যদিকে সরকারি কৌঁসুলি আদালতকে জানিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব নতুন করে বিচার শুরু করতে প্রস্তুত তারা। ফলে আপাতত থেমে গেলেও, লিন্ডা সান ও ক্রিস হুর বিরুদ্ধে চীনা প্রভাবের অভিযোগে আইনি লড়াই এখানেই শেষ হচ্ছে না।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















