ইন্দোনেশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বহুল আলোচিত শুল্ক চুক্তি আগামী বছরের শুরুতেই স্বাক্ষরিত হতে পারে। দুই দেশের আলোচনায় সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সমঝোতা হওয়ায় জানুয়ারির শেষ দিকে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে চুক্তি সইয়ের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে জাকার্তা।
আলোচনার অগ্রগতি ও চূড়ান্ত সমঝোতা
ইন্দোনেশিয়ার অর্থনৈতিক বিষয়ক সমন্বয় মন্ত্রী এয়ারলাঙ্গা হার্তার্তো জানিয়েছেন, পারস্পরিক বাণিজ্য চুক্তির আওতায় মূল ও কারিগরি সব বিষয়েই দুই পক্ষ একমত হয়েছে। ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকের পর অনলাইন ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, আলোচনার কাঠামো অনুযায়ী আর কোনো বড় বাধা নেই।
জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে দুই দেশের কারিগরি দল চুক্তির আইনি খুঁটিনাটি চূড়ান্ত পর্যালোচনা করবে। নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী কাজ শেষ হলে জানুয়ারির শেষেই দুই রাষ্ট্রপ্রধানের উপস্থিতিতে চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে।

শুল্ক কমানো ও বাজার উন্মুক্তকরণ
এই চুক্তির ফলে ইন্দোনেশিয়ার পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত বত্রিশ শতাংশ শুল্ক কমে উনিশ শতাংশে নামবে। এর বিনিময়ে ইন্দোনেশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ক্ষেত্রে প্রায় সব শুল্ক প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে এবং অশুল্ক বাধাও তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে জ্বালানি এবং কৃষিপণ্য আমদানির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জাকার্তা। একই সঙ্গে পাম তেল, কফি ও কোকোর মতো গুরুত্বপূর্ণ ইন্দোনেশীয় পণ্যে বিশেষ শুল্ক ছাড় দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে।
শিল্প ও কর্মসংস্থানে প্রভাব

এয়ারলাঙ্গা হার্তার্তো বলেন, এই চুক্তি ইন্দোনেশিয়ার শ্রমনির্ভর শিল্পের জন্য বড় স্বস্তির খবর। শুল্ক নীতির কারণে যেসব খাত সবচেয়ে বেশি চাপে ছিল, সেখানে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থান সরাসরি জড়িত। নতুন সমঝোতায় এসব শিল্প আবার গতি পাবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন তিনি।
বাণিজ্য সম্পর্কের প্রেক্ষাপট
গত এক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার বাণিজ্যে ধারাবাহিক উদ্বৃত্ত রয়েছে। চীনকে ছাড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি বাজার। চলতি বছরের প্রথম দশ মাসে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে বিপুল অঙ্কে, যেখানে ইন্দোনেশিয়ার উদ্বৃত্তই উল্লেখযোগ্য।
এই প্রেক্ষাপটে আসন্ন শুল্ক চুক্তিকে দুই দেশের সম্পর্কের জন্য নতুন অধ্যায় হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















