মিলিটারি সাহেব এবং নিগ্রো ও শ্বেতাঙ্গ সৈন্যদের সঙ্গে কথাবার্তা বলবার জন্যে একজন শিক্ষিত ব্যক্তির দরকার…..
দরকারি সব জ্বালানি বড়ো বড়ো বার্জে করে নৌপথে কোলকাতা থেকে নারায়ণগঞ্জে আনা হতো। অতঃপর সেখান থেকে ট্রাকে করে আনা হতো কুর্মিটোলায়।
কিরণ সরকার সেনগুপ্ত তাঁর আত্মজীবনীতে লেখেন যে ব্যবসা-বাণিজ্যের কর্মকাণ্ডে নারায়ণগঞ্জ সেসময়ে ব্যস্তসমস্ততায় পূর্ণ গমগমে শহর ছিলো, একটি নমুনা দেখুন:

(১৯৪৪-এর কোনো সময় একদিন ছোট কাকা এলেন আমাদের বাড়িয়ে বাবার সঙ্গে আলাপ করতে। তখন নারায়ণগঞ্জে তাঁর সিগারেটের ব্যবসা যুদ্ধের দৌলতে টাকার মুখ দেখেছে। কুর্মিটোলা ও তেজগাঁওতে তখন ইংরেজ ও মার্কিন সৈন্যদের ছাউনি। কাকা বড়ো সাহেবদের ধরে সাপ্লাইয়ের বাছ পেয়েছিলেন। নারায়ণগঞ্জের টানবাজারের এক অপরিসর গলিতে অপ্রন্থ সামনের ঘরে অফিস, পেছনে গোডাউন।
প্রায়ই সাহেবরা আসতো, মালপুর নিয়ে চলে যেতো বিরাট বিরাট মিলিটারি ট্রাকে চড়ে। মিলিটারি সাহেব এবং নিগ্রো ও শ্বেতাঙ্গ সৈন্যদের সঙ্গে কথাবার্তা বলবার জন্যে একজন শিক্ষিত ব্যক্তির দরকার, বাবাকে বুঝিয়ে তাই কাকা আমাকে রাজি করিয়ে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে গেলেন। অথচ থাকতাম ঢাকায় তাঁতিবাজারের ৯১ নম্বর দ্বিতল বাড়িতে। সকাল আটটায় বাস ধরে নারায়ণগঞ্জের দোকানে পৌঁছাতাম। বারোটার পর থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বন্ধ; চারটে থেকে রাত আটটা। বাসে বা ট্রেনে ঢাকার বাড়িতে পৌঁছাতে রাত সাড়ে ন’টা।”)
(চলবে)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৭৮)
নাঈম হক 


















