আফ্রিকার শিং অঞ্চলের রাজনীতিতে বড় ধরনের আলোড়ন তুলেছে ইসরায়েলের এক ঘোষণায়। স্বঘোষিত রাষ্ট্র সোমালিল্যান্ডকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ইসরায়েলই প্রথম কোনো দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিল, যা অঞ্চলজুড়ে কূটনৈতিক টানাপোড়েন বাড়িয়েছে।
আব্রাহাম চুক্তির ধারায় স্বীকৃতি
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, আব্রাহাম চুক্তির চেতনা থেকেই এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তাঁর ভাষায়, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে শুরু হওয়া এই কূটনৈতিক ধারার অংশ হিসেবেই সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় ইসরায়েল। এ উপলক্ষে সোমালিল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আবদিরাহমান মোহাম্মদ আবদাল্লাহর সঙ্গে একটি যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষরও সম্পন্ন হয়েছে।
সহযোগিতার নতুন দিগন্ত
নেতানিয়াহু বলেন, এই স্বীকৃতির পরপরই সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে কৃষি, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক খাতে বিস্তৃত সহযোগিতা শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি সোমালিল্যান্ডের প্রেসিডেন্টকে ইসরায়েল সফরের আমন্ত্রণও জানানো হয়েছে। ইসরায়েলের মতে, এই সম্পর্ক দুই পক্ষের জন্যই স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের নতুন সুযোগ তৈরি করবে।

সোমালিল্যান্ডের দীর্ঘ পথচলা
১৯৯১ সাল থেকে কার্যত স্বশাসিতভাবে পরিচালিত হলেও এতদিন কোনো দেশের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পায়নি সোমালিল্যান্ড। তুলনামূলক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখলেও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির অভাব তাদের বড় রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতা ছিল। ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্ত সেই বাস্তবতায় বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ
ইসরায়েলের ঘোষণার পরপরই কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সোমালিয়া, মিসর, তুরস্ক ও জিবুতি। এসব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা পৃথক আলোচনায় ইসরায়েলের সিদ্ধান্তকে বিপজ্জনক উন্নয়ন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারা সোমালিয়ার ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও ঐক্যের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, বিচ্ছিন্ন অঞ্চলকে স্বীকৃতি দেওয়া আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
ভবিষ্যৎ কী বার্তা দিচ্ছে
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি আফ্রিকার শিং অঞ্চলের শক্তির ভারসাম্য নতুনভাবে সাজাতে পারে। একই সঙ্গে এটি সোমালিয়ার বিচ্ছিন্নতাবিরোধী অবস্থানকে বড় পরীক্ষার মুখে ফেলবে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিষয়টি কতটা সমর্থন পায়, সেদিকেই এখন তাকিয়ে আছে বিশ্ব।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















