নিজের সত্তার নকশার ভেতর নিরাপদে বসে থাকা এক নারীর ভাবনায় ভেসে ওঠে হারিয়ে যাওয়া পাখি, ধোঁয়ার ভেতর আকাশ ছুঁয়ে থাকা রঙিন কাচের টুকরো, আর অতীতের অনুপস্থিতি। এই গল্প আলোর দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাওয়ার, আবার সেই আলোতেই সম্পর্কের ফাটল স্পষ্ট হয়ে ওঠার।
পাহাড়, মেঘ আর স্মৃতির যাত্রা
দুর্গম পাহাড়ি পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে জুলিয়া আর ভ্রোনির কথোপকথনে জড়িয়ে পড়ে পুরোনো কাহিনি। কোথাও নীল রঙের খনিজ পাহাড়ের গল্প, কোথাও অতীতের পৃথিবী নিয়ে প্রশ্ন। তারা দেখে মেঘের পর্দা খুলে যায়, আবার বন্ধ হয়। তুষারে মোড়া চূড়া এক মুহূর্তের জন্য দৃশ্যমান হয়ে মিলিয়ে যায়। সেই দৃশ্য তাদের থমকে দাঁড় করায়, আবার এগিয়ে চলার তাগিদও দেয়।
প্রকৃতির সৌন্দর্য আর অস্বস্তি
সূর্যের আলো পাহাড়ের ঢালে পড়ে চারপাশকে রূপালি সোনালি করে তোলে। পাতায় জমে থাকা শিশির রত্নের মতো ঝলমল করে। কিন্তু এই সৌন্দর্যের মাঝেই অস্বস্তি ঢুকে পড়ে। ভ্রোনির গল্পে উঠে আসে তার অতীত, সাপের কামড়, মৃত্যুর কাছ থেকে ফেরা, আর সেই অভিজ্ঞতা কীভাবে তার জীবন আর সম্পর্ক বদলে দিয়েছে। জুলিয়া বুঝতে পারে, এই মানুষটির ভেতরে শক্তি আছে, আবার দূরত্ব আছে।
বন্ধুত্বের ভাঙন
পাহাড়ের রেস্তোরাঁয় বসে হঠাৎ করেই ভ্রোনির মুখে বেরিয়ে আসে দীর্ঘদিন জমে থাকা কথা। সে বলে, এই বন্ধুত্বে সে ক্লান্ত। উপরিতলের কথাবার্তা, অদৃশ্য চাপ আর বোঝাপড়ার অভাব তাকে দূরে ঠেলে দিয়েছে। প্রায় বিশ বছরের সম্পর্ক এক মুহূর্তে থেমে যায়। জুলিয়া হতবাক হয়ে বসে থাকে, হাতে উষ্ণ পানীয়, অথচ ভেতরে শূন্যতা।
শেষ দৃশ্য, অনিশ্চিত বোধ
পরে জুলিয়া একা ফিরে আসে। বন্ধুর কোনো চিহ্ন নেই, শুধু ফাঁকা ঘর আর কিছু অব্যক্ত প্রশ্ন। শহরে মাঝে মাঝে ভ্রোনিকে দেখা যায়, সে সুখী বলেই মনে হয়। আর জুলিয়ার মনে গেঁথে থাকে একটাই বোধ, মানুষের মনের ভেতর কী চলছে তা জানা সত্যিই অসম্ভব।
এই গল্পে প্রকৃতির সৌন্দর্য, ভয়ের কাছাকাছি গিয়ে ফিরে আসা আর বন্ধুত্বের জটিলতা একসঙ্গে মিশে গেছে। আলো বাড়ে, আবার সেই আলোতে ছায়ার রেখা স্পষ্ট হয়।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















