চীনের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে স্বনির্ভরতা বাড়াতে নতুন ও সম্প্রসারিত কারখানায় দেশীয় যন্ত্রপাতি ব্যবহারের কড়া নির্দেশনা জারি করেছে বেইজিং। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সরকারি অনুমোদন পেতে হলে চিপ নির্মাতাদের অন্তত অর্ধেক যন্ত্র দেশীয় উৎস থেকে সংগ্রহের প্রমাণ দিতে বলা হচ্ছে। শিল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এই নীতির লক্ষ্য বিদেশী প্রযুক্তির ওপর নির্ভরতা দ্রুত কমিয়ে আনা এবং নিজস্ব সরবরাহ শৃঙ্খল শক্তিশালী করা
স্বনির্ভরতার পথে রাষ্ট্রের চাপ
এই নির্দেশনা প্রকাশ্যে নথিভুক্ত না হলেও বাস্তবে তা কার্যকর হচ্ছে। নতুন সক্ষমতা যোগ করতে চাইলে দরপত্র ও ক্রয় প্রক্রিয়ায় দেখাতে হচ্ছে যে ব্যবহৃত যন্ত্রের অন্তত পঞ্চাশ শতাংশ দেশীয়। প্রয়োজনীয়তা পূরণ না হলে আবেদন বাতিল হচ্ছে। তবে অত্যাধুনিক উৎপাদন লাইনে দেশীয় যন্ত্রের সীমাবদ্ধতার কারণে কিছুটা শিথিল রাখা হচ্ছে। নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাশা, ভবিষ্যতে এই হার আরও বাড়বে এবং শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ দেশীয় যন্ত্রে কারখানা চালানো হবে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব
দীর্ঘদিন বিদেশি যন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল ছিল চীনের চিপ শিল্প। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রযুক্তি রপ্তানিতে কড়াকড়ির ফলে পরিস্থিতি বদলেছে। উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চিপ ও সেমিকন্ডাক্টর যন্ত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পর দেশীয় সরবরাহকারীদের দিকে ঝুঁকতে বাধ্য হয়েছে কারখানাগুলো। ফলে যেখানে আগে বিদেশি যন্ত্র সহজলভ্য ছিল, সেখানেও এখন দেশীয় বিকল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

দেশীয় নির্মাতাদের উত্থান
এই নীতির সুফল ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে। খোদাই প্রযুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ উৎপাদন ধাপে দেশীয় যন্ত্র দ্রুত উন্নতি করছে। বড় নির্মাতারা উন্নত ন্যানোমিটার স্তরের উৎপাদনে নিজেদের যন্ত্র পরীক্ষা শুরু করেছে। সরকারের বাধ্যবাধকতার কারণে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত মানোন্নয়নে ঝাঁপিয়েছে, যার ফল হিসেবে উৎপাদন সক্ষমতা ও পেটেন্ট দাখিল উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
বাজারে পরিবর্তনের ইঙ্গিত
রাষ্ট্রের বিপুল বিনিয়োগ ও অর্ডারের ফলে দেশীয় যন্ত্রপাতির চাহিদা তীব্রভাবে বাড়ছে। বিশ্লেষকদের মতে, পরিষ্কার ও রাসায়নিক অপসারণ যন্ত্রের মতো খাতে দেশীয় স্বনির্ভরতা ইতিমধ্যেই উল্লেখযোগ্য পর্যায়ে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়লেও চীনের লক্ষ্য স্পষ্ট—নিজস্ব প্রযুক্তি দিয়ে পুরো সরবরাহ শৃঙ্খল গড়ে তোলা।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















