সিরিয়ায় ক্ষমতার পালাবদলের পর উপকূলীয় এলাকায় আলাউইত জনগোষ্ঠীর ক্ষোভ ও ভয়ের আবহ আরও ঘনীভূত হয়েছে। সেই চাপ সামাল দিতে নতুন সরকার ক্ষমা, সহায়তা আর পুনর্মিলনের বার্তা দিচ্ছে। তবে এই উদ্যোগকে অনেকেই দেখছেন প্রতীকী ও বিতর্কিত বলে, যেখানে আস্থার চেয়ে অনিশ্চয়তাই বেশি।
ক্ষমার প্রতিশ্রুতি আর ভয় কাটিয়ে ফেরা
মার্চে সংঘর্ষের পর আত্মগোপনে থাকা আলাউইত যুবক খাইরাল্লাহ দিব ক্ষমার আশ্বাস পেয়েই প্রকাশ্যে আসেন। ওই সময় বিদ্রোহে বহু নিরাপত্তা সদস্য নিহত হন, পাল্টা প্রতিশোধে প্রাণ হারান অসংখ্য আলাউইত। ভেঙে পড়ে নতুন সরকারের সঙ্গে এই জনগোষ্ঠীর নাজুক সম্পর্ক। পরে সরকার সীমিত ক্ষমা ও আর্থিক সহায়তার পথে হাঁটে।
নাগরিক শান্তি রক্ষার উদ্যোগ
উপকূলীয় প্রদেশে নাগরিক শান্তি রক্ষায় গঠিত একটি কমিটি ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা, কর্মসংস্থান আর চিকিৎসা সেবা দেওয়ার কাজ শুরু করেছে। সাবেক যোদ্ধাদের একটি অংশকে ক্ষমা দিয়ে অস্ত্র ত্যাগে উৎসাহিত করা হচ্ছে। সরকারের ভাষ্য, এতে নিয়ন্ত্রণ ফিরবে এবং সবার জন্য শাসনের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন সহজ হবে।
বিতর্কিত মুখ আর বিশ্বাসের সংকট
এই উদ্যোগে যুক্ত রয়েছেন যুদ্ধকালীন দুই বিপরীত পক্ষের সাবেক কমান্ডাররা। তাদের মধ্যে একজন আলাউইত সাবেক মিলিশিয়া নেতা, যিনি যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে। তার সম্পৃক্ততায় ক্ষোভ তীব্র হয়েছে। মানবাধিকার কর্মীদের প্রশ্ন, গুরুতর অপরাধের জবাবদিহি ছাড়া ক্ষমা কি ন্যায়বিচারকে দুর্বল করছে না।
সহায়তা মিললেও ক্ষত গভীর
কয়েকশ’ পরিবার সামান্য সহায়তা পেলেও বাস্তবতা কঠিন। ধ্বংস হওয়া বাড়ির খুব অল্প অংশ মেরামত হয়েছে। অনেকেই এখনও নিখোঁজ স্বজনের খোঁজ পাননি। সন্ধ্যার পর বাড়ির দরজা খুলতে ভয় কাজ করে। আয়ের পথ সংকুচিত, নিরাপত্তাহীনতা নিত্যসঙ্গী।
প্রতিবাদ আর পরীক্ষার সামনে সরকার
সাম্প্রতিক সমাবেশে আলাউইতরা বিকেন্দ্রীকরণ ও বন্দি মুক্তির দাবি তুলেছেন। পাল্টা সংঘাতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছে। মার্চের সহিংসতা নিয়ে প্রকাশ্য বিচার শুরু হলেও ফলাফলই হবে নতুন সিরিয়ায় জবাবদিহির মানদণ্ড।
শেষ পর্যন্ত প্রশ্ন একটাই। প্রতীকী মিলন কি ভাঙা আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারবে, নাকি ন্যায়বিচার আর নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এই দূরত্ব বাড়বে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















