০৪:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সফটব্যাংক ভিশন ফান্ডে বড় ধরনের ছাঁটাই। লক্ষ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সৌদি- পাকিস্তান সামরিক প্যাক্ট ও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব এশিয়ার বিলিয়ন-ডলারের মুনকেক বাজারে নতুন ধারা: দুবাই চকলেট ও পিস্তাচিওর ছোঁয়া শিম্পাঞ্জিদের খাদ্যে অ্যালকোহলের উপস্থিতি ১৯৮৮ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের উত্তরাধিকার আজও মিয়ানমার পেরুর মরুভূমি থেকে আবিষ্কৃত নতুন নগরী: আমেরিকার ইতিহাস নতুনভাবে লেখা হচ্ছে চীনকে সমর্থন ও যুক্তরাষ্ট্রকে বার্তা দিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া চীনের সিজে-১০০০: বিশ্বের প্রথম হাইপারসনিক ‘প্লেন কিলার’ ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে নতুন ধারণা অফ-সিজনে তরমুজ চাষে নড়াইলের কৃষকদের বাম্পার লাভ ৯০% ক্ষেত্রে কার্যকারিতা হারাচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক—শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক সবাই ঝুঁকিতে

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৭১)

  • Sarakhon Report
  • ১১:০১:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪
  • 64

শ্রী নিখিলনাথ রায়

বিজয়সিংহের নবমবর্ষীয় পুত্র জালিমসিংহ ছায়ার ন্যায় পিতার অনুবর্তন করিত; কি শিবিরে, কি সমরক্ষেত্রে, কোন স্থানে তাহার গতির বিরাম ছিল না। যৎকালে বিজয়সিংহ থামরা হইতে গিরিয়া সমরক্ষেত্রে উপস্থিত হন, শিশু জালিমও তাঁহার সঙ্গে সেই সমরসাগরের উত্তাল তরঙ্গ মধ্যে পতিত হয়। বিজয়সিংহ অশ্বপৃষ্ঠ হইতে ভূতলে পতিত হইলে, বালক নিষ্কোষিত-তরবারিহস্তে পিতার মৃতদেহ রক্ষার জন্য দণ্ডায়মান হইল। চতুদ্দিকে আলিবদ্দীর সেনাগণ জয়নিনাদ করিতেছে, রণবাদ্যের ধ্বনিতে দিষ্মণ্ডল প্রতিধ্বনিত হইতেছে, নবমবর্ষীয় বালকের ভ্রূক্ষেপ নাই!

সে আপনার ক্ষুদ্র তরবারি লইয়া আলিবদ্দীর সৈন্যগণকে বাধা প্রদান করিতে লাগিল। পাছে মুসল‌মানগণ পিতার মৃতদেহ স্পর্শ করে, এই আশঙ্কায় সে আপনার প্রাণকে তুচ্ছ জ্ঞান করিয়া, ভীষণ সমরসাগরমধ্যে নির্ভীকচিত্তে দণ্ডায়মান রহিল। কি যেন মহীয়সী শক্তি তাহার হৃদয়ে ক্রীড়া করিতেছিল; বালক তৎপ্রভাবে পিতার মৃতদেহ রক্ষার জন্য কৃতসঙ্কল্প হইল। ক্রমশঃ অসংখ্য সৈন্য চতুদিক্ হইতে বালককে বেষ্টন করিয়া দাঁড়াইল।

জয়োল্লাসে উন্মত্ত হইয়া তাহারা যেন বালককে পেষণ করিবার উপক্রম করিল। বালক তাহাতে কিঞ্চিন্মাত্র বিচলিত না হইয়া, স্বীয় ক্ষুদ্র তরবারি চালনা করিতে লাগিল, তরবারি তপনালোকে ঝলষিত হইয়া যেন নৃত্য করিয়া উঠিল। যতই আলিবদ্দীর সৈন্যগণ অগ্রসর হইতেছিল, ততই বালকের উৎসাহ- বন্ধিত হইতে লাগিল। যে রাজপুত জাতি জগতের ইতিহাসে অভূতপূর্ব্ব বীরত্বের অভিনয় করিয়াছে, তাহাদের সামান্ত রক্তবিন্দুও যে সজীব, ইহা কে অস্বীকার করিবে?আলিবন্দী খাঁ স্বয়ং সেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বালকের অদ্ভুত সাহসে ও পিতৃভক্তিতে চমৎকৃত হইয়া সৈন্ত্যগণকে ভাহার গাত্র স্পর্শকরিতে নিষেধ করিলেন এবং স্বীয় হিন্দু সৈনিকগণকে বিজয়সিংহের মৃতদেহের যথারীতি সংকার করিতে আদেশ দিলেন। এই আদেশ অবগত হইহা বালক তাহাদিগকে পিতার দেহস্পর্শে অনুমতি দিল। আলিবন্দীর কতিপয় গোলন্দাজ সৈন্য বালকের অদ্ভুত বীরত্বে প্রীত হইয়া তাহাকে স্বন্ধে করিয়া লইয়া গিয়াছিল। বালক ভাগীরথী- তীরে যথারীতি সৎকার করিয়া পিতৃদেবের পবিত্র ভস্মরাশি গঙ্গার পবিত্র সলিলে ভাসাইয়া দিল। সেই পবিত্র ভস্মরাশিতে তাহার কয়েক বিন্দু পবিত্র অশ্রু পতিত হইয়া পবিত্রতার বৃদ্ধি করিল।

সফটব্যাংক ভিশন ফান্ডে বড় ধরনের ছাঁটাই। লক্ষ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৭১)

১১:০১:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪

শ্রী নিখিলনাথ রায়

বিজয়সিংহের নবমবর্ষীয় পুত্র জালিমসিংহ ছায়ার ন্যায় পিতার অনুবর্তন করিত; কি শিবিরে, কি সমরক্ষেত্রে, কোন স্থানে তাহার গতির বিরাম ছিল না। যৎকালে বিজয়সিংহ থামরা হইতে গিরিয়া সমরক্ষেত্রে উপস্থিত হন, শিশু জালিমও তাঁহার সঙ্গে সেই সমরসাগরের উত্তাল তরঙ্গ মধ্যে পতিত হয়। বিজয়সিংহ অশ্বপৃষ্ঠ হইতে ভূতলে পতিত হইলে, বালক নিষ্কোষিত-তরবারিহস্তে পিতার মৃতদেহ রক্ষার জন্য দণ্ডায়মান হইল। চতুদ্দিকে আলিবদ্দীর সেনাগণ জয়নিনাদ করিতেছে, রণবাদ্যের ধ্বনিতে দিষ্মণ্ডল প্রতিধ্বনিত হইতেছে, নবমবর্ষীয় বালকের ভ্রূক্ষেপ নাই!

সে আপনার ক্ষুদ্র তরবারি লইয়া আলিবদ্দীর সৈন্যগণকে বাধা প্রদান করিতে লাগিল। পাছে মুসল‌মানগণ পিতার মৃতদেহ স্পর্শ করে, এই আশঙ্কায় সে আপনার প্রাণকে তুচ্ছ জ্ঞান করিয়া, ভীষণ সমরসাগরমধ্যে নির্ভীকচিত্তে দণ্ডায়মান রহিল। কি যেন মহীয়সী শক্তি তাহার হৃদয়ে ক্রীড়া করিতেছিল; বালক তৎপ্রভাবে পিতার মৃতদেহ রক্ষার জন্য কৃতসঙ্কল্প হইল। ক্রমশঃ অসংখ্য সৈন্য চতুদিক্ হইতে বালককে বেষ্টন করিয়া দাঁড়াইল।

জয়োল্লাসে উন্মত্ত হইয়া তাহারা যেন বালককে পেষণ করিবার উপক্রম করিল। বালক তাহাতে কিঞ্চিন্মাত্র বিচলিত না হইয়া, স্বীয় ক্ষুদ্র তরবারি চালনা করিতে লাগিল, তরবারি তপনালোকে ঝলষিত হইয়া যেন নৃত্য করিয়া উঠিল। যতই আলিবদ্দীর সৈন্যগণ অগ্রসর হইতেছিল, ততই বালকের উৎসাহ- বন্ধিত হইতে লাগিল। যে রাজপুত জাতি জগতের ইতিহাসে অভূতপূর্ব্ব বীরত্বের অভিনয় করিয়াছে, তাহাদের সামান্ত রক্তবিন্দুও যে সজীব, ইহা কে অস্বীকার করিবে?আলিবন্দী খাঁ স্বয়ং সেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বালকের অদ্ভুত সাহসে ও পিতৃভক্তিতে চমৎকৃত হইয়া সৈন্ত্যগণকে ভাহার গাত্র স্পর্শকরিতে নিষেধ করিলেন এবং স্বীয় হিন্দু সৈনিকগণকে বিজয়সিংহের মৃতদেহের যথারীতি সংকার করিতে আদেশ দিলেন। এই আদেশ অবগত হইহা বালক তাহাদিগকে পিতার দেহস্পর্শে অনুমতি দিল। আলিবন্দীর কতিপয় গোলন্দাজ সৈন্য বালকের অদ্ভুত বীরত্বে প্রীত হইয়া তাহাকে স্বন্ধে করিয়া লইয়া গিয়াছিল। বালক ভাগীরথী- তীরে যথারীতি সৎকার করিয়া পিতৃদেবের পবিত্র ভস্মরাশি গঙ্গার পবিত্র সলিলে ভাসাইয়া দিল। সেই পবিত্র ভস্মরাশিতে তাহার কয়েক বিন্দু পবিত্র অশ্রু পতিত হইয়া পবিত্রতার বৃদ্ধি করিল।