০১:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
ডেমোক্র্যাটদের নীতির ব্যর্থতা যেভাবে মামদানিকে জয়ী করল মার্কো রুবিওর উপস্থিতিতে ডিআরসি-রুয়ান্ডা শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর কংগ্রেসের বহু নেতা ইন্দিরা জি ও জেপি-র সংলাপ চেয়েছিলেন, তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল তা হতে দেয়নি হিউএনচাঙ (পর্ব-১৩২) ট্রাম্পের বিপরীতে, প্রাচীন চীন এর শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানানোর ঐতিহ্য রণক্ষেত্রে (পর্ব-৭৭) সমুদ্রের ওপার থেকে নতুন স্বপ্ন: তাইওয়ান তরুণদের ফুচিয়ানে নতুন জীবনগাঁথা ব্যর্থ কলম্বো, গলের লড়াই -এ বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার ঘরে জয় কেন ? ‘আকাশ হয়ে যাই’ মিউজিক ভিডিতে প্রশংসিত পূর্ণিমা বৃষ্টি সাউথ চায়নান মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন: ইরান আক্রমনে লাভ ক্ষতি

জীবন আমার বোন (পর্ব-১৫)

  • Sarakhon Report
  • ১১:০০:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ জুন ২০২৪
  • 12

মাহমুদুল হককে বাদ দিয়ে বাংলা উপন্যাসকে ভাবা ভুল হবে। বাংলাদেশে কেন মাহমুদুল হক বহু পঠিত নয় বা তাঁকে নিয়ে কম আলোচনা হয় এ সত্যিই এক প্রশ্ন। 

মাহমুদুল হকের সাহিত্য নিসন্দেহে স্থান নিয়েছে চিরায়ত সাহিত্যের সারিতে। 

তার উপন্যাস জীবন আমার বোন শুধু সময়ের চিত্র নয়, ইতিহাসকে গল্পের মধ্যে দিয়ে আনা নয় সেখানে রয়ে গেছে আরো অনেক কিছু। 

তরুণ প্রজম্মের পাঠকের কাজে তাই তুলে দেয়া হলো মাহমুদুল হকের এই অনবদ্য উপন্যাস জীবন আমার বোন। আর আগের প্রজম্ম নিশ্চয়ই নতুন করে আরেকবার গ্রহন করুক এক অমৃত সাহিত্য। – সম্পাদক

মাহমুদুল হক

 

‘ভড়কে দেবার কোনো মানে হয় না-‘ ‘আজকাল ইচ্ছে ক’রেই তুমি এ বাড়ি মাড়ানো ছেড়ে দিচ্ছো। খুব হিশেব ক’রে পা বাড়াচ্ছো সবসময়, ধীরে ধীরে একটু একটু ক’রে গুটিয়ে নিচ্ছো নিজেকে’

‘স্রেফ বাজে কথা!’

‘এ বাড়ির কেউ তোমাকে কিছু বলেছে নাকি?’

‘বলেছে।’ খোকা কিটকিট ক’রে হেসে বললে, ‘বলেছে মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে যাকে বলে একেবারে তুলোধোনা ক’রে ছাড়বে।’

‘মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে মানে ?’ একরোখা জেদি ভঙ্গিতে জিগ্যেশ করলে নীলাভাবী।

‘লেবাবা, এ-যে দেখি উকিলের জেরারও কান কাটে।’

‘কি ব্যাপার খুলে বলো নীলাভাবী হাত চেপে ধরলো।

‘মারবে নাকি? গ্যাঁড়াকল তো মন্দ নয়!’ খোকা একটু থেমে তারপর বললে, ‘তোমার মাথা খারাপ হয়েছে, বুঝতে পারছি। ইচ্ছে ক’রেই আসি না, আসা হয়ে ওঠে না’

‘তবে আগে যে বলতে আমার জন্যে তোমার মন কাঁদে, না দেখে থাকতে পারো না?’

‘আসলে তোমার মনের কথাটাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নিজের ব’লে চালিয়ে দিয়েছিলাম’

‘চালাকি মারছো?’

‘বুঝলে না-‘ খোকা বললে, ‘ওটা ছিলো তোমাকে ফাঁসাবার একটা কায়দা, যাকে বলে স্রেফ ধাপ্পা !’

‘বিশ্বাস করি না, বুজরুকিটা মারছো এখন!’

‘বিশ্বাস না করার কি এমন আছে এতে?’ অসহিষ্ণু হ’য়ে খোকা বললে।

‘আমি খুব ভালো ক’রেই জানি সেসব কথা নিছক বুজরুকির ছিলো না। তোমার মুখে আমি কষ্টের ছাপ দেখতে পেতাম সে সময়, কোনো লাভ নেই অস্বীকার ক’রে। এখন তোমার সে চেহারা আর নেই। এতো অল্প সময়ের মধ্যে তুমি কতো বদলে গিয়েছো, আশ্চর্য!’

খোকা মটমট ক’রে আঙুল মটকে বললে, ‘আমার চর্বি হয়েছে,

ভরাপেটে শুধু ঢেকুর উঠছে’

‘এত চাপা স্বভাব তোমার! আজ আমি উত্তর না নিয়ে তোমাকে ছাড়ছি না, মনে রেখো!’

‘ঘাট মানছি বাবা! আসলে কি জানো, আমার মেটামরফসিস হয়েছে; আমি শালা গ্রেগর স্যামসার মতো বিটকেল পোকা বনে গিয়েছি। সবই ওই ব্রেনটনিকের গুণ, যে রেটে ঝেড়ে টনিক চালাও তুমি তোমার মগজে নতুন একটা কিছু ভর করেছে, আমি কিছুটা আন্দাজ করতে পারি।’

 

 

জীবন আমার বোন (পর্ব-১৪)

জীবন আমার বোন (পর্ব-১৪)

ডেমোক্র্যাটদের নীতির ব্যর্থতা যেভাবে মামদানিকে জয়ী করল

জীবন আমার বোন (পর্ব-১৫)

১১:০০:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ জুন ২০২৪

মাহমুদুল হককে বাদ দিয়ে বাংলা উপন্যাসকে ভাবা ভুল হবে। বাংলাদেশে কেন মাহমুদুল হক বহু পঠিত নয় বা তাঁকে নিয়ে কম আলোচনা হয় এ সত্যিই এক প্রশ্ন। 

মাহমুদুল হকের সাহিত্য নিসন্দেহে স্থান নিয়েছে চিরায়ত সাহিত্যের সারিতে। 

তার উপন্যাস জীবন আমার বোন শুধু সময়ের চিত্র নয়, ইতিহাসকে গল্পের মধ্যে দিয়ে আনা নয় সেখানে রয়ে গেছে আরো অনেক কিছু। 

তরুণ প্রজম্মের পাঠকের কাজে তাই তুলে দেয়া হলো মাহমুদুল হকের এই অনবদ্য উপন্যাস জীবন আমার বোন। আর আগের প্রজম্ম নিশ্চয়ই নতুন করে আরেকবার গ্রহন করুক এক অমৃত সাহিত্য। – সম্পাদক

মাহমুদুল হক

 

‘ভড়কে দেবার কোনো মানে হয় না-‘ ‘আজকাল ইচ্ছে ক’রেই তুমি এ বাড়ি মাড়ানো ছেড়ে দিচ্ছো। খুব হিশেব ক’রে পা বাড়াচ্ছো সবসময়, ধীরে ধীরে একটু একটু ক’রে গুটিয়ে নিচ্ছো নিজেকে’

‘স্রেফ বাজে কথা!’

‘এ বাড়ির কেউ তোমাকে কিছু বলেছে নাকি?’

‘বলেছে।’ খোকা কিটকিট ক’রে হেসে বললে, ‘বলেছে মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে যাকে বলে একেবারে তুলোধোনা ক’রে ছাড়বে।’

‘মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে মানে ?’ একরোখা জেদি ভঙ্গিতে জিগ্যেশ করলে নীলাভাবী।

‘লেবাবা, এ-যে দেখি উকিলের জেরারও কান কাটে।’

‘কি ব্যাপার খুলে বলো নীলাভাবী হাত চেপে ধরলো।

‘মারবে নাকি? গ্যাঁড়াকল তো মন্দ নয়!’ খোকা একটু থেমে তারপর বললে, ‘তোমার মাথা খারাপ হয়েছে, বুঝতে পারছি। ইচ্ছে ক’রেই আসি না, আসা হয়ে ওঠে না’

‘তবে আগে যে বলতে আমার জন্যে তোমার মন কাঁদে, না দেখে থাকতে পারো না?’

‘আসলে তোমার মনের কথাটাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নিজের ব’লে চালিয়ে দিয়েছিলাম’

‘চালাকি মারছো?’

‘বুঝলে না-‘ খোকা বললে, ‘ওটা ছিলো তোমাকে ফাঁসাবার একটা কায়দা, যাকে বলে স্রেফ ধাপ্পা !’

‘বিশ্বাস করি না, বুজরুকিটা মারছো এখন!’

‘বিশ্বাস না করার কি এমন আছে এতে?’ অসহিষ্ণু হ’য়ে খোকা বললে।

‘আমি খুব ভালো ক’রেই জানি সেসব কথা নিছক বুজরুকির ছিলো না। তোমার মুখে আমি কষ্টের ছাপ দেখতে পেতাম সে সময়, কোনো লাভ নেই অস্বীকার ক’রে। এখন তোমার সে চেহারা আর নেই। এতো অল্প সময়ের মধ্যে তুমি কতো বদলে গিয়েছো, আশ্চর্য!’

খোকা মটমট ক’রে আঙুল মটকে বললে, ‘আমার চর্বি হয়েছে,

ভরাপেটে শুধু ঢেকুর উঠছে’

‘এত চাপা স্বভাব তোমার! আজ আমি উত্তর না নিয়ে তোমাকে ছাড়ছি না, মনে রেখো!’

‘ঘাট মানছি বাবা! আসলে কি জানো, আমার মেটামরফসিস হয়েছে; আমি শালা গ্রেগর স্যামসার মতো বিটকেল পোকা বনে গিয়েছি। সবই ওই ব্রেনটনিকের গুণ, যে রেটে ঝেড়ে টনিক চালাও তুমি তোমার মগজে নতুন একটা কিছু ভর করেছে, আমি কিছুটা আন্দাজ করতে পারি।’

 

 

জীবন আমার বোন (পর্ব-১৪)

জীবন আমার বোন (পর্ব-১৪)