০১:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
মার্কো রুবিওর উপস্থিতিতে ডিআরসি-রুয়ান্ডা শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর কংগ্রেসের বহু নেতা ইন্দিরা জি ও জেপি-র সংলাপ চেয়েছিলেন, তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল তা হতে দেয়নি হিউএনচাঙ (পর্ব-১৩২) ট্রাম্পের বিপরীতে, প্রাচীন চীন এর শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানানোর ঐতিহ্য রণক্ষেত্রে (পর্ব-৭৭) সমুদ্রের ওপার থেকে নতুন স্বপ্ন: তাইওয়ান তরুণদের ফুচিয়ানে নতুন জীবনগাঁথা ব্যর্থ কলম্বো, গলের লড়াই -এ বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার ঘরে জয় কেন ? ‘আকাশ হয়ে যাই’ মিউজিক ভিডিতে প্রশংসিত পূর্ণিমা বৃষ্টি সাউথ চায়নান মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন: ইরান আক্রমনে লাভ ক্ষতি ইউক্রেন দাবি করেছে বাংলাদেশের কিছু সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিক ইইউ

জীবন আমার বোন (পর্ব-১৬)

  • Sarakhon Report
  • ১১:০০:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ জুন ২০২৪
  • 17

মাহমুদুল হককে বাদ দিয়ে বাংলা উপন্যাসকে ভাবা ভুল হবে। বাংলাদেশে কেন মাহমুদুল হক বহু পঠিত নয় বা তাঁকে নিয়ে কম আলোচনা হয় এ সত্যিই এক প্রশ্ন। 

মাহমুদুল হকের সাহিত্য নিসন্দেহে স্থান নিয়েছে চিরায়ত সাহিত্যের সারিতে। 

তার উপন্যাস জীবন আমার বোন শুধু সময়ের চিত্র নয়, ইতিহাসকে গল্পের মধ্যে দিয়ে আনা নয় সেখানে রয়ে গেছে আরো অনেক কিছু। 

তরুণ প্রজম্মের পাঠকের কাজে তাই তুলে দেয়া হলো মাহমুদুল হকের এই অনবদ্য উপন্যাস জীবন আমার বোন। আর আগের প্রজম্ম নিশ্চয়ই নতুন করে আরেকবার গ্রহন করুক এক অমৃত সাহিত্য। – সম্পাদক

মাহমুদুল হক

‘অত-ই যখন বোঝো তখন ঘটা ক’রে এতো বাজিয়ে দেখার কি আছে! তোমার চোখ তো আর চোখ নয়, এক্স-রে মেশিন, মগজ এস্তেক দেখতে পাও।’

‘তোমার ওই কূটকচালে ভাবনা-চিন্তাগুলোকে ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করো, তাতে তোমার নিজেরই উপকার হবে, জীবনে আনন্দের দাম নিছক কম নয়। নিজের সম্পর্কে মনের ভিতর কোনো গ্লানি পুষে রাখতে নেই, তুমি মূর্খ হ’লে এসব কথা তুলতাম না। নিজেকে, নিজের চিন্তা- ভাবনাকে, নিজের অভিরুচিকে কারা বোকার মতো ছোট ক’রে দেখতে অভ্যস্ত তা জানো? যারা অগোচরে নিজের সর্বনাশ চায়–‘

‘থট রিডিং-এ মাস্টার হ’য়ে উঠেছো দেখছি। থামলে কেন, চালিয়ে যাও’

‘সব কথায় বাগড়া মারো কেন?’

‘তুমি যখন এক নিঃশ্বাসে কথা বলতে থাকো’ খোকা নরোম ক’রে বললে, ‘তখন অদ্ভুত দেখায় তোমাকে, তোমার ভিতর থেকে তখন অন্য কেউ কথা বলে। এরপর থেকে গভীর মনোযোগ দিয়ে স্টাডি করতে হবে তোমাকে। এখানে একটা কথা আছে, আমি রাক্ষস-খোক্ষস নই, আমার হার্ট একটা চড়ুইপাখির চেয়েও হালকা, পালকের চেয়েও পলকা, এত বেশি ক’রে সত্যের ব্যবচ্ছেদ না করাই ভালো, আমার ভিতর কেঁপে ওঠে, ট’লে যায়’ ‘

তোমার কাছে বোধহয় সিগ্রেট নেই, আনিয়ে দেবো?’

‘সিগ্রেট আছে।’

‘আছে তো টানছো না কেন?’

‘দরকার মনে করিনি এতক্ষণ!’ কথাটা শেষ ক’রেই যন্ত্রচালিতের মতো সিগ্রেট ধরায় খোকা। ফুল স্পীডে পাখা চলছিলো ব’লে তেরোটা কাঠি খরচ হ’লো দেশলাইয়ের।

কিছুক্ষণ বিরতির পর আবার শুরু করলে নীলাভাবী, ‘তোমার সঙ্গে আমার কিসের সম্পর্ক, আর কেনই বা তা, খুলে বলতে হবে আজ তোমাকে। তোমার মাথার ভিতরে বহুৎ আবর্জনা জ’মে আছে, সাফ করা দরকার–‘

বাধা দিয়ে খোকা বললে, ‘বুঝেছি, আজ শালার গলা পানিতে না চুবিয়ে তুমি ছাড়বে না, রয়ে রয়ে স্রেফ প্যাঁচের ভিতরে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। যাচ্ছেতাই! তোমার যা খুশি অনর্গল ব’কে যেতে থাকো, আমার আপত্তি নেই, কিন্তু কোনো জবাব পাবে না।’

মার্কো রুবিওর উপস্থিতিতে ডিআরসি-রুয়ান্ডা শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর

জীবন আমার বোন (পর্ব-১৬)

১১:০০:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ জুন ২০২৪

মাহমুদুল হককে বাদ দিয়ে বাংলা উপন্যাসকে ভাবা ভুল হবে। বাংলাদেশে কেন মাহমুদুল হক বহু পঠিত নয় বা তাঁকে নিয়ে কম আলোচনা হয় এ সত্যিই এক প্রশ্ন। 

মাহমুদুল হকের সাহিত্য নিসন্দেহে স্থান নিয়েছে চিরায়ত সাহিত্যের সারিতে। 

তার উপন্যাস জীবন আমার বোন শুধু সময়ের চিত্র নয়, ইতিহাসকে গল্পের মধ্যে দিয়ে আনা নয় সেখানে রয়ে গেছে আরো অনেক কিছু। 

তরুণ প্রজম্মের পাঠকের কাজে তাই তুলে দেয়া হলো মাহমুদুল হকের এই অনবদ্য উপন্যাস জীবন আমার বোন। আর আগের প্রজম্ম নিশ্চয়ই নতুন করে আরেকবার গ্রহন করুক এক অমৃত সাহিত্য। – সম্পাদক

মাহমুদুল হক

‘অত-ই যখন বোঝো তখন ঘটা ক’রে এতো বাজিয়ে দেখার কি আছে! তোমার চোখ তো আর চোখ নয়, এক্স-রে মেশিন, মগজ এস্তেক দেখতে পাও।’

‘তোমার ওই কূটকচালে ভাবনা-চিন্তাগুলোকে ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করো, তাতে তোমার নিজেরই উপকার হবে, জীবনে আনন্দের দাম নিছক কম নয়। নিজের সম্পর্কে মনের ভিতর কোনো গ্লানি পুষে রাখতে নেই, তুমি মূর্খ হ’লে এসব কথা তুলতাম না। নিজেকে, নিজের চিন্তা- ভাবনাকে, নিজের অভিরুচিকে কারা বোকার মতো ছোট ক’রে দেখতে অভ্যস্ত তা জানো? যারা অগোচরে নিজের সর্বনাশ চায়–‘

‘থট রিডিং-এ মাস্টার হ’য়ে উঠেছো দেখছি। থামলে কেন, চালিয়ে যাও’

‘সব কথায় বাগড়া মারো কেন?’

‘তুমি যখন এক নিঃশ্বাসে কথা বলতে থাকো’ খোকা নরোম ক’রে বললে, ‘তখন অদ্ভুত দেখায় তোমাকে, তোমার ভিতর থেকে তখন অন্য কেউ কথা বলে। এরপর থেকে গভীর মনোযোগ দিয়ে স্টাডি করতে হবে তোমাকে। এখানে একটা কথা আছে, আমি রাক্ষস-খোক্ষস নই, আমার হার্ট একটা চড়ুইপাখির চেয়েও হালকা, পালকের চেয়েও পলকা, এত বেশি ক’রে সত্যের ব্যবচ্ছেদ না করাই ভালো, আমার ভিতর কেঁপে ওঠে, ট’লে যায়’ ‘

তোমার কাছে বোধহয় সিগ্রেট নেই, আনিয়ে দেবো?’

‘সিগ্রেট আছে।’

‘আছে তো টানছো না কেন?’

‘দরকার মনে করিনি এতক্ষণ!’ কথাটা শেষ ক’রেই যন্ত্রচালিতের মতো সিগ্রেট ধরায় খোকা। ফুল স্পীডে পাখা চলছিলো ব’লে তেরোটা কাঠি খরচ হ’লো দেশলাইয়ের।

কিছুক্ষণ বিরতির পর আবার শুরু করলে নীলাভাবী, ‘তোমার সঙ্গে আমার কিসের সম্পর্ক, আর কেনই বা তা, খুলে বলতে হবে আজ তোমাকে। তোমার মাথার ভিতরে বহুৎ আবর্জনা জ’মে আছে, সাফ করা দরকার–‘

বাধা দিয়ে খোকা বললে, ‘বুঝেছি, আজ শালার গলা পানিতে না চুবিয়ে তুমি ছাড়বে না, রয়ে রয়ে স্রেফ প্যাঁচের ভিতরে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। যাচ্ছেতাই! তোমার যা খুশি অনর্গল ব’কে যেতে থাকো, আমার আপত্তি নেই, কিন্তু কোনো জবাব পাবে না।’