০৩:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৪৪) পাঁচ হাজার ডলারের পথে সোনা, ২০২৬ সালেও ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকার আভাস জানুয়ারি থেকে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কমছে, ছয় মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফা কাটছাঁট স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস, আউন্সপ্রতি ছাড়াল ৪৪০০ ডলার এনসিপি নেতাকে গুলি: নারী সঙ্গী পলাতক, ফ্ল্যাট থেকে মাদকসংশ্লিষ্ট আলামত উদ্ধার তারেক রহমানের দেশে ফেরা সামনে রেখে শঙ্কার কথা জানালেন মির্জা আব্বাস গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোটের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ওসমান হাদির বোন পাচ্ছেন অস্ত্রের লাইসেন্স ও গানম্যান তিন যুগ, তিন ফাইনাল, একই বাধা ভারত—সারফরাজের নামেই আবার পাকিস্তানের জয়গাথা সোশ্যাল মিডিয়া যাচাইয়ে জট, দেশে ফেরা থামাচ্ছেন ভারতীয় কর্মীরা

নীলের বিশ্বায়ন – নীল ও ঔপনিবেশিক বাংলায় গোয়েন্দাগিরি (পর্ব-৫)

  • Sarakhon Report
  • ১০:০০:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ জুন ২০২৪
  • 91

পিয়ের পল দারাক ও ভেলাম ভান সেন্দেল

অনুবাদ : ফওজুল করিম

তারা এ জন্যে ইন্ডিগো ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন থেকে শুরু করে নানা রকমভাবে শাস্তিদানের পন্থা গ্রহণের জন্য ওকালতি করে। এমনকি যারা ইন্ডিগো বেশি ব্যবহার করে, সেই ফরাসী রঞ্জকদের মৃত্যু দন্ডাদেশ দেওয়ার সুপারিশ করে। আমদানী করা নীলের বিরুদ্ধে শুরু হয় এক নোংরা আন্দোলন। ওরা বলত, এ হচ্ছে শয়তানের রং, বিষাক্ত প্রাণনাশকারী ও ক্ষয়কারক এক জিনিস, ক্ষতিকর। ইন্ডিগো নীলের বিরুদ্ধে এমন তুমুল আন্দোলন সত্ত্বেও এবং এর বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপের দাবী সত্ত্বেও ওয়াড-নীল ইন্ডিগো-নীলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় যায়।

যোগিতায় দেবে ওলীর দেশ থেকে আনা নীল ইউরোপের বাজারে পরিণত হল এক লোভনীয় পণ্য দ্রব্যে। ইউরোপীয় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো শেষে নীলের উৎপাদন তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইল। নতুন নতুন এলাকা যতই ঔপনিবেশিকদের হাতে পড়তে থাকল তারা চাইল নীল উৎপাদনকারী এলাকা যেন তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। গুড়তে, নতুন উপনিবেশে তারা নীল উৎপাদনের প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে লাগল। ইউরোপের সম্প্রসারিত বাজারে তারা যে শুধু নীল বাজারজাত করতে থাকল তাই নয় তারা নিজেদের উপনিবেশের নীল অত্যন্ত লাভজনকভাবে ইউরোপের অন্য দেশেও রফতানি করত। বিশ্ব-পুঁজিবাদের নতুন বাজারে ইন্ডিগো-নীল পরিণত হল এক তুমুল প্রতিযোগিতামূলক পণ্যে।

এশিয়ার নীলের উপর ষোড়শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে নিয়ন্ত্রণ ছিল পর্তুগালের। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল স্পেন। পর্তুগালের ব্যবসা স্পেন দখল করার চেষ্টা করত। মধ্য আমেরিকায় তাদের দখল করা নতুন উপনিবেশে তারা প্রবর্তন করল এশিয়া থেকে নীল গাছের। এভাবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে মধ্য আমেরিকা ছেয়ে গেল শত শত বাণিজ্যিক নীল ক্ষেতে। বিশেষভাবে এল সালভেদর ও গুয়াতেমালায় নীলচাষ করা হত ব্যাপকভাবে, কেননা দেশ দু’টিতে খনিজ সম্পদ বিশেষ ছিল না বললেই চলে। নীল হল এসব দেশের ঔপনিবেশিক অর্থনীতির ভিত্তি।

মধ্য আমেরিকায় নীল চাষের স্বর্ণযুগ হল সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দী। এখান থেকে বিপুল পরিমাণ নীল রফতানী করা হত স্পেনে (আবার সেখান থেকে অতিরিক্ত শুল্ক আদায় করে বৃটেন ও নেদারল্যাণ্ডে), পেরুতে ও মেক্সিকোয়। উনবিংশ শতাব্দীতে হাওয়া বইতে থাকে উল্টো দিকে। কেননা ওই সব দেশগুলো নীল আমদানীর উপর এত বেশি শুল্ক বসাতে থাকে যে, রফতানিতে নেমে আসে বিপর্যয়।”

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৪৪)

নীলের বিশ্বায়ন – নীল ও ঔপনিবেশিক বাংলায় গোয়েন্দাগিরি (পর্ব-৫)

১০:০০:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ জুন ২০২৪

পিয়ের পল দারাক ও ভেলাম ভান সেন্দেল

অনুবাদ : ফওজুল করিম

তারা এ জন্যে ইন্ডিগো ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন থেকে শুরু করে নানা রকমভাবে শাস্তিদানের পন্থা গ্রহণের জন্য ওকালতি করে। এমনকি যারা ইন্ডিগো বেশি ব্যবহার করে, সেই ফরাসী রঞ্জকদের মৃত্যু দন্ডাদেশ দেওয়ার সুপারিশ করে। আমদানী করা নীলের বিরুদ্ধে শুরু হয় এক নোংরা আন্দোলন। ওরা বলত, এ হচ্ছে শয়তানের রং, বিষাক্ত প্রাণনাশকারী ও ক্ষয়কারক এক জিনিস, ক্ষতিকর। ইন্ডিগো নীলের বিরুদ্ধে এমন তুমুল আন্দোলন সত্ত্বেও এবং এর বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপের দাবী সত্ত্বেও ওয়াড-নীল ইন্ডিগো-নীলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় যায়।

যোগিতায় দেবে ওলীর দেশ থেকে আনা নীল ইউরোপের বাজারে পরিণত হল এক লোভনীয় পণ্য দ্রব্যে। ইউরোপীয় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো শেষে নীলের উৎপাদন তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইল। নতুন নতুন এলাকা যতই ঔপনিবেশিকদের হাতে পড়তে থাকল তারা চাইল নীল উৎপাদনকারী এলাকা যেন তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। গুড়তে, নতুন উপনিবেশে তারা নীল উৎপাদনের প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে লাগল। ইউরোপের সম্প্রসারিত বাজারে তারা যে শুধু নীল বাজারজাত করতে থাকল তাই নয় তারা নিজেদের উপনিবেশের নীল অত্যন্ত লাভজনকভাবে ইউরোপের অন্য দেশেও রফতানি করত। বিশ্ব-পুঁজিবাদের নতুন বাজারে ইন্ডিগো-নীল পরিণত হল এক তুমুল প্রতিযোগিতামূলক পণ্যে।

এশিয়ার নীলের উপর ষোড়শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে নিয়ন্ত্রণ ছিল পর্তুগালের। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল স্পেন। পর্তুগালের ব্যবসা স্পেন দখল করার চেষ্টা করত। মধ্য আমেরিকায় তাদের দখল করা নতুন উপনিবেশে তারা প্রবর্তন করল এশিয়া থেকে নীল গাছের। এভাবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে মধ্য আমেরিকা ছেয়ে গেল শত শত বাণিজ্যিক নীল ক্ষেতে। বিশেষভাবে এল সালভেদর ও গুয়াতেমালায় নীলচাষ করা হত ব্যাপকভাবে, কেননা দেশ দু’টিতে খনিজ সম্পদ বিশেষ ছিল না বললেই চলে। নীল হল এসব দেশের ঔপনিবেশিক অর্থনীতির ভিত্তি।

মধ্য আমেরিকায় নীল চাষের স্বর্ণযুগ হল সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দী। এখান থেকে বিপুল পরিমাণ নীল রফতানী করা হত স্পেনে (আবার সেখান থেকে অতিরিক্ত শুল্ক আদায় করে বৃটেন ও নেদারল্যাণ্ডে), পেরুতে ও মেক্সিকোয়। উনবিংশ শতাব্দীতে হাওয়া বইতে থাকে উল্টো দিকে। কেননা ওই সব দেশগুলো নীল আমদানীর উপর এত বেশি শুল্ক বসাতে থাকে যে, রফতানিতে নেমে আসে বিপর্যয়।”