পৃথিবীতে মানুষকে সফল হতে হলে সব ক্ষেত্রে নেতৃত্বের গুনাবলী অর্জন করতে হয়। নেতা মানে কখনও এই নয় যে সে অন্যকে নেতৃত্ব দিবে। নিজের প্রতিটি কাজের নেতাও নিজেকে হতে হয়। এ কারণে জীবনে সব থেকে বেশি প্রয়োজন নেতৃত্বের গুনগুলো নিজের জীবনা চারণের মধ্যে নিয়ে আসা। মানুষ দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও সফল মানুষের জীবন বিশ্লেষণ করে নেতৃত্বের নানান গুন বা আচরণ নির্ধারণ করেছে।
সারাক্ষণে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হবে তেমনি কিছু স্মার্ট নেতা হবার গুনাবলী।
আনন্দ ও প্রবাহমানতা নেতাকে অর্জন করতে হয়
নেতাকে শুধু বই পড়ে নয়, মানুষ ও প্রকৃতির কাছ থেকে সাইকোলজি শিখতে হবে প্রতি মুহূর্তে। প্রকৃতির প্রতিটি মানুষের চরিত্রের ভেতর দিয়ে তাকে বিচার করা শিখবে তেমনি তাকে অন্য প্রাণীর প্রকৃতিও জানতে হবে।
একজন মানুষকে মনে রাখতে হয়, দীর্ঘ সভ্যতার ধারাবাহিকতায় মানুষ ও অন্য প্রাণী পাশাপাশি বেড়ে উঠেছে; তাই অন্য প্রাণীর আচরণকেও গভীরভাবে মনোবিজ্ঞানের জ্ঞানের জন্যে নিতে হবে।
যেমন ৬ হাজারেরও বেশি সময় ধরে বিড়াল মানুষের সঙ্গে বেড়ে উঠেছে তাই বিড়ালের আচরণ থেকেও মানুষকে অনেক কিছু জানতে হয়। আর কুকুরকে পোষ মানানো মানুষের এ পৃথিবীতে অন্যতম বড় অর্জন। কারো কারো মতে সর্বোচ্চ অর্জন। সে আলোচনায় না গিয়ে বলা যায়, কুকুরের আচরণ থেকে মানুষের অনেক বেশি প্রাণী মনোবজ্ঞিান শেখার আছে।
আর নেতাকে কেন এই প্রাণীর মনোবিজ্ঞান জানতে হবে?
১. নেতার অন্যতম একটি কাজ হলো মানুষকে আনন্দিত করা। কোন নেতা যদি তার দল, টিম বা তার কোম্পানি এমনকি যদি তিনি রাষ্ট্র নায়কও হন, তিনি যদি নিজ নিজ ক্ষেত্রে সকল মানুষকে আনন্দিত না রাখতে পারেন, তাহলে তিনি হয়তো তার ক্ষেত্রে প্রধান কিন্তু স্মার্ট নেতা নন। কারণ, আনন্দ ছাড়া মানুষের মধ্যে শক্তি আসে না। মানুষকে মূল শক্তি দেয় আনন্দিত প্রাণ। এ কারণে নেতাকে তার মানুষকে আনন্দিত রাখার জ্ঞান ও চরিত্র অর্জন করতে হয়। আর নেতার অন্যতম প্রধান কাজ তো শক্তিকে প্রবাহিত করা।
২. নেতা যদি কোন একটি সভার মাধ্যমে বা কনভারসেশানের মাধ্যমে তার কোন একজন কর্মী বা একদল কর্মী বা সদস্যকে দিনের প্রথমেই আনন্দিত করে দিতে পারে তাহলে দেখা যায় ওই দিন তার টিমের সকলের কাজের গতি শুধু বাড়ে না ওই সদস্যদের নিজ নিজ জীবনেও যদি কোন সমস্যা থাকে সেখানেও তার আনন্দিত মনটি অনেক বেশি সুস্থ ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
৩. অনেক আর্থিকভাবে ও ক্ষমতাগতভাবে সফল লোকও আনন্দিত থাকে না। তাই তার সিদ্ধান্তগুলো ধীরে ধীরে তাকে ক্ষতির দিকে নিয়ে যায়। একটি সংগঠন বা একটি কোম্পানি যখন ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে যায় তখন অবশ্যই নেতার মানসিক স্বাস্থ্য’র দিকটিও খতিয়ে দেখতে হয়।
৪. আনন্দিত মন ও অপরের মধ্যে আনন্দকে প্রসারিত করার ক্ষমতা ছাড়া কখনই একজন নেতা হতে পারে না। আর স্মার্ট নেতা হওয়ার তো প্রশ্ন ওঠে না।
কীভাবে একজন নেতাকে আনন্দিত মন তৈরি করতে হয়
১. সব কিছুকে তার ধরনের সফলতা হিসেবে নিতে হবে।
২. সফলতা বলতে বুঝতে হবে তিনি কিছু করছেন।
৩. পৃথিবীতে চলমান কিছুই মানে অগ্রগতি।
৪. সব সময়ে ধরে নিতে হবে, আজ যেটি হয়নি তার মানে এটা হয়নি তা নয়, এটা হবার কাজ শুরু হয়েছে।
৫. আর কখনই মনে করতে নেই কেউ আমাকে বাধা দিচ্ছে। সব সময়ই মনে করতে হয়, সবকিছুই অনুকূলে আছে। আর এইভাবেই মানুষকে পথ চলতে হয়। কারণ, পাহাড়ের পথ বেয়ে জল কি কখনও নুড়ির বাধা ছাড়া এগিয়ে আসে? তাতে কি জলের যাত্রা পথ ও নদীর প্রবাহমানতা কখনও থেমে থাকে?