১১:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
নিজের জীবনের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে লিখলেন উপন্যাস ‘দ্য সিস্টার্স’ হিউএনচাঙ (পর্ব-১৩৩) কলম্বিয়ার সংবিধান পরিবর্তনের উদ্যোগ সাকিব ও মাশরাফি ছাড়া পারফরম্যান্স, শ্রীলঙ্কা টেস্ট সিরিজের পর পথ কি? রাষ্ট্রে কখন ও কেন সংখ্যালঘুরা সংগঠিত ধর্ষণের শিকার হয় গ্রামীণ গর্ভবতী নারীদের আয়রন ঘাটতি: অর্ধেকের বেশি রক্তস্বল্পতায় আরব আমিরাত, মরুভূমি শহরে ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা মুরাদনগরে সংখ্যালঘু নারী ধর্ষণ: ‘এরপর সরকার ক্ষমতায় থাকার যোগ্য নয়’—জাপা চেয়ারম্যান ইরান ও পাকিস্তান থেকে আফগানদের গণনির্বাসনে উদ্বেগ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্যে নতুন নিষেধাজ্ঞা ভারতের, প্রভাব কেমন হবে

জীবন আমার বোন (পর্ব-৪৫)

  • Sarakhon Report
  • ১২:০০:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪
  • 18

মাহমুদুল হককে বাদ দিয়ে বাংলা উপন্যাসকে ভাবা ভুল হবে। বাংলাদেশে কেন মাহমুদুল হক বহু পঠিত নয় বা তাঁকে নিয়ে কম আলোচনা হয় এ সত্যিই এক প্রশ্ন। 

মাহমুদুল হকের সাহিত্য নিসন্দেহে স্থান নিয়েছে চিরায়ত সাহিত্যের সারিতে। 

তার উপন্যাস জীবন আমার বোন শুধু সময়ের চিত্র নয়, ইতিহাসকে গল্পের মধ্যে দিয়ে আনা নয় সেখানে রয়ে গেছে আরো অনেক কিছু। 

তরুণ প্রজম্মের পাঠকের কাজে তাই তুলে দেয়া হলো মাহমুদুল হকের এই অনবদ্য উপন্যাস জীবন আমার বোন। আর আগের প্রজম্ম নিশ্চয়ই নতুন করে আরেকবার গ্রহন করুক এক অমৃত সাহিত্য। – সম্পাদক

মাহমুদুল হক

‘প্রোগ্রাম প্রডিউসার মরে না, তোরা ম’রে গেলে টিভি চালাবে কারা? দালালির টাডিশনটা কন্টিন্যু করতে হবে না? মাঝে মাঝে এমন গোলালু মার্কা কথা বলিস, ভপ্!’

নতুন একটা প্যাকেটের মুখ খুলে সকলের দিকে ধরে খোকা, তারপর আয়েশ ক’রে নিজেও একটা ধরায়।

রহমান বললে, ‘তুই কিছু বল, নুরুদ্দিনটা কেমন ছটফট করছে দেখছিস না।’খোকা বললে, ‘লজিং-এ থেকে মা-মেয়ে দু’জনেরই জয়ঢাক মার্কা পেট বানিয়ে ফেলেছে বেচারা, তিন্তিড়ীয় চিন্তায় ওর এখন মাথার ঘায়ে কুকুরপাগল অবস্থা, কোনো মানে হয় না ওকে ঘাঁটানোর।’

নুরুদ্দিন ক্ষেপে উঠে বললে, ‘তোর শালা মুখের কোনো ট্যাকসো নেই, একটা ডাস্টবিন।’

খোকা ভিতরে ভিতরে উত্তেজিত হ’লেও নিজেকে সামলে নেয় পরক্ষণেই। সে সংযত কণ্ঠেই বললে, ‘বাজারে জোর গুজব, তাই বল- লাম–‘

নুরুদ্দিন বললে, ‘ওটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার, তোদের মাথা না ঘামালেও চলবে।’

রহমান বললে, ‘আগে তো পকেটে গুচ্ছের ছেঁড়া ন্যাকড়া আর ঢিল ভ’রে রাখতিস, এখনো চলে ওসব?’

মওলা বললে, ‘তোর সেই নারী শিক্ষা মন্দিরের বার্ষিক স্পোর্টসের কথা মনে আছে এখনো? পাঁচিলের আড়াল থেকে ঢিল মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলি হার্ডল রেসের চারজন বেপর্দা ছুড়ির। একজন তো শেষ পর্যন্ত কানাই হ’য়ে গেল-‘

নুরুদ্দিন বললে, ‘তোদের কাজই হ’লো স্রেফ পুরানো কাসুন্দি ঘাঁটা!’ ‘বাহাদুর ছেলে বটে’ রহমান বললে, ‘ইজেলিদের সঙ্গে লড়বার জন্যে সাতজনের একটা স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীও গঠন করেছিলি তুই, মালকোঁচা মেরে রোজ প্যারেড করতো ওরা ভার্সিটির গ্রাউন্ডে-‘

‘করতোই তো, তাতে খারাপটা কি দেখলি?’

রহমান বললে, ‘খারাপ ভালোর কথা তো হচ্ছে না, তোর জোশের কথা হচ্ছে; কেমন যেন একটু নেতিয়ে পড়েছিস আজকাল, তা না হ’লে আর্নল্ড টয়েনবির বয়ান তো এক সময় আমাদের জন্যে নিত্যবরাদ্দ ছিলো।’

নুরুদ্দিন বললে, ‘আমি যাই ক’রে থাকি না কেন, কারো দালালি করিনি কখনো। ছাত্রজীবনে সবাই একটা না একটা সংগঠনের পিছনে মাতামাতি ক’রে থাকে, আর তুই? নিজের দিকটা একবার ভালো ক’রে তাকিয়ে দ্যাখ রহমান, উপরে খদ্দরের বর্ম, ইচ্ছে ক’রে বক সিগ্রেট ধ্বংস করা, যতো যাই করিস না কেন তোকে চিনতেও আমার বাকি নেই। খামোকা কথা বাড়িয়ে কোনো লাভ নেই, তুই চাপিস ক’রে যা।

 

 

নিজের জীবনের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে লিখলেন উপন্যাস ‘দ্য সিস্টার্স’

জীবন আমার বোন (পর্ব-৪৫)

১২:০০:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪

মাহমুদুল হককে বাদ দিয়ে বাংলা উপন্যাসকে ভাবা ভুল হবে। বাংলাদেশে কেন মাহমুদুল হক বহু পঠিত নয় বা তাঁকে নিয়ে কম আলোচনা হয় এ সত্যিই এক প্রশ্ন। 

মাহমুদুল হকের সাহিত্য নিসন্দেহে স্থান নিয়েছে চিরায়ত সাহিত্যের সারিতে। 

তার উপন্যাস জীবন আমার বোন শুধু সময়ের চিত্র নয়, ইতিহাসকে গল্পের মধ্যে দিয়ে আনা নয় সেখানে রয়ে গেছে আরো অনেক কিছু। 

তরুণ প্রজম্মের পাঠকের কাজে তাই তুলে দেয়া হলো মাহমুদুল হকের এই অনবদ্য উপন্যাস জীবন আমার বোন। আর আগের প্রজম্ম নিশ্চয়ই নতুন করে আরেকবার গ্রহন করুক এক অমৃত সাহিত্য। – সম্পাদক

মাহমুদুল হক

‘প্রোগ্রাম প্রডিউসার মরে না, তোরা ম’রে গেলে টিভি চালাবে কারা? দালালির টাডিশনটা কন্টিন্যু করতে হবে না? মাঝে মাঝে এমন গোলালু মার্কা কথা বলিস, ভপ্!’

নতুন একটা প্যাকেটের মুখ খুলে সকলের দিকে ধরে খোকা, তারপর আয়েশ ক’রে নিজেও একটা ধরায়।

রহমান বললে, ‘তুই কিছু বল, নুরুদ্দিনটা কেমন ছটফট করছে দেখছিস না।’খোকা বললে, ‘লজিং-এ থেকে মা-মেয়ে দু’জনেরই জয়ঢাক মার্কা পেট বানিয়ে ফেলেছে বেচারা, তিন্তিড়ীয় চিন্তায় ওর এখন মাথার ঘায়ে কুকুরপাগল অবস্থা, কোনো মানে হয় না ওকে ঘাঁটানোর।’

নুরুদ্দিন ক্ষেপে উঠে বললে, ‘তোর শালা মুখের কোনো ট্যাকসো নেই, একটা ডাস্টবিন।’

খোকা ভিতরে ভিতরে উত্তেজিত হ’লেও নিজেকে সামলে নেয় পরক্ষণেই। সে সংযত কণ্ঠেই বললে, ‘বাজারে জোর গুজব, তাই বল- লাম–‘

নুরুদ্দিন বললে, ‘ওটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার, তোদের মাথা না ঘামালেও চলবে।’

রহমান বললে, ‘আগে তো পকেটে গুচ্ছের ছেঁড়া ন্যাকড়া আর ঢিল ভ’রে রাখতিস, এখনো চলে ওসব?’

মওলা বললে, ‘তোর সেই নারী শিক্ষা মন্দিরের বার্ষিক স্পোর্টসের কথা মনে আছে এখনো? পাঁচিলের আড়াল থেকে ঢিল মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলি হার্ডল রেসের চারজন বেপর্দা ছুড়ির। একজন তো শেষ পর্যন্ত কানাই হ’য়ে গেল-‘

নুরুদ্দিন বললে, ‘তোদের কাজই হ’লো স্রেফ পুরানো কাসুন্দি ঘাঁটা!’ ‘বাহাদুর ছেলে বটে’ রহমান বললে, ‘ইজেলিদের সঙ্গে লড়বার জন্যে সাতজনের একটা স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীও গঠন করেছিলি তুই, মালকোঁচা মেরে রোজ প্যারেড করতো ওরা ভার্সিটির গ্রাউন্ডে-‘

‘করতোই তো, তাতে খারাপটা কি দেখলি?’

রহমান বললে, ‘খারাপ ভালোর কথা তো হচ্ছে না, তোর জোশের কথা হচ্ছে; কেমন যেন একটু নেতিয়ে পড়েছিস আজকাল, তা না হ’লে আর্নল্ড টয়েনবির বয়ান তো এক সময় আমাদের জন্যে নিত্যবরাদ্দ ছিলো।’

নুরুদ্দিন বললে, ‘আমি যাই ক’রে থাকি না কেন, কারো দালালি করিনি কখনো। ছাত্রজীবনে সবাই একটা না একটা সংগঠনের পিছনে মাতামাতি ক’রে থাকে, আর তুই? নিজের দিকটা একবার ভালো ক’রে তাকিয়ে দ্যাখ রহমান, উপরে খদ্দরের বর্ম, ইচ্ছে ক’রে বক সিগ্রেট ধ্বংস করা, যতো যাই করিস না কেন তোকে চিনতেও আমার বাকি নেই। খামোকা কথা বাড়িয়ে কোনো লাভ নেই, তুই চাপিস ক’রে যা।