সারাক্ষণ ডেস্ক
সমূদ্র তীর থেকে গভীর সমূদ্রে প্রায় ৩০০ প্রজাতির অক্টোপাসের সন্ধান মিলেছে। আজকের সেফালোপডস এর সবচেয়ে প্রাচীন প্রজাতিটি এসেছিল ৫৩০ মিলিয়ন বছর আগেই যেগুলি খুব বুদ্ধিমত্তা সহ বিচিত্র আচরনের অধিকারী ছিল।
আফ্রিকার উপকূলে ভারত মহাসাগরের কমোরো দ্বীপপূঞ্জে অক্টোপাস শিকার। অক্টোপাস সাধারনত অগভীর গরম পানিতে প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায়।
সাবঅর্ডার ইনসিরাটা
এই প্রজাতিটাই প্রায় পরিচিত অক্টোপাসের প্রজাতি, যেগুলি সমূদ্র তীরে বাস করে।
অক্টোপাসের গোপন প্রতিবেদন নিয়ে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের এমি এওয়ার্ড প্রাপ্ত সিরিজটি আবার ফিরে এসেছে ।
দ্রুত ক্যামোফ্লেজ করতে পারে
এর মস্তিস্ক স্পেশাল পিগমেন্টে পূর্ণ থলি, চামড়া এবং মাংসে নিউরাল সিগনাল পাঠালে তাৎক্ষনিক অক্টোপাসের রং, সাইজ এবং অবস্থান এর চারপাশের উদ্ভিদ, পাথর এবং কোরালের অবস্থার সাথে মিলে যায়।
একটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ
নতুন গবেষণা নতুনভাবে শুরু করছে এই চালাক এবং মানিয়ে নেয়ার মতো প্রাণীকে বোঝার জন্যে।
তাদের গোলাকার ঘুরতে থাকা পর্দা, পেচানো হাত এবং কালো রঙ্গের শরীরে আশ্চর্যের বিষয় আছে বলেই এই ‘দি লিটল মারমেইড’ শত বছর ধরে গল্প গাঁথায় উপজীব্য হয়েছে।
এই ছবিটি সংগ্রহের জন্যে ফটোগ্রাফার ডেভিড লিচুইগার ইটালীর একটি ল্যাবরেটরীতে কয়েক সপ্তাহ কাটিয়েছেন। সেখানে তিনি দেখতে চেয়েছিলেন অক্টোপাস কেমন করে তার রং বদলায়, তার খাবার পছন্দ করে এবং তার বুদ্ধিমত্তা পরিবর্তন করে।
তিনি আরো জানতে পেয়েছেন যে, এদের চামড়া আলোতে খুবই স্পর্শকাতর। এরা তাদের আটটি হাত দিয়ে গন্ধ শুঁকতে পারে যাতে শতশত চোষক থাকে। এর রয়েছে ১৬০০ জিহ্বা এবং নাক। প্রায় ৩০০ টি অক্টোপাস প্রজাতির গবেষণা মানব মস্তিস্কের বিবর্তনীয় উৎস্য বোঝা থেকে কল্পনা এবং বুদ্ধিমত্তার একটা সুন্দর সামঞ্জস্য’র সুবিধা পাওয়া যায়।
বাচ্চার জন্ম
একটা বীকারে দুই রঙ্গের অক্টোপাস সাঁতরাচ্ছে। ফিমেলটা কমপক্ষে ৩০০ ডিম পাড়ে এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ডিমগুলোকে প্রায় একমাস দেখে রাখে।
উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন দৃষ্টি
সেফালোপোডস,মানুষের মতো ক্যামেরার ন্যায় লেন্স চোখের অধিকারী। এই দুই দাগওয়ালা অক্টোপাস ওসেলি থেকে থেকে এসেছে ।
খাবার শিকার
বিজ্ঞানীরা একটি কাঁকড়াকে লুকিয়ে রেখে দেখছিল যে সেটি এটিকে না দেখে নিশানা করতে পারে কিনা। হ্যাঁ, এটি তার রাসায়নিক পিচ্ছিল পদার্থ এবং অনুভূতির যন্ত্র দিয়ে কাঁকড়াটিকে ঠিকই খুঁজে নিয়েছে।
লুকিয়ে যাওয়া সহজেই
জন্মের একঘন্টার মধ্যে দুই দাগের শিশু অক্টোপাস শিকারের জন্যে তার হাত বাঁকা করতে, লম্বা করতে, কোঁচকাতে, হাঁটতে, সাঁতার কাটতে শিখে যায়। সমূদ্র তীরের ৫০ ফুট গভীরে দুই দাগের অক্টোপাস সাধারনত: রকি রিফস এবং ছোট গুহাতে থাকতে পছন্দ করে।
শক্তিশালী হাতের ট্যাকটিকস
অক্টোপাস নানা প্রকার মাছের উপর নির্ভরশীল । তারা ক্রাস্টাোয়ানস ও খায়। কিন্তু তাদের কোনো পছন্দের বিশেষ খাবার নেই।
ভীষন স্মার্ট
কয়েক মিলিয়ন নিউরন থাকায় অক্টোপাস বিচিত্র চরিত্রের অধিকারী হয়। এরা স্বপ্নও দেখে। এরা কেমন করে এমন স্মার্ট হলো এটা বিজ্ঞানীরা খুঁজে বের করতে চেষ্টা চালাচ্ছেন।
পানির নীচে বিষ্ময়
আমি এথেনার মতো আর কাউকে এমন পাইনি। যদিও সে প্রাপ্তবয়ষ্ক এবং ৪ ফিট লম্বা। ওজন ছিল ৪০ পাউন্ড। অন্যদের চেয়ে সে ছিল আলাদা। সে তার রং, আকার , চামড়া এবং স্বাদ পরিবর্তন করতে পারে। কমলা রং এর হাড়বিহীন শরীর তার । তার মুখ ছিল তার বগলের নীচে।
এথেনা হলো একটি বিরাঠ সামুদ্রিক অক্টোপাস, একটি এন্টারোক্টোপাস ডোফলেইনি।
বোস্টনের নিউ ইংল্যান্ডে তার সাথে আমাদের দেখা হয়। সিনিয়র একুয়ারিস্ট স্কট ডাউড ট্যাংকের ঢাকনাটা খুললেন এবং আমরা দেখতে পেলাম তাকে। সেখানেই তার চরিত্রের নানাদিক আমাদের সামনে ধরা পড়লো। আমি তাকে – ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রার পানিতে হাত দিয়ে ধরলাম, সেও তার মসৃণ চামড়া দিয়ে আমাকে অনুভব করলো ।
শিকারের সময় দিনের বেলা কখনো কখনো তারা গ্রুপের সাথে যোগ দেয় এবং সহযোগিতা করে। মাছেরা তাদের মাথা নেড়ে শিকারের উপস্থিতির সিগনাল দেয়। ফলে অক্টোপাস বুঝতে পারে কোথায় তাদের খাদ্য লুক্কায়িত আছে।
আমি এথেনার অন্য চরিত্র দেখে একেবারেই বিষ্মিত হয়ে গেছি। প্রানী বৈচিত্রের সকল সাধারন প্রকারের মধ্যে সে এবং আমি ছিলাম সম্পূর্ণ বিপরীত। সে ছিল প্রোটোস্টোম ডেভেলপিং যার ভ্রূণ থাকে মুখে ।
সূক্ষ উনডারপাস অক্টোপাস ফিলিপাইনে দেখা যায়। এরা তার শরীরকে টুইস্ট করে অন্য প্রাণীকে আকর্ষণ করার জন্যে । এমনকি বিষাক্ত সিংহ মাছকেও।
আমি ডিউটারোস্টোম , আমার বৃদ্ধি প্রথমে পিছন দিক থেকে হয়। সে ইনভার্টিব্রেট এবং হাড় ছাড়া। আমি ভার্টিব্রেট, সমস্ত শরীর হাড়যুক্ত কংকালে তৈরী । কিন্তু সে পানিতে বাস করে , আমি ভূমিতে। আমি বাতাসে নিশ্বাস নেই।
শেষ বারের মতো আমি তার সাথে দয়া ও সময় শেয়ার করি যা অর্ধ বিলিয়ন বছর আগে আমরা সবাই যেমন ছিলাম।
মাওরি অক্টোপাস সাধারনত প্রখর দৃষ্টি রাখে এর খাবার শিকারের জন্যে। কাঁকড়া, চিংড়ি এবং ছোট তিমি এদের শিকারের অংশ।
বেশীর ভাগ অক্টোপাস রাতের বেলায় খাবার খোঁজে। তিনি হলেন লেডি অক্টোপাস তাই দিনের আলোতে কাঁকড়া, চিংড়ি এবং মাছ শিকার করে ।
এই অদ্ভূত সুন্দর , কিউরিয়াস প্রাণীটি আমাকে তার পৃথিবীতে নিয়ে গেল , আমি তাকে আবিষ্কার করলাম তার মৃত্যুর পর। একটা মজার ব্যাপার হলো, অক্টোপাসরা বেশীদিন বাঁচেনা।
যখন আমি সকল অক্টোপাস সম্পর্কে জানতে পেরেছি সেটি সত্যিই খুব মজার ছিল এবং বুদ্ধিবৃত্তিক ছিল। যখন আমি আমার বন্ধুত্বের কথা একটা বইয়ে লিখেছিলাম সেই বইটি ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয়েছিল । বইটির টাইটেল ছিল ‘ দি সোউল অব এন অক্টোপাস’ । মানে ‘একটি অক্টোপাসের আত্মা’। অনেক পাঠকই থমকে গিয়েছিলেন।
একটা অক্টোপাসের আবার আত্মা থাকে কি করে ?
অক্টোপাসরা হলো মোলাস্কা শ্রেণীর যারা মস্তিস্ক বিহীন হয়। অবশ্যই। অনেকেই বলেন, অক্টোপাসের আত্মা আছে, ব্যক্তিত্ব আছে, চিন্তার শক্তি আছে, স্মরণ শক্তি ও আবেগও আছে। তবে এসব কথা একটা ভুলভাবে তুলে ধরার মানসিকতা যা মানুষের শক্তির অনুভূতির কাছে একটা নন হিউম্যান প্রাণীর তুলনা। ঠিক যেমন একটি শিশু বলতে পারে আমার পুতুলটা জ্যান্ত।
একটি কোকোনাট অক্টোপাস
একটি কোকোনাট অক্টোপাস সাধারনত কোকোনাটের খোসায় আশ্রয় নেয় কিন্তু এর মতো সমুদ্রের খোসায় এবং সমুদ্রের তলদেশের অন্যান্য ডেট্রিটাসেও আশ্রয় নেয়।
পরিবর্তনের ঢেউ
সামুদ্রিক প্রাণী বিজ্ঞানী এলেক্স স্নেল, যিনি সকল প্রাণীর করুণা এবং মানব চিকিৎসাকর্মী তার সাথে আলোচনায় জানা যায়-
অক্টোপসরা যুক্তরাষ্ট্রের এনিমেল ওয়েলফেয়ার এক্ট এর অধীনে নয় কারন তাদের মেরুদন্ড নেই। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এক্সপ্লোরার এলেক্স স্নেল প্রাণীদের মন বোঝার উপরে কাজ করছেন যাতে সব প্রাণীর জীবন সুরক্ষা হয়। এখানে তিনি অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন যাতে আমরা এই সামুদ্রিক বসবাসকারীদের বুঝতে পারি।
অক্টোপাসরা খুবই স্মার্ট
সেজন্যে কি আমরা তাদের ব্যাপারে বেশী সাবধানী ?
মানুষ সাধারনত অনেক বেশী সহানুভূতি দেখায় ওরাংওটান, গরিলা এবং হরিনকে। এ জাতীয় প্রজাতি যাদের সাথে আমাদের ঘনিষ্ঠতা বেশী তাদের কাছ থেকে সরে আসলে আমাদের অনুভূতি কমে যায়।
আমরা জানি, অক্টোপাসেরা কৌতূহল দেখায়, সমস্যা সমাধান করতে পারে, কিছু একটা ব্যবহার করে এবং খুব তাড়াতাড়ি শিখতে পারে। যত বেশী আমরা এদের সম্পর্কে শিখবো তত বেশী অন্যদের কাছ থেকে বিভিন্ন সমস্যা সরে যাবে এবং সেটা আলোচনায় পরিণত হবে।
প্রাণীর আচরণ কি অনুভূতি বোঝার সাথে স্থির ?
একটা শিড়দাঁড়া থাকা মানে একটি ব্যারোমিটার যাতে প্রাণীরা অবস্থান নেয়। অক্টোপাস কি ব্যাথা অনুভব করে? ব্যাপারটা আসলে ধোঁয়াশা। কেউ এটা সঠিক বলতে পারবে ? হ্যাঁ। এই সামর্থ্যকে আমরা ব্যথার অনুভূতি প্রকাশের সামর্থ্যকে বুঝি।
তারা কি ব্যাথা মুক্ত হতে চায়?
এটি একটি গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড। অনুভূতি অনুভব করার সামর্থ্য হলো একধরনের শক্তি যেটা আনন্দ বা নিরানন্দ দুটোই হতে পারে। এমনকি প্রাণীরা যারা মানসিকভাবে জটিল নয় তারাও এই অনুভূতির নিয়মে পড়তে পারে। আমরা ১৭০ টি সেফালোপোডসের উপর গবেষণা করে পেয়েছি যে, অক্টোপাসের শক্তিশালী অনুভূতি প্রকাশের ক্ষমতা আছে। তারা আটটি নিয়মের সাতটিতে অবস্থান করে। যুক্তরাজ্যের আইনে এখন অক্টোপাসকে অনুভূতিপরায়ণ প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
একশ বছর আগে, এটা খুব সাধারন ছিল যে, প্রাণীরা ছিল রোবোট এবং চিন্তা করার সামর্থ্যহীন। এখন আমাদের তুলনামূলক ভালো বিজ্ঞান এবং জ্ঞান আছে। কিন্তু আমি মনে করি পরবর্তী একশ বছরে আমরা পিছনে ফিরে দেখবো যে আমরা কম্পনই অনুভব করছি।
আমরা কিভাবে ভালো করতে পারি ?
আমরা একটি তর্কের মুখোমুখি এখন যে, অক্টোপাস ওয়েলফয়ার মানে অক্টোপাস চাষাবাদ। যেটা এখন উদীয়মান শিল্প। যখন কোনো নতুন ফার্মিং এর বিষয় আসে তখন কিছু জিনিষ ভাবার বিষয় আছে। এদেরকে চাষাবাদের জন্যে উপযুক্ত করে নেয়াটাই হলো প্রথম কাজ। বেশীরভাগ অক্টোপাস প্রজাতি একত্রে থাকলে চাপ অনুভব করে, খাদক হয়ে পড়ে এবং নিজে নিজেকে আঘাত করে। মানুষের এর চাষাবাদের পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করেছিল ল্যারেটরীতে কিন্তু এদের জন্যে সেটা প্রোটিন ঘাটতির কারণ হয়। অক্টোপাস নৌকায় থাকলে শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যায়।
এদের এক মিলিয়নের মধ্যে এটি করার কল্পনা করুন। এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে এটি অক্টোপাস খাবে কিনা তা নিয়ে বিতর্ক নয়- এটি তাদের ব্যাপক উৎপাদনে ঠেলে দেবে কিনা তা সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়। আমাদের আরো সহানুভূতিশীল এবং সিদ্ধান্ত জানানোর জন্যে বিজ্ঞানের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। একটি তরুন অক্টোপাস ট্রান্সলুসেন্ট স্কিম তার পাচনতন্ত্রকে প্রকাশ করে। ম্যান্টেলের কমলা বিন্দুগুলিকে ক্রোমাটোফোরস অঙ্গ যা প্রাণীকে রঙ পরিবর্তন করতে সহায়তা করে।
Leave a Reply