পিয়ের পল দারাক ও ভেলাম ভান সেন্দেল
অনুবাদ : ফওজুল করিম
প্রথম প্রক্রিয়ায় গ্যাঁজানো অর্থাৎ গ্যাঁজানো ভাল হলে তার রং হবে হাল্কা নীল, আঙ্গুলের চাপে সহজেই ভেঙে যাবে। অন্যদিকে অধিক গ্যাজানো হলে রং হবে কালচে, শক্ত মতন, আর এগুলো আঙ্গুলের চাপে ভাঙতে মুশকিল। এ কথা সত্যি যে দ্বিতীয় শ্রেণীর নীল বাজারে মেলে বেশি। এগুলো দামেও কম, বিক্রীও কম। লোভের বশবর্তী হয়ে অনেকে কড়া করে গ্যাঁজায় কেননা নীল গাছ অত্যধিক গ্যাজালে তা থেকে এক ধরনের রস বের হয় যা লেগে থাকে নীলের গায়ে আর তাতে ওজন বাড়ে নীলের। বঙ্গদেশের নীলকররা একটা জিনিস লক্ষ্য করেছে যে জুন ও জুলাই মাসের চেয়ে আগষ্টে ও সেপ্টেম্বর মাসে গ্যাঁজানের সময় লাগে বেশি, যদিও গরম বেশি জুন জুলাই মাসে।
পেটানো
ঢালু জলাধারে গ্যাঁজানোর প্রথম পর্ব সমাধা হলেই জলাধারের ছিপি খুলে দিয়ে পানি নেওয়া হয় এর পেছনের জলাধারে যার নাম পেটাই চৌবাচ্চা। এই চৌবাচ্চার দেয়াল প্রথম চৌবাচ্চা থেকে দু’ফিট উচু। কেননা, পেটানোর কাজ করতে গেলে চৌবাচ্চার পানির মধ্যে ঢেউ ওঠে ও পানি উপচিয়ে পড়ে। উপচানো পানি যাতে চৌবাচ্চার বাইরে না যায় তাই এটার দেয়াল উঁচু রাখা হয়।
ভুনা কুলি
পেটানোর কাজ শুরু হলে প্রায় চার ফুট উঁচু পেটাই দন্ড হাতে নিয়ে বারো চৌদ্দ জন লোক দাঁড়িয়ে যায়। এরা পানির মধ্যে দাড়িয়ে হাতের দন্ড দিয়ে ভেজা নরম নীল গাছগুলো পেটাতে হয়। প্রায় দুই আড়াই ঘণ্টা এরকম পেটানোর পর পানির রং বদলাতে থাকে। প্রথমে সেগুলো সবুজ থেকে ক্রমশঃ কালো রং ধারণ করতে থাকে। এই অবস্থায় পৌঁছুলেই বুঝতে হবে এবার নীল দানা বাঁধতে শুরু করেছে। দানা বাঁধতে শুরু করলেই পেটানো বন্ধ করতে হবে।