পৃথিবীতে মানুষকে সফল হতে হলে সব ক্ষেত্রে নেতৃত্বের গুনাবলী অর্জন করতে হয়। নেতা মানে কখনও এই নয় যে সে অন্যকে নেতৃত্ব দিবে। নিজের প্রতিটি কাজের নেতাও নিজেকে হতে হয়। এ কারণে জীবনে সব থেকে বেশি প্রয়োজন নেতৃত্বের গুনগুলো নিজের জীবনা চারণের মধ্যে নিয়ে আসা। মানুষ দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও সফল মানুষের জীবন বিশ্লেষণ করে নেতৃত্বের নানান গুন বা আচরণ নির্ধারণ করেছে।
সারাক্ষণে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হবে তেমনি কিছু স্মার্ট নেতা হবার গুনাবলী।
অতিমূল্যায়ন
মানুষের সহজাত ধর্ম নিজেকে অতিমূল্যায়ন করা। নিজেকে এই অতিমূল্যায়ন করা থেকে বেরিয়ে আসতে বা বুঝতে হলে একজন মানুষকে খুব ছোট বেলা থেকে একটা ট্রেনিং এর ভেতর দিয়ে বড় হতে হয়।
আবার একটা নির্দিষ্ট বয়সের পরে যে সেটা হবে না তা নয়। তাও সম্ভব। এবং পৃথিবীতে অনেকেই নিজেকে সেভাবে তৈরি করতে সমর্থ হয়েছে। নেতা মানেই কিন্তু ধরে নিতে হয় যিনি নিজেকে তৈরি করেন।
স্মার্ট নেতার সামনে সব থেকে বড় প্রশ্ন তখনই এসে দাঁড়ায়, তিনি তার সীমান কীভাবে তৈরি করবেন?
নেতাকে নিজেই তার সীমান তৈরি করতে হয়। নিজেকে প্রকৃত মূল্যায়নের ভেতর দিয়ে এ কাজটি করতে হয়। অতিমূল্যায়নের পথে গেলে নেতা নিজে্ই নিজের মূল্যায়নে ভুল করবেন। এবং তখন তিনি তার সীমানা তৈরিতে ব্যর্থ হবেন। তিনি হয় সীমা রেখা অতিক্রম করবেন না হয় নিজের গন্ডি বাড়ানোর চেষ্টা থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন।
যেমন উদাহরণ হতে পারে ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকর। পৃথিবী সেরা ক্রিকেটারদের একজন তিনি। এই পৃথিবী সেরা বিচারেই ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোলবোর্ড তাকে এক পর্যায়ে ভারতীয় ক্রিকেট টিমের ক্যাপ্টেন নির্বাচিত করেন।
ক্যাপ্টেন হিসেবে কয়েকটি সিরিজ পরিচালনার পরে টেন্ডুলকর নিজেই নিজেকে মূল্যায়ন করেন, খেলোয়াড় হিসেবে তিনি অনেক বড় নেতা তবে দল পরিচালনার নেতা তিনি নন। কারণ একজন ভালো খেলোয়াড় ও একজন ভালো দলপরিচালক বা দলের নেতা এক বিষয় নয়।
অন্যদিকে খুব বড় খেলোযাড় ছিলেন না মাইকেল ব্রিয়ার্লি। কিন্তু তিনি ব্রিটেন ক্রিকেট টিমকে একের পর এক জয় এনে দিয়েছেন। তিনি ইয়ান বোথামের মত পৃথিবী সেরা অল রাউন্ডারকে সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পেরেছেন।
অন্যদিকে ভারতীয় ক্রিকেট টিমের অনেক সফল নেতা ও ব্রিয়ার্লি’র থেকে বড় ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলি। তিনি তার দলের জন্য অনেক সফলতা এনে দেন। তবে ব্রিয়ার্লি যেমন বোথামকে সর্বোচ্চ ব্যবহার করেছিলেন সৌরভ কিন্তু শচীন টেন্ডুলকরকে সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারেনিনি। এখানে পার্থক্য হলো ব্রিয়ার্লি নিজেকে মূল্যায়নে ভুল কম করেছিলেন, সৌরভ নিজেকে ক্যাপ্টেন হিসেবে মূল্যায়নে ভুল বেশি করেছিলেন। তার সীমানা তিনি মূল্যায়ন করতে পারেননি সঠিকভাবে।
দল, সংগঠন, কোম্পানি, রাষ্ট্র প্রত্যেকের নেতাদের জন্যে এই নিজেকে মূল্যায়নের বিষয়টি অনেক বড়।সেখানে নিজেকে সংযত রাখা আরো বেশি দরকার, যেন কখনই অতিমূল্যায়ন না হয়। আর স্মার্ট নেতাকে অবশ্যই তার সীমা রেখা বুঝতে হবে। শচীন টেন্ডুলকর যেমন তার সীমা রেখা বুঝেছিলেন এমনটি বোঝাই স্মার্ট নেতার প্রধান কাজ।
Leave a Reply