সারাক্ষণ ডেস্ক
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো: তৌহিদ হোসেন বলেছেন, তিনি কোন অবস্থাতেই মনে করেন না ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ বিগ্রহের সম্ভাবনা আছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের দেয়া প্রেস রিলিজ এ তথ্য জানানো হয়। তাছাড়া সেখানে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পক্ষে আর রোহিঙ্গা নেয়া সম্ভব নয়। বরং তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, যারা উপেদেশ দিতে চায় তারা রোহিঙ্গাদের নিয়ে যায়।
ওই প্রেস রিলিজে বিস্তারিত বলা হয়, সম্প্রতি ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং শান্তি রক্ষার জন্য সে দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরাইল-হামাস পরিস্থিতির সঙ্গে বাংলাদেশ পরিস্থিতির উল্লেখ করায় অবাক হয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো: তৌহিদ হোসেন।
রবিবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ‘শান্তি রক্ষার জন্য ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কিনা’ শীর্ষক এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমি যতটা উদ্বিগ্ন তার চেয়ে বেশি অবাক। উনি (ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী) এ ধরনের কথা কেন বললেন? আমি এটার কোনো কারণ খুঁজে পাই না। আমি কোন অবস্থাতেই মনে করি না, ভারতের সঙ্গে আমাদের যুদ্ধ-বিগ্রহ হওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে।
তিনি বলেন, উনি এটা তার নিজের দেশের কনজাম্পশনের জন্য বলেছেন কিনা সেটা আমাদের জানতে হবে। এছাড়া, ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে তো ভারতের যুদ্ধ প্রস্তুতির কোনো প্রয়োজন দেখি না, বা হামাসের সঙ্গে যে সমস্যা হয়েছে তাতে করে ভারতের যুদ্ধ প্রস্তুতির কী সম্পর্ক? রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরাইল-হামাস পরিস্থিতির সঙ্গে বাংলাদেশের কীভাবে তুলনা হয়, এটাও আমার বোধগম্য নয়। আমরা দেখব, কেন তিনি এ রকম কথা বলেছেন।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এ ধরনের বক্তব্য বাংলাদেশের জন্য হুমকিস্বরূপ কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমি এখনও মনে করি উনি (রাজনাথ সিং) এটা অভ্যন্তরীণ কনজাম্পশনের জন্য বলেছেন। কাজেই, এ বিষয়ে আমি কোন স্পেকুলেট করতে চাই না । আমরা অবশ্যই দেখব এটা কী হচ্ছে, কেন হচ্ছে।
রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ বিষয়ে সরকারের অবস্থান কী- এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা খুব স্পষ্ট করেই বলেছি আমাদের পক্ষে আর একজন রোহিঙ্গাকেও আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়। কিছু কিছু মানুষ ঢুকে যাচ্ছে, এটা আমরা জানি। সেটাকে যতটুকু সম্ভব আমরা ঠেকানোর চেষ্টা করছি। যাদেরকে আমরা ধরতে পারছি, বিজিবি প্রতিদিনই তাদের ফেরত পাঠাচ্ছে।
তিনি বলেন, ইউএনএইচসিআর চায় আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেই, কিন্তু আমরা তাদের কাছে স্পষ্ট করেছি, আমরা ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি। আমাদের যেটুকু ভূমিকা নেওয়া প্রত্যাশিত তার চেয়ে বেশি আমরা পালন করেছি। আমাদের পক্ষে আর সম্ভব নয়। যারা আমাদের উপদেশ দিতে আসে বা চায়, তারা বরং তাদেরকে (রোহিঙ্গাদের) নিয়ে যাক।