০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

রাস্তায় দিন কাটিয়ে ২৫০ ডলার থেকেই গড়লেন ৪.৯ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ

২৫০ ডলার থেকে ৪.৯ বিলিয়ন ডলারের মালিক

যখন ইসাক পার্লমুটার প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখলেন, পকেটে মাত্র ২৫০ ডলার ছিল। আজ তার সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। হলিউডের সবচেয়ে ধনী অভিবাসী হিসেবে তার এই অবিশ্বাস্য সফলতার গল্প এখানে তুলে ধরা হলো।

প্রারম্ভিক দিনগুলো

ইস্রায়েলে জন্ম নেওয়া ইসাক পার্লমুটার ১৯৪৫ সালে একটি ইহুদী পরিবারে প্যালেস্টাইনে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালের ছয়দিনব্যাপী যুদ্ধে ইস্রায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীতে (IDF) সামরিক দায়িত্ব পালন করার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। নিউইয়র্কে প্রথমে তিনি সিমেট্রির বাইরের এলাকায় জীবন কাটাতেন এবং হিব্রু ভাষায় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সেবা দিয়ে অর্থ উপার্জন করতেন। ধীরে ধীরে খেলনার ব্যবসায় মনোযোগী হয়ে সড়কে খেলনা বিক্রি শুরু করেন।

ব্যবসায়িক দখল ও মার্জ

কলেজে পড়েননি, তবুও নিজে থেকেই শিখে ফেলেছিলেন ব্যালান্সশীট পড়ে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা বোঝা। ১৯৮৮ সালে দেউলিয়া খেলনা প্রস্তুতকারী Coleco কিনে পুনরুজ্জীবিত করার মধ্য দিয়ে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।

মার্ভেল এন্টারটেইনমেন্টে অবদান

১৯৯৩ সালে তিনি মার্ভেল কমিক্সের পরিচালনা পর্ষদের (Board of Directors) সদস্য হন। এরপর তার টয় বিজনেস কোম্পানি মার্ভেলের সঙ্গে মার্জ করে Marvel Enterprises গড়ে তোলেন, যখন মার্ভেল দেউলিয়া হওয়ার পথে ছিল। ২০০১ সালে তিনি Marvel-এর ভাইস চেয়ারম্যান এবং পরবর্তীতে সিইও হিসেবে দায়িত্ব নেন। তার নেতৃত্বে কেভিন ফাইজি পরিচালিত Marvel Studios প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি ২০১৫ সাল পর্যন্ত Marvel-এর সব চলচ্চিত্র, এবং ২০১৯ সাল পর্যন্ত সব টেলিভিশন অনুষ্ঠান তদারকি করেন।

undefined

পরবর্তী ঘটনা

২০২৩ সালের মার্চে সংস্থার কাঠামোগত পরিবর্তনের অংশ হিসেবে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর তিনি নিজের সকল শেয়ার বিক্রি করে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার ক্যাশে ভাণ্ডার করেন। বর্তমান (জুলাই ২০২৫) হিসাব অনুযায়ী তার সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৪.৯ বিলিয়ন ডলার।

বিতর্ক ও সমালোচনা

হলিউডে মার্ভেলকে পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে পার্লমুটারের অবদান অসীম, তবু তিনি বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব হিসেবেও পরিচিত। ‘হাল্ক’, ‘স্পাইডার-ম্যান’ ও ‘আয়রন ম্যান’সহ বিভিন্ন ব্লকবাস্টারের সাফল্য সত্ত্বেও Marvel Studios-এর সভাপতি কেভিন ফাইজি ক্রিয়েটিভ মতবিরোধের কারণে তার সঙ্গে কাজ করতে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। ২০১০ সালে ‘আয়রন ম্যান ২’-তে টেরেন্স হোয়ার্ডকে অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দাবির কারণে বরখাস্ত করে ডন চিডলকে নিয়োগের ঘটনায় দল আরও নাটকীয় পরিস্থিতির মুখে পড়ে—পার্লমুটার তখন বলেছিলেন “কালো মানুষেরা একইরকম দেখতে”। ২০১৫ সালের পর থেকে ফাইজি আর পার্লমুটারের অধীনে ছিলেন না, এবং ২০১৯ সালে Marvel Television থেকেও পদত্যাগ করেন তিনি।

রাস্তায় দিন কাটিয়ে ২৫০ ডলার থেকেই গড়লেন ৪.৯ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ

০৫:১৫:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

২৫০ ডলার থেকে ৪.৯ বিলিয়ন ডলারের মালিক

যখন ইসাক পার্লমুটার প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখলেন, পকেটে মাত্র ২৫০ ডলার ছিল। আজ তার সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। হলিউডের সবচেয়ে ধনী অভিবাসী হিসেবে তার এই অবিশ্বাস্য সফলতার গল্প এখানে তুলে ধরা হলো।

প্রারম্ভিক দিনগুলো

ইস্রায়েলে জন্ম নেওয়া ইসাক পার্লমুটার ১৯৪৫ সালে একটি ইহুদী পরিবারে প্যালেস্টাইনে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালের ছয়দিনব্যাপী যুদ্ধে ইস্রায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীতে (IDF) সামরিক দায়িত্ব পালন করার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। নিউইয়র্কে প্রথমে তিনি সিমেট্রির বাইরের এলাকায় জীবন কাটাতেন এবং হিব্রু ভাষায় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সেবা দিয়ে অর্থ উপার্জন করতেন। ধীরে ধীরে খেলনার ব্যবসায় মনোযোগী হয়ে সড়কে খেলনা বিক্রি শুরু করেন।

ব্যবসায়িক দখল ও মার্জ

কলেজে পড়েননি, তবুও নিজে থেকেই শিখে ফেলেছিলেন ব্যালান্সশীট পড়ে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা বোঝা। ১৯৮৮ সালে দেউলিয়া খেলনা প্রস্তুতকারী Coleco কিনে পুনরুজ্জীবিত করার মধ্য দিয়ে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।

মার্ভেল এন্টারটেইনমেন্টে অবদান

১৯৯৩ সালে তিনি মার্ভেল কমিক্সের পরিচালনা পর্ষদের (Board of Directors) সদস্য হন। এরপর তার টয় বিজনেস কোম্পানি মার্ভেলের সঙ্গে মার্জ করে Marvel Enterprises গড়ে তোলেন, যখন মার্ভেল দেউলিয়া হওয়ার পথে ছিল। ২০০১ সালে তিনি Marvel-এর ভাইস চেয়ারম্যান এবং পরবর্তীতে সিইও হিসেবে দায়িত্ব নেন। তার নেতৃত্বে কেভিন ফাইজি পরিচালিত Marvel Studios প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি ২০১৫ সাল পর্যন্ত Marvel-এর সব চলচ্চিত্র, এবং ২০১৯ সাল পর্যন্ত সব টেলিভিশন অনুষ্ঠান তদারকি করেন।

undefined

পরবর্তী ঘটনা

২০২৩ সালের মার্চে সংস্থার কাঠামোগত পরিবর্তনের অংশ হিসেবে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর তিনি নিজের সকল শেয়ার বিক্রি করে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার ক্যাশে ভাণ্ডার করেন। বর্তমান (জুলাই ২০২৫) হিসাব অনুযায়ী তার সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৪.৯ বিলিয়ন ডলার।

বিতর্ক ও সমালোচনা

হলিউডে মার্ভেলকে পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে পার্লমুটারের অবদান অসীম, তবু তিনি বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব হিসেবেও পরিচিত। ‘হাল্ক’, ‘স্পাইডার-ম্যান’ ও ‘আয়রন ম্যান’সহ বিভিন্ন ব্লকবাস্টারের সাফল্য সত্ত্বেও Marvel Studios-এর সভাপতি কেভিন ফাইজি ক্রিয়েটিভ মতবিরোধের কারণে তার সঙ্গে কাজ করতে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। ২০১০ সালে ‘আয়রন ম্যান ২’-তে টেরেন্স হোয়ার্ডকে অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দাবির কারণে বরখাস্ত করে ডন চিডলকে নিয়োগের ঘটনায় দল আরও নাটকীয় পরিস্থিতির মুখে পড়ে—পার্লমুটার তখন বলেছিলেন “কালো মানুষেরা একইরকম দেখতে”। ২০১৫ সালের পর থেকে ফাইজি আর পার্লমুটারের অধীনে ছিলেন না, এবং ২০১৯ সালে Marvel Television থেকেও পদত্যাগ করেন তিনি।