০৮:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-৪৭)

  • Sarakhon Report
  • ১২:০০:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪
  • 20
শশাঙ্ক মণ্ডল
 লবণ

তৃতীয় অধ্যায়

পূর্বে ১০০ মণ লবণের জন্য উৎপাদককে দেওয়া হত ৬১ সিকা টাকা সেখানে দেওয়া হচ্ছে, ৩৮ সিকা টাকা। বারুইপুরের রামরতন মণ্ডল অভিযোগ করছে পূর্বে ১০০ মণ লবণের জন্য দেওয়া হত ৫০ সিকা টাকা বর্তমানে তা কমিয়ে ৪০ সিকা টাকা দেওয়া হচ্ছে। মাল ওজনের ব্যাপারে নানা রকম কারসাজির অভিযোগ। সেইসঙ্গে নানারকম ঘুষ, দস্তুরি দিয়ে মাল বিক্রয় করতে হচ্ছে। এই তদন্তের মধ্য দিয়ে আমরা প্রথম ব্রিটিশ রাজত্বে মানুষের অভিযোগ সরকারিভাবে লিপিবদ্ধ হতে দেখলাম। (২০)
সেদিন সুন্দরবনের রায়মঙ্গল সল্ট এজেন্সি বলতে ২৪ পরগনা জেলা এবং খুলনা জেলার সমগ্র সুন্দরবনাঞ্চল বোঝানো হত। সুন্দরবনের এই এলাকা ছিল দুর্গম বনাঞ্চল, জনবসতিশূন্য জীবনযাত্রার স্বাভাবিক প্রয়োজনীয় উপাদানের একান্ত অভাব। লবণ উৎপাদনের জন্য কোম্পানির সল্ট এজেন্টের পক্ষ থেকে এখানে ঠিকা মালঙ্গীদের চুক্তিতে নিয়োগ করা হত। এরা ইজারাদার হিসাবে কোম্পানির কাছ থেকে অগ্রিম টাকা দাদন নিত এবং সেই টাকা মাহিন্দারদের অগ্রিম হিসাবে দিয়ে রায়মঙ্গলের বিভিন্ন প্রান্তে লবণ উৎপাদনের জন্য নিয়োগ করত।
সে যুগে রায়মঙ্গলের এই ভয়ঙ্কর এলাকায় কোন মানুষ যেতে চাইত না মাহিন্দার এর কাজ করার জন্য ইজারাদারদের কাছ থেকে স্বেচ্ছায় কেউ টাকা নিতে চাইত না। ইজারাদাররা জোর জবরদস্তি করে এদের টাকা নিতে বাধ্য করত। রায়মঙ্গল সল্ট এজেন্সি প্রশাসনগত ভাবে সে যুগে নদীয়া জেলার অন্তর্গত ছিল। তাই নদীয়ার জেলাশাসক বোর্ড অফ রেভিনিউ কে ২২ শে জানুয়ারি ১৭৮৬ খ্রীষ্টাব্দে লিখছেন: The Malangis throw it (money) into their (ryots) houses or lay it before their doors and a mere sight of the money renders them liable to be sent down to the Sundarbans, (১) গ্রামের প্রধান পাইককে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে এভাবে কোন কোন চাষিকে অগ্রিম টাকা দেওয়া হল এবং পাইক বাধ্য থাকবে ঐ সব লোক যাতে মরশুম শুরু হবার সঙ্গে সঙ্গে লবণ উৎপাদনের শ্রমিক হিসাবে কাজে যোগদান করে তা দেখার জন্য।
মাহিন্দাররা একবছরের জন্য টাকা অগ্রিম নিলে পরের বছরেও তারা যেতে বাধ্য হত। মালঙ্গীরা নানা রকমের হিসাবের কারসাজিতে এদেরকে এমনভাবে বেঁধে রাখত যে তারা আর কোন দিন অন্য জীবিকা গ্রহণ করতে পারত না। ১৭৯৪ খ্রীষ্টাব্দে মজুরি সম্পর্কে নদীয়া জেলার জজ ও ম্যাজিস্ট্রেট রিচার্ড রকি লিখেছেন- In the dessy khalaries at Balia, I have lately got the price of salt increases to 77 Rupees per 100 mds. Besides paying for all their of wood cutters boats etc. এই রেট মেদিনীপুরের মালঙ্গীদের তুলনায় ভালো।

১৪ জুলাই অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-৪৭)

১২:০০:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪
শশাঙ্ক মণ্ডল
 লবণ

তৃতীয় অধ্যায়

পূর্বে ১০০ মণ লবণের জন্য উৎপাদককে দেওয়া হত ৬১ সিকা টাকা সেখানে দেওয়া হচ্ছে, ৩৮ সিকা টাকা। বারুইপুরের রামরতন মণ্ডল অভিযোগ করছে পূর্বে ১০০ মণ লবণের জন্য দেওয়া হত ৫০ সিকা টাকা বর্তমানে তা কমিয়ে ৪০ সিকা টাকা দেওয়া হচ্ছে। মাল ওজনের ব্যাপারে নানা রকম কারসাজির অভিযোগ। সেইসঙ্গে নানারকম ঘুষ, দস্তুরি দিয়ে মাল বিক্রয় করতে হচ্ছে। এই তদন্তের মধ্য দিয়ে আমরা প্রথম ব্রিটিশ রাজত্বে মানুষের অভিযোগ সরকারিভাবে লিপিবদ্ধ হতে দেখলাম। (২০)
সেদিন সুন্দরবনের রায়মঙ্গল সল্ট এজেন্সি বলতে ২৪ পরগনা জেলা এবং খুলনা জেলার সমগ্র সুন্দরবনাঞ্চল বোঝানো হত। সুন্দরবনের এই এলাকা ছিল দুর্গম বনাঞ্চল, জনবসতিশূন্য জীবনযাত্রার স্বাভাবিক প্রয়োজনীয় উপাদানের একান্ত অভাব। লবণ উৎপাদনের জন্য কোম্পানির সল্ট এজেন্টের পক্ষ থেকে এখানে ঠিকা মালঙ্গীদের চুক্তিতে নিয়োগ করা হত। এরা ইজারাদার হিসাবে কোম্পানির কাছ থেকে অগ্রিম টাকা দাদন নিত এবং সেই টাকা মাহিন্দারদের অগ্রিম হিসাবে দিয়ে রায়মঙ্গলের বিভিন্ন প্রান্তে লবণ উৎপাদনের জন্য নিয়োগ করত।
সে যুগে রায়মঙ্গলের এই ভয়ঙ্কর এলাকায় কোন মানুষ যেতে চাইত না মাহিন্দার এর কাজ করার জন্য ইজারাদারদের কাছ থেকে স্বেচ্ছায় কেউ টাকা নিতে চাইত না। ইজারাদাররা জোর জবরদস্তি করে এদের টাকা নিতে বাধ্য করত। রায়মঙ্গল সল্ট এজেন্সি প্রশাসনগত ভাবে সে যুগে নদীয়া জেলার অন্তর্গত ছিল। তাই নদীয়ার জেলাশাসক বোর্ড অফ রেভিনিউ কে ২২ শে জানুয়ারি ১৭৮৬ খ্রীষ্টাব্দে লিখছেন: The Malangis throw it (money) into their (ryots) houses or lay it before their doors and a mere sight of the money renders them liable to be sent down to the Sundarbans, (১) গ্রামের প্রধান পাইককে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে এভাবে কোন কোন চাষিকে অগ্রিম টাকা দেওয়া হল এবং পাইক বাধ্য থাকবে ঐ সব লোক যাতে মরশুম শুরু হবার সঙ্গে সঙ্গে লবণ উৎপাদনের শ্রমিক হিসাবে কাজে যোগদান করে তা দেখার জন্য।
মাহিন্দাররা একবছরের জন্য টাকা অগ্রিম নিলে পরের বছরেও তারা যেতে বাধ্য হত। মালঙ্গীরা নানা রকমের হিসাবের কারসাজিতে এদেরকে এমনভাবে বেঁধে রাখত যে তারা আর কোন দিন অন্য জীবিকা গ্রহণ করতে পারত না। ১৭৯৪ খ্রীষ্টাব্দে মজুরি সম্পর্কে নদীয়া জেলার জজ ও ম্যাজিস্ট্রেট রিচার্ড রকি লিখেছেন- In the dessy khalaries at Balia, I have lately got the price of salt increases to 77 Rupees per 100 mds. Besides paying for all their of wood cutters boats etc. এই রেট মেদিনীপুরের মালঙ্গীদের তুলনায় ভালো।