শ্রী নিখিলনাথ রায়
অন্তরূপ ছিল। তিনি শীঘ্র শীঘ্র আপনার প্রাপ্য অর্থ আদায় করিয়া বাঙ্গলা হইতে বিহারে যাইবার ইচ্ছা করেন এবং আলিবন্দীর নিকট হইতে বিহার অধি- কার করিয়া আপনি তথায় স্বাধীন শাসনকর্তা, হইবার আশা করিয়া- ছিলেন। সেই জন্য তিনি উক্ত অর্থের জন্য অত্যন্ত পীড়াপীড়ি করিতে থাকেন। কিন্তু নন্দকুমার সেই সমস্ত জমির রাজস্ব তাঁহাকে যত্বর দিতে পারেন নাই। কারণ, জমিদারেরা তাঁহাকে সে অর্থ অত্যল্প কালের মধ্যে প্রদান করিতে সমর্থ হন নাই।
নন্দকুমারের নিকট সেই সমস্ত জমির অর্থ পাওনা হওয়ায়, মস্তফা খাঁ তাঁহার প্রতি যারপর নাই বিরক্ত হইয়া তাঁহাকে বন্দী করিয়া রায়রায়ান চায়েন রায়ের নিকট পাঠাইতে উদ্যত হন। নন্দকুমার এই সংবাদ পাইয়া কলিকাতায় পলায়ন করেন। কেহই তাঁহার পলায়নের কথা অবগত ছিল না। তাহার পর আলিবন্দীর সহিত মস্তফা খাঁর বিবাদ পরিপক্ক হইয়া উঠিলে, মস্তফা খাঁ প্রাণ পরিত্যাগ করিতে বাধ্য হন। এই সময়ে চায়েন রায়ও পরলোকগত হইয়াছিলেন।
ঐ সমস্ত ঘটনার পর নন্দকুমার আবার -মুর্শিদাবাদে আগমন করিয়া মুৎসুদ্দীগণের বিশেষ অনুরোধে সরকার হইতে পরগণা সাতসইকার রাজস্বসংগ্রহের ভার প্রাপ্ত হইলেন। তৎকালে তিনি হুগলীনিবাসী শেখ হাবাৎউল্লার নিকট হইতে দুই সহস্র টাকা কর্জ লন। সাতসইকায় কিছুদিন কার্য্য করার পর তিনি মুর্শিদাবাদে আসিয়া পুনরায় হিসাবাদি বুঝাইয়া দেন। তাহার পর তিনি হুগলীতে জীবিকানির্ব্বাহের জন্য গমন করেন। সেই সময়ে হাবাৎউল্লা তাহার প্রাপ্য অর্থের জন্য তাঁহাকে ৫ দিন আটক করিয়া রাখে।
তাহার পর তিনি শেখ রস্তম নামক জনৈক ব্যক্তির জামীনে মুক্তি লাভ করেন। শেখ -রস্তম কমল উদ্দীনের পিতা। এই কমল উদ্দীনই নন্দকুমারের বিরুদ্ধে অবশেষে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করে। তৎকালে তিনি এতদূর অর্থকষ্টে পতিত হইয়াছিলেন যে, হুগলী হইতে চন্দননগরে গমন করিয়া ২০০০ টাকা মূল্যের শাল ১২০০০ টাকায় বিক্রয় করিয়া, তাহা হইতে ১০০০২ টাকা দেনাশোধের জন্য প্রদান করেন; অবশিষ্ট ২০০ টাকা লইয়া পুনর্ব্বার মুর্শিদাবাদে আসিতে বাধ্য হন।
Sarakhon Report 



















