তৃতীয় অধ্যায়
১৮৪৬ খ্রীষ্টাব্দে বালিয়া লবণ চৌকির (তখনও বসিরহাট নামটি বহুল প্রচলিত হয়নি) ভারোগা ছিল শেখ কাসিমুদ্দিন। নেহালপুরে চোরাই লবণ উদ্ধারের ব্যাপারে বারাসত কোর্টে কেস হয় তাতে বাগুন্ডীর সল্ট সুপারের মোহরার ট্যাটরা নিবাসী মধুসুদন মিত্রের তিনমাসের জেল হয়। এ ব্যাপারে বারাসতের জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট রায় দেন লবণ দারোগারা সরাসরি আসামীকে বাড়ি থেকে ধরতে পারে না বা বাড়ির মধ্য থেকে লবণ উদ্ধার করা যাবে না।
থানার সাহায্য নিয়ে এটা করতে হবে। মধুসূদনের কেস আপিল করার আবেদন জানাচ্ছে বাগুন্ডীর লবণ চৌবিসমূহের সুপার H. L. Hamilton ২৮ শে ডিসেম্বর, ১৮৪৬। আপিলের আবেদনে সুগার মন্তব্য করছেন- ” A state of thing will arise in this district where almost all the land holders are by report directly or indirectly protecting manufacture or smuggling. (*)
বিভিন্ন জমিদার লবণ আইনকে অবহেলা করে কোম্পানির আয়ের পথে বাধা সৃষ্টি করছে। জমিদাররা অনেক ক্ষেত্রে বেআইনি কারবারের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করেছে। দেশীয় ব্যাপারী এবং ডিলাররা নানাধরনের অসাধু ব্যবসার সঙ্গে নিজেদেরকে যুক্ত করে ফেলেছে। নাপিত- খালিতে (বর্তমান সন্দেশখালি থানার কানমারি হাটখোলার নিকটে) কোম্পানির লবণ তৈরির একটা কেন্দ্র ছিল- এর সাজুনিয়া ব্রজমোহন সরকারের পুত্র শ্রীনাথ সরকারের কয়েক নৌকা লবণ হাসনাবাদের নিকটে ডাঁসা নদীতে ধরা পড়ে।
কৈফিয়ত হিসাবে বলা হল জোয়ারের জল ঢোকায় গোলা থেকে ঐ মাল সরকারী গোলায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বিনা অনুমতিতে (৩২) তদন্তে সবটাই মিথ্যা বলে প্রমাণিত হল- শ্রীনাথ সরকার পরবর্তীকালের ধুতুরদহ এলাকার বিখ্যাত জমিদার। এই অসাধু ব্যবসার সঙ্গে সরকারি কর্মচারীদের যোগাযোগ থাকত। কম বেতনের কর্মচারী সামান্য অর্থ পেত সরকারের কাছ থেকে। ইংরেজ কর্মচারীদের সঙ্গে দেশীয় কর্মচারীদের বেতনের ফারাক ছিল দুস্তর আর এসব দেশীয় কর্মচারীদের সামনে ছিল লোভের আকর্ষণ।