তৃতীয় অধ্যায়
এ সময়ে বাখরগঞ্জ ও বাগুন্ডীর লবণ চৌকিগুলিতে লবণ উৎপাদন কমছে এবং বিক্রয়ের পরিমাণ বাড়ছে। সুন্দরবনাঞ্চলের বিভিন্ন লবণ চৌকিতে লবণ উৎপাদন কম হবার কারণ হিসাবে বলা যেতে পারে এ সময়ে এই এলাকার ধান চাষ বাড়ার দিকে নতুন নতুন বনাঞ্চল উঠিত করে প্রজা বিলি করে জমি চাষের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।
১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দে বাখরগঞ্জ সল্ট সুপার এর অফিস বরিশাল থেকে এর অন্তর্গত এগারটি চৌকি পর্যবেক্ষণ করা হত। এই এলাকায় সে সময়ে লোকসংখ্যা ছিল ৯.৪৩৮২৪ আর গ্রামের সংখ্যা ছিল ১৩৯১। ১৮৫৬-৫৭ সালে এখানে লবণ বিক্রয় হচ্ছে ২০,৫৮৭৪ মণ ২১ সের (০০)। বিগত বছরগুলির তুলনায় লবণ বিক্রয় বাড়ছে তা লক্ষ করা যাচ্ছে। বাখরগঞ্জের চৌকিগুলি হল- নলচিতি, বাখরগঞ্জ, গৌরনদী, বাউফল, চরখালি গৌখালি, বুকিনগর (বরিশাল), ডোবিয়া, বঙ্গবেড়িয়া, পুটিয়া।
লবণ ইজারাদারদের সঙ্গে জমিদারদের বিরোধ লেগে থাকত জঙ্গলের গাছ কাটা নিয়ে। বন উঠিত হবার ফলে ইতিমধ্যে জ্বালানি কাঠের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বিনামূল্যে জঙ্গলের গাছ ইচ্ছামত কেটে জ্বালানি করা যাচ্ছে না। লবণ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত মালঙ্গীরা কম মজুরির জন্য লবণ উৎপাদন ছেড়ে-জমিদারদের নতুন উঠিত জমিতে চলে যাচ্ছে জমি পাবার লোভে।
সেই সঙ্গে কোম্পানি লবণের জন্য অগ্রিম দাদন দেওয়া বন্ধ করেছে কারণ সরকারের পক্ষে ইতিমধ্যে সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে-লিভারপুলের লবণ শিল্পের জন্য বাংলার উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। ১৮৭২ এর পর সরকারি উদ্যোগে লবণ উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হল।
এর অনেক আগে থেকে কোম্পানির বিভিন্ন আলোচনায় প্রস্তাব উঠেছিল কৃষি উৎপাদনে চাষিদের উৎসাহিত করা হোক। লবণ উৎপাদন কমানো হবে।
Sarakhon Report 



















