তৃতীয় অধ্যায়
১৯৩১ খ্রীষ্টাব্দে কার্তিক বসুর উদ্যোগে বসিরহাট মৈত্র বাগানে চিনির কল প্রতিষ্ঠিত হয়। এই উন্নত চিনি কলের জন্য মালিকদের পক্ষ থেকে চাষিদের আখ তৈরি করার জন্য উৎসাহিত করার ব্যবস্থা করা হয়। স্থানীয় বিভিন্ন এলাকার অবস্থাপন্ন চাষিদের অগ্রিম দাদন দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আখের অভাবে চিনি কলটি বন্ধ করে দিতে হয়।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পূর্বে থেকে বিদেশি চিনি বেশি বেশি করে আমাদের দেশে আমদানি হতে থাকে এবং ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে আধুনিক চিনি কলগুলির মাল বাজারে আসতে থাকায় দেশীয় চিনি প্রতিযোগিতায় পিছু হটতে থাকে।
ভূতিমধ্যে কৃষির প্রয়োজনে পরির তামি উদ্ধার করে কৃষিযোগ্য করা শুরু হয়। অন্যান্য বাণিজিক – কৃষির চাহিদা বাড়তে থাকে। জমিতে এসব ফসল ফলানোর প্রয়োজনে খেজুর গাছ কম বেশিি রঙের উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমতে শুরু করে। চাষিরা আখের চাইতে পাট চাষের আর্থিক বলাতের কথা বিবেচনা করে বেশি বেশি করে জমিতে পাট চাষ শুরু করে।
দেশীয় চিনি কারখানাগুলি বন্ধ হবার ফলে চাষিরা গুড় থেকে পাটালি করার দিকে মনোনিবেশ করে। এক্ষেত্রে চাকীর ভাদলির সুনাম সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে। কলকাতার বাজারে এর চাহিদা বাড়ে। টাকী- – রাজিপুর জালালপুর শাঁকচূড়া, রামেশ্বরপুর, বরুণহাট, আমলানি, মাখালগাছা অঞ্চলের বিস্তীর্ণ ■ এলাকা জুড়ে শীতের সময় চাষিরা গুড় থেকে পাটালি করত এবং তাদের কিছু অতিরিক্ত অর্থের এ সংস্থান ঘটত এই শিল্পের মধ্য দিয়ে।
জয়নগর মজিলপুর, বারুইপুর এলাকার খেজুরের নলেন গুড় ও খই মিশিয়ে মোয়া ধীরে ধীরে একটা শিল্প হিসাবে গড়ে ওঠে। এভাবে ‘জয়নগরের মোয়া’ কলকাতার বাজার দখল করে। জয়নগরের মোয়া এবং পাটালিকে কেন্দ্র করে অনেক মানুষ তাদের জীবিকা নির্বাহ করে আসছে এই এলাকায় তা আমরা লক্ষ করি।
Sarakhon Report 



















