০২:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
গুগল অস্ট্রেলিয়ার ক্রিস্টমাস আইল্যান্ডে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ডেটা সেন্টার প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা জাপানে উপকূলীয় ভূমির ক্ষয়জনিত কারণে সামুদ্রিক কচ্ছপের ডিম ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ বছর পরও যে জাহাজডুবি এখনও এক ভয়ংকর গল্প জাপানে বাড়ছে ভাল্লুক আতঙ্ক: নিরাপত্তা জোরদারে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগ সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ বইমেলায় ৩০০ শিশুর লেখক অভিষেক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫৩) শাহজালালসহ দেশের সব বিমানবন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি আল-ওথমান মসজিদের পুনঃস্থাপন কাজ শেষের পথে, রমজানের আগেই পুনরায় খোলা হবে ভুলভাবে উপস্থাপিত বক্তব্য নিয়ে ব্যাখ্যা দিলেন মির্জা ফখরুল দিল্লিতে হামলার ছক তৈরির অভিযোগে ভারতের দাবি প্রত্যাখ্যান করল ঢাকা

ইশকুল (পর্ব-৩০)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪
  • 39

আর্কাদি গাইদার

চতুর্থ পরিচ্ছেদ

তাড়াতাড়ি চাবির গোছা হাতে নিয়ে দরজার দিকে এগোলুম। পেছন থেকে মা সাবধান করে দিলেন:

‘বইয়ের বাক্সের বদলে যদি জ্যামের বোয়েমে হাত দিস, কিংবা আগের বারের মতো যদি সরটা খেয়ে ফেলিস তাহলে তোকে বিপ্লব কাকে বলে এমন বুঝিয়ে দেব যে জীবনে কখনও তা ভুলবি না!’

এরপর পরপর কয়েক দিন কাটল খালি বই পড়ে। মনে আছে, যে-দুখানা বই আমি পড়ব বলে বেছেছিলুম, তার মধ্যে প্রথম বইটার পাতা তিনেকের বেশি পড়তে পারি নি। না-ভেবেচিন্তে বাছা এই বইখানার নাম ছিল ‘দারিদ্র্যের দর্শন’। লেখাটা এমন যে পড়লে মাথা ধরে যায় অথচ মাথামুণ্ডু কিছুই বোঝা যায় না।

তবে অন্য বইটা ন্তেনিয়াক-ক্রাচিন্‌স্কির একটা গল্পের বই পড়ে বুঝতে পারলুম। বইটা একবার পড়ে শেষ করে ফের দ্বিতীয়বারও পড়ে ফেললুম।

এই গল্পগুলোয় সব কিছুই ছিল আমি যা জানতুম তার উল্টো। গল্পে যাদের বীর বলা হচ্ছিল তাদের পেছনে সব সময়ে পুলিশ লেগে ছিল, আর পুলিশ গোয়েন্দাদের সম্বন্ধে সহানুভূতির বদলে ঘেন্না আর রাগ জাগছিল। গল্পগুলো ছিল বিপ্লবীদের নিয়ে। বিপ্লবীদের গোপন সংগঠন আর ছাপাখানা ছিল। জমিদার, ব্যবসাদার আর ফৌজের সেনাপতিদের বিরুদ্ধে বিপ্লবীরা একটা বিদ্রোহ বাধাবার তোড়জোড় করছিলেন। আর পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে লড়ছিল, তাঁদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছিল।

ধরা পড়লে পর বিপ্লবীদের নিয়ে যাওয়া হত জেলখানায়, নয় তো তাঁদের দাঁড়াতে হত ফায়ারিং স্কোয়াডের গুলির মুখে। যাঁরা বে’চে থাকতেন তাঁরা অন্যের অসম্পূর্ণ কাজ চালিয়ে যেতেন।

আমাকে একেবারে আচ্ছন্ন করে ফেলল বইটা। কারণ, আগে কখনও আমি বিপ্লবীদের সম্বন্ধে কিছু পড়ি নি। ভীষণ দুঃখ হল এই ভেবে যে আমাদের সেই আবুজামাস জায়গাটা ছিল এমনই একটা অজ-পাড়াগাঁ শহর যে সেখানে কেউ কোনোদিন বিপ্লবীদের সম্বন্ধে কিছুই শোনে নি। আরুজামাসে সি’ধেল চোর ছিল- তুশকভদের বাড়ির চিলেকোঠায় ওদের সব ধোয়া কাপড়জামা সি’ধেল চোর একদিন

চুরি করে ফাঁক করে দিয়েছিল। বেদে ঘোড়াচোরও ছিল শহরে। এমন কি একটা জলজ্যান্ত ডাকাতও ছিল। তার নাম ছিল ভাল্কা সেলেস্কিন। সে আবগারি বিভাগের একজন লোককে খুন পর্যন্ত করেছিল। কিন্তু আজামাসে বিপ্লবী ছিল না একজনও।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

গুগল অস্ট্রেলিয়ার ক্রিস্টমাস আইল্যান্ডে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ডেটা সেন্টার প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা

ইশকুল (পর্ব-৩০)

০৮:০০:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪

আর্কাদি গাইদার

চতুর্থ পরিচ্ছেদ

তাড়াতাড়ি চাবির গোছা হাতে নিয়ে দরজার দিকে এগোলুম। পেছন থেকে মা সাবধান করে দিলেন:

‘বইয়ের বাক্সের বদলে যদি জ্যামের বোয়েমে হাত দিস, কিংবা আগের বারের মতো যদি সরটা খেয়ে ফেলিস তাহলে তোকে বিপ্লব কাকে বলে এমন বুঝিয়ে দেব যে জীবনে কখনও তা ভুলবি না!’

এরপর পরপর কয়েক দিন কাটল খালি বই পড়ে। মনে আছে, যে-দুখানা বই আমি পড়ব বলে বেছেছিলুম, তার মধ্যে প্রথম বইটার পাতা তিনেকের বেশি পড়তে পারি নি। না-ভেবেচিন্তে বাছা এই বইখানার নাম ছিল ‘দারিদ্র্যের দর্শন’। লেখাটা এমন যে পড়লে মাথা ধরে যায় অথচ মাথামুণ্ডু কিছুই বোঝা যায় না।

তবে অন্য বইটা ন্তেনিয়াক-ক্রাচিন্‌স্কির একটা গল্পের বই পড়ে বুঝতে পারলুম। বইটা একবার পড়ে শেষ করে ফের দ্বিতীয়বারও পড়ে ফেললুম।

এই গল্পগুলোয় সব কিছুই ছিল আমি যা জানতুম তার উল্টো। গল্পে যাদের বীর বলা হচ্ছিল তাদের পেছনে সব সময়ে পুলিশ লেগে ছিল, আর পুলিশ গোয়েন্দাদের সম্বন্ধে সহানুভূতির বদলে ঘেন্না আর রাগ জাগছিল। গল্পগুলো ছিল বিপ্লবীদের নিয়ে। বিপ্লবীদের গোপন সংগঠন আর ছাপাখানা ছিল। জমিদার, ব্যবসাদার আর ফৌজের সেনাপতিদের বিরুদ্ধে বিপ্লবীরা একটা বিদ্রোহ বাধাবার তোড়জোড় করছিলেন। আর পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে লড়ছিল, তাঁদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছিল।

ধরা পড়লে পর বিপ্লবীদের নিয়ে যাওয়া হত জেলখানায়, নয় তো তাঁদের দাঁড়াতে হত ফায়ারিং স্কোয়াডের গুলির মুখে। যাঁরা বে’চে থাকতেন তাঁরা অন্যের অসম্পূর্ণ কাজ চালিয়ে যেতেন।

আমাকে একেবারে আচ্ছন্ন করে ফেলল বইটা। কারণ, আগে কখনও আমি বিপ্লবীদের সম্বন্ধে কিছু পড়ি নি। ভীষণ দুঃখ হল এই ভেবে যে আমাদের সেই আবুজামাস জায়গাটা ছিল এমনই একটা অজ-পাড়াগাঁ শহর যে সেখানে কেউ কোনোদিন বিপ্লবীদের সম্বন্ধে কিছুই শোনে নি। আরুজামাসে সি’ধেল চোর ছিল- তুশকভদের বাড়ির চিলেকোঠায় ওদের সব ধোয়া কাপড়জামা সি’ধেল চোর একদিন

চুরি করে ফাঁক করে দিয়েছিল। বেদে ঘোড়াচোরও ছিল শহরে। এমন কি একটা জলজ্যান্ত ডাকাতও ছিল। তার নাম ছিল ভাল্কা সেলেস্কিন। সে আবগারি বিভাগের একজন লোককে খুন পর্যন্ত করেছিল। কিন্তু আজামাসে বিপ্লবী ছিল না একজনও।