১১:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশ: মৃত ৩৭, ক্ষতি ৪০০ কোটি টাকারও বেশি

ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি

ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) ৭ জুলাই পর্যন্ত হিমাচল প্রদেশের জন্য ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে। রাজ্যজুড়ে টানা বৃষ্টিতে জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যেই ৩৭ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের খবর মিলেছে। হিমাচল প্রদেশ রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, অন্তত ৪০০ কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে উদ্ধার অভিযান চলায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মান্ডি জেলা

সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মান্ডি জেলায়, বিশেষ করে থুনাগ মহকুমায়। এখানে রাস্তাগুলি চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে এবং বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে।

রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও রাজস্ব বিভাগের বিশেষ সচিব ডিসি রানা বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, “আমাদের সিস্টেমে এখন পর্যন্ত ৪০০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতির হিসাব নথিভুক্ত হয়েছে। তবে প্রকৃত ক্ষতি আরও অনেক বেশি হতে পারে। এখন আমাদের মূল লক্ষ্য উদ্ধার, ত্রাণ ও পুনর্গঠনের কাজ।”

মান্ডি জেলায় অন্তত ৪০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। ভারতীয় বিমানবাহিনী আকাশপথে খাবারের প্যাকেট সরবরাহ করছে। রানা বলেন, “মান্ডির একটি গ্রাম পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। সিনিয়র কর্মকর্তারা এলাকায় রয়েছেন এবং সড়ক বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ ও জলশক্তি বিভাগের প্রকৌশলীরা পুনর্গঠনের কাজ তদারকি করছেন।”

রাজ্যজুড়ে রাস্তা, বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের ক্ষতি

এখন পর্যন্ত বৃষ্টিজনিত কারণে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে সড়ক দুর্ঘটনায় আরও ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যজুড়ে ২৫০টিরও বেশি রাস্তা বন্ধ হয়ে আছে, ৫০০টির বেশি বিদ্যুৎ ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে গেছে এবং প্রায় ৭০০টি পানীয় জলের প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব

ডিসি রানা বলেন, “এ ধরনের ঘটনা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফল। হিমাচল এর প্রভাব থেকে বাদ যাচ্ছে না।”

শিমলায় জনজীবন বিপর্যস্ত

শিমলায় টানা বৃষ্টিতে স্বাভাবিক জীবন পুরোপুরি ব্যাহত হয়েছে। স্কুলগুলোতে জল ঢুকে পড়েছে, শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত। শিমলার শিক্ষার্থী তনুজা ঠাকুর সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, “অনবরত বৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের ক্লাসরুমে জল ঢুকে যাচ্ছে। জামা-কাপড় ও বই ভিজে যাচ্ছে। আমাদের শিক্ষকরা বলছেন বাড়িতেই থাকা ভালো।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের স্কুলের চারপাশে অনেক গাছ আছে। সবসময় মনে হয় গাছ ভেঙে পড়বে কি না। তবে আপাতত আমরা নিরাপদ।”

উদ্ধার ও ত্রাণ অভিযান

স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, হোমগার্ড, রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (NDRF)-এর সমন্বয়ে তৎপরভাবে উদ্ধার ও ত্রাণ অভিযান চলছে। কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং আগামী কয়েক দিনে আরও বৃষ্টির আশঙ্কায় পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশ: মৃত ৩৭, ক্ষতি ৪০০ কোটি টাকারও বেশি

০৮:১৫:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫

ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি

ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) ৭ জুলাই পর্যন্ত হিমাচল প্রদেশের জন্য ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে। রাজ্যজুড়ে টানা বৃষ্টিতে জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যেই ৩৭ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের খবর মিলেছে। হিমাচল প্রদেশ রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, অন্তত ৪০০ কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে উদ্ধার অভিযান চলায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মান্ডি জেলা

সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মান্ডি জেলায়, বিশেষ করে থুনাগ মহকুমায়। এখানে রাস্তাগুলি চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে এবং বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে।

রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও রাজস্ব বিভাগের বিশেষ সচিব ডিসি রানা বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, “আমাদের সিস্টেমে এখন পর্যন্ত ৪০০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতির হিসাব নথিভুক্ত হয়েছে। তবে প্রকৃত ক্ষতি আরও অনেক বেশি হতে পারে। এখন আমাদের মূল লক্ষ্য উদ্ধার, ত্রাণ ও পুনর্গঠনের কাজ।”

মান্ডি জেলায় অন্তত ৪০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। ভারতীয় বিমানবাহিনী আকাশপথে খাবারের প্যাকেট সরবরাহ করছে। রানা বলেন, “মান্ডির একটি গ্রাম পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। সিনিয়র কর্মকর্তারা এলাকায় রয়েছেন এবং সড়ক বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ ও জলশক্তি বিভাগের প্রকৌশলীরা পুনর্গঠনের কাজ তদারকি করছেন।”

রাজ্যজুড়ে রাস্তা, বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের ক্ষতি

এখন পর্যন্ত বৃষ্টিজনিত কারণে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে সড়ক দুর্ঘটনায় আরও ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যজুড়ে ২৫০টিরও বেশি রাস্তা বন্ধ হয়ে আছে, ৫০০টির বেশি বিদ্যুৎ ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে গেছে এবং প্রায় ৭০০টি পানীয় জলের প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব

ডিসি রানা বলেন, “এ ধরনের ঘটনা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফল। হিমাচল এর প্রভাব থেকে বাদ যাচ্ছে না।”

শিমলায় জনজীবন বিপর্যস্ত

শিমলায় টানা বৃষ্টিতে স্বাভাবিক জীবন পুরোপুরি ব্যাহত হয়েছে। স্কুলগুলোতে জল ঢুকে পড়েছে, শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত। শিমলার শিক্ষার্থী তনুজা ঠাকুর সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, “অনবরত বৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের ক্লাসরুমে জল ঢুকে যাচ্ছে। জামা-কাপড় ও বই ভিজে যাচ্ছে। আমাদের শিক্ষকরা বলছেন বাড়িতেই থাকা ভালো।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের স্কুলের চারপাশে অনেক গাছ আছে। সবসময় মনে হয় গাছ ভেঙে পড়বে কি না। তবে আপাতত আমরা নিরাপদ।”

উদ্ধার ও ত্রাণ অভিযান

স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, হোমগার্ড, রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (NDRF)-এর সমন্বয়ে তৎপরভাবে উদ্ধার ও ত্রাণ অভিযান চলছে। কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং আগামী কয়েক দিনে আরও বৃষ্টির আশঙ্কায় পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।