পুনরায় সংক্রমণের উদ্বেগ
২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে কোভিড‑১৯ পরীক্ষা ও শনাক্ত সংখ্যার রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৭ মার্চ থেকে ২ জুলাইয়ের মধ্যে মোট ৫৮৮টি সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়া গেছে; গত ২৪ ঘণ্টায় উদ্বেগজনকভাবে ২৭ জন শনাক্ত ও ১ জনের মৃত্যু হয়েছে (who.int)। মহামারীর “রিভার্স” সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে কিছু স্বাস্থ্যকর্মীরা নতুন সাব-ভেরিয়েন্ট নিয়ে সতর্কতা জারির আহ্বান জানিয়েছেন, আর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর—DGHS—১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ করেছে।
ওয়ার্ড ও আইসিইউ সংকট
জাতীয় তথ্য অনুযায়ী বর্তমান হাসপাতালে শুধুমাত্র জনস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে রোগীর জন্য জেনারেল বেড এবং আইসিইউ খালি নেই, বরং অনেক বড় জেনারেল হাসপাতালেও আইসিইউতে শূন্যস্থান নেই। দেশে বর্তমানে মাত্র ৫৮২টি আইসিইউ বেড ও ৬২০টি ভেন্টিলেটর রয়েছে। অক্সিজেন চাহিদা প্রায় দশগুণ বেড়ে গেছে, অথচ অক্সিজেন সরবরাহ খুবই অপর্যাপ্ত—এতে বেশিরভাগ বেসরকারি হাসপাতাল ও আইসোলেশন কেন্দ্র অক্সিজেন সংকটে রয়েছে, এমনকি অ্যাম্বুলেন্সে রোগী মারা যাচ্ছেন বলে জানা যায়।
প্রতিকার না: ভ্যাকসিন এবং অক্সিজেন
বিভিন্ন সোর্স অনুযায়ী, সরকার আয়োজিত ভ্যাকসিন কর্মসূচিতে টিকা পৌঁছে যাচ্ছে খুব ধীরগতিতে। কোভ্যাক্স ও ইউএস-সহ কয়েকটি উৎস থেকে প্রথম ডোজ লাখ লাখ প্রয়োজনীয় জনগণ সব নাও পেতে পারেন। আরো বড় উদ্বেগ হচ্ছে, সরকার কেন দ্রুত গতিতে ভ্যাকসিন আনে না বা অক্সিজেন উৎপাদন বাড়ানো হয় না, এ নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদন সতর্ক করেছে। মূল সমস্যা হিসেবে উঠে এসেছে:
স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ অতিরিক্ত কম – বাজেটে বরাদ্দ মাত্র ১ % এবং স্বাস্থ্যব্যয়ের প্রভাবশালী অংশই ঔষধ ও সেবা খরচ।
সরকারের দায়িত্বহীনতার প্রভাব
সরকারের কর্মকৌশল অনেক সময় প্রতিক্রিয়াশীল—অগ্নিকাণ্ড দমনে নয়, বিপর্যয় আসার পর ব্যস্ততার মতো—যেমন করোনা টিকা কর্মসূচির শুরু ও অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপন অনেক বিলম্বে।
প্রশাসনিক বিভাগগুলোর মধ্যেও সমন্বয়ের অভাব—যেমন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সিএমএসডি—চিকিৎসা সরবরাহ ও পরিকল্পনায় বিশৃঙ্খলা আছে।
সম্প্রতি অনেক রাষ্ট্রীয় হাসপাতালে থাকা অক্সিজেন প্ল্যান্ট কাজ করছে না বা পরিচালনায় দক্ষ জনবল নেই—এতে বিনা পরিকল্পনায় রোগী মারা যায় এবং প্রয়োজনীয় রোগীরা সাহায্য না পেয়ে যায়।
বাংলাদেশে কোভিড‑১৯ এর তৃতীয় ঢেউ ফেরার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, সংক্রমণের হার অব্যাহতভাবে বাড়ছে এবং আইসিইউ‑অক্সিজেন সংকট গভীর হচ্ছে। অথচ সরকার ভ্যাকসিন ও অক্সিজেন সরবরাহ নিয়ে দ্রুত ও পরিকল্পিত পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ অপ্রতুল, অ-সমন্বিত প্রশাসনিক কাঠামো জন্ম দিয়েছে আন্তঃদফতরীয় বিশৃঙ্খলা। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে প্রয়োজনে জীবন বাঁচাতে সক্ষম হবে না, এবং ভবিষ্যতে আরও বিপর্যয় অপেক্ষা করছে।