১১:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-১৯৭)

  • Sarakhon Report
  • ১১:০০:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪
  • 66
শ্রী নিখিলনাথ রায়
নন্দকুমারের প্রতি এইরূপ ভার অর্পিত হইল যে, তিনি রাজাদিগকে কিস্তি কিস্তি আহ্বান করিয়া কোম্পানীর রাজস্ব আদায় করিবেন। পলাশীর যুদ্ধের পর হইতে মুর্শিদাবাদের নবাবদরবারে একজন করিয়া রেসিডেন্ট রাখা স্থির হয়। ১৭৫৮ খৃঃ ওয়ারেন হেষ্টিংস উক্ত রেসিডেন্টপদে নিযুক্ত ছিলেন। বর্দ্ধমান প্রভৃতির রাজস্ব আদায় লইয়া নন্দকুমারের সহিত তাঁহার মনোবিবাদ উপস্থিত হয়। ক্রমে সেই মনো- বিবাদ শত্রুতায় পরিণত হওয়ায়, হেষ্টিংস সেই ব্রাহ্মণকে বৃদ্ধবয়সে ফাঁসীকাঠে লম্বমান করাইয়া নিজ মহত্ত্বের পরিচয় দিয়াছিলেন! আমরা ক্রমে তাহা দেখাইতে চেষ্টা করিতেছি।
সিংহাসনে আরোহণ করার পর হইতেই মীর জাফর অত্যন্ত অর্থা- ভাব অনুভব করেন। সেইজন্য তিনি রায়দুর্লভকে অত্যন্ত পীড়াপীড়ি করিতেন এবং সময়ে সময়ে শেঠদিগের নিকট হইতে অর্থ লইয়া তাঁহা- দিগকেও যৎপরোনাস্তি উৎপীড়িত করিতে থাকেন। ক্রমে ক্রমে রায়দুর্লভের সহিত নবাবের বিবাদ গুরুতর হইয়া উঠে। সেই সময়ে মীরণ ঢাকার শাসনকর্তা ছিলেন, তিনি রাজা রাজবল্লভকে আপনার দেওয়ান নিযুক্ত করেন, ও রায়দুর্লভকে ঢাকাবিভাগে নিকাস দিতে বলেন।
রায়দুর্লভ চতুদ্দিক হইতে উত্ত্যক্ত হইয়া কলিকাতায় আসিতে কৃতসঙ্কম হন। মীরণ তাঁহাকে বাধা দিয়া বলেন যে, যতদিন নবাব- সৈন্যগণের বেতন দেওয়া না হয়, ততদিন তিনি কলিকাতায় যাইতে পারিবেন না। নন্দকুমার বরাবরই রায়দুর্লভের পক্ষে ছিলেন। তিনি তাঁহাকে মুর্শিদাবাদ হইতে কাশীমবাজারে লইয়া আসেন এবং পরে কলিকাতার ইংরেজদিগের আশ্রয়ে পাঠাইয়া দেন; নিজেও হুগলী আসিয়া স্বীয় কার্য্য সম্পন্ন করিতে থাকেন। রায়দুর্লভ কলিকাতায় গমন করিলে, নবাব তাঁহার প্রতি ইংরেজ- দিগের বিদ্বেষ জন্মাইবার জন্য অশেষবিধ চেষ্টা করেন। এই সময়ে একটি ব্যাপার উপস্থিত হয়।
নবাব একদিন মসজিদে যাইতেছিলেন, সেই সময়ে খোজা হাদী নামে একজন কর্মচারীর কতকগুলি লোক নবাবের পথরোধ করে। নবাব তাহাদের হস্ত হইতে নিষ্কৃতি পাইয়া, এইরূপ প্রকাশ করেন যে, রায়দুর্লভই নবাবকে হত্যা করিবার জন্য খোজা হাদীকে নিযুক্ত করিয়াছিলেন এবং তাহা প্রমাণ করিবার জন্য একখানি পত্রও প্রকাশ করেন। কিন্তু সে পত্র জাল বলিয়া অনুমিত হয়।
জনপ্রিয় সংবাদ

প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার গানের জগতে ফিরে আসা: ‘লাস্ট ক্রিসমাস’ ডেসি ভার্সন নিয়ে নেটিজেনদের কটাক্ষ

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-১৯৭)

১১:০০:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪
শ্রী নিখিলনাথ রায়
নন্দকুমারের প্রতি এইরূপ ভার অর্পিত হইল যে, তিনি রাজাদিগকে কিস্তি কিস্তি আহ্বান করিয়া কোম্পানীর রাজস্ব আদায় করিবেন। পলাশীর যুদ্ধের পর হইতে মুর্শিদাবাদের নবাবদরবারে একজন করিয়া রেসিডেন্ট রাখা স্থির হয়। ১৭৫৮ খৃঃ ওয়ারেন হেষ্টিংস উক্ত রেসিডেন্টপদে নিযুক্ত ছিলেন। বর্দ্ধমান প্রভৃতির রাজস্ব আদায় লইয়া নন্দকুমারের সহিত তাঁহার মনোবিবাদ উপস্থিত হয়। ক্রমে সেই মনো- বিবাদ শত্রুতায় পরিণত হওয়ায়, হেষ্টিংস সেই ব্রাহ্মণকে বৃদ্ধবয়সে ফাঁসীকাঠে লম্বমান করাইয়া নিজ মহত্ত্বের পরিচয় দিয়াছিলেন! আমরা ক্রমে তাহা দেখাইতে চেষ্টা করিতেছি।
সিংহাসনে আরোহণ করার পর হইতেই মীর জাফর অত্যন্ত অর্থা- ভাব অনুভব করেন। সেইজন্য তিনি রায়দুর্লভকে অত্যন্ত পীড়াপীড়ি করিতেন এবং সময়ে সময়ে শেঠদিগের নিকট হইতে অর্থ লইয়া তাঁহা- দিগকেও যৎপরোনাস্তি উৎপীড়িত করিতে থাকেন। ক্রমে ক্রমে রায়দুর্লভের সহিত নবাবের বিবাদ গুরুতর হইয়া উঠে। সেই সময়ে মীরণ ঢাকার শাসনকর্তা ছিলেন, তিনি রাজা রাজবল্লভকে আপনার দেওয়ান নিযুক্ত করেন, ও রায়দুর্লভকে ঢাকাবিভাগে নিকাস দিতে বলেন।
রায়দুর্লভ চতুদ্দিক হইতে উত্ত্যক্ত হইয়া কলিকাতায় আসিতে কৃতসঙ্কম হন। মীরণ তাঁহাকে বাধা দিয়া বলেন যে, যতদিন নবাব- সৈন্যগণের বেতন দেওয়া না হয়, ততদিন তিনি কলিকাতায় যাইতে পারিবেন না। নন্দকুমার বরাবরই রায়দুর্লভের পক্ষে ছিলেন। তিনি তাঁহাকে মুর্শিদাবাদ হইতে কাশীমবাজারে লইয়া আসেন এবং পরে কলিকাতার ইংরেজদিগের আশ্রয়ে পাঠাইয়া দেন; নিজেও হুগলী আসিয়া স্বীয় কার্য্য সম্পন্ন করিতে থাকেন। রায়দুর্লভ কলিকাতায় গমন করিলে, নবাব তাঁহার প্রতি ইংরেজ- দিগের বিদ্বেষ জন্মাইবার জন্য অশেষবিধ চেষ্টা করেন। এই সময়ে একটি ব্যাপার উপস্থিত হয়।
নবাব একদিন মসজিদে যাইতেছিলেন, সেই সময়ে খোজা হাদী নামে একজন কর্মচারীর কতকগুলি লোক নবাবের পথরোধ করে। নবাব তাহাদের হস্ত হইতে নিষ্কৃতি পাইয়া, এইরূপ প্রকাশ করেন যে, রায়দুর্লভই নবাবকে হত্যা করিবার জন্য খোজা হাদীকে নিযুক্ত করিয়াছিলেন এবং তাহা প্রমাণ করিবার জন্য একখানি পত্রও প্রকাশ করেন। কিন্তু সে পত্র জাল বলিয়া অনুমিত হয়।