০৮:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল আবুল খায়ের গ্রুপ “ওরা করলে, আমরা প্রস্তুত”: পাকিস্তানের পারমাণবিক পরীক্ষা ইস্যুতে রাজনাথ সিংয়ের হুঁশিয়ারি বেঙ্গালুরুর জেলে আইএস জঙ্গি ও সিরিয়াল ধর্ষকের মোবাইল ব্যবহার ফাঁস, তদন্তে নেমেছে কর্ণাটক সরকার পাকিস্তানে সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের অভূতপূর্ব পদোন্নতি — এখন দেশের প্রথম ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস’ বর্তমানের সব জাতীয় সংকটই সরকারের সাজানো নাটক: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের সঙ্গে টাকা ও ট্যারিফ বিরোধে আন্তর্জাতিক সালিশিতে আদানি পাওয়ার” ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে আধুনিক প্রশিক্ষণের ওপর জোর নতুন বেতন কমিশন গঠন করবে পরবর্তী সরকার: সালেহউদ্দিন আহমেদ নারায়ণগঞ্জের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর পাঁচ মামলায় জামিন প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবিতে সহানুভূতির আহ্বান জানালেন জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পারওয়ার

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-৮১)

  • Sarakhon Report
  • ১২:০০:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪
  • 63
শশাঙ্ক মণ্ডল

কৃষি ও কৃষক

চতুর্থ অধ্যায়

সুন্দরবনে বর্ষা শুরু হত একটু আগে। উত্তরের বিভিন্ন জেলার অসংখ্য কুটির শিল্পী ইংরেজের শিল্প বাণিজ্যনীতির ফলে পুরনো পেশা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছিল, এসব উদ্বৃত্ত লোকেদের সুন্দরবনের জমি সহজে আকৃষ্ট করেছিল। ১৮৬০ থেকে ১৯০৫-এর মধ্যে বাখরগঞ্জ জেলার ৫২৬ বর্গ মাইল বনভূমিকে সঙ্কুচিত করে ১৮৬ বর্গ মাইলে পরিণত করা হলো যার ফলে এ সময়ে এই জেলায় অতিরিক্ত চাষযোগ্য জমি বেড়ে গেলে ২৩.১ শতাংশ (৩) সরকার দ্রুত বন থেকে চাষযোগ্য জমি উদ্ধার করার প্রয়োজনে বড় বড় ধনীব্যক্তিদের জমিদারি দিতে লাগলেন কোথাও ছোট মালিকদের নিয়োগ করা হলেও ভূমি রাজস্বের শর্ত ছিল খুবই কঠোর। এই সময়ের মধ্যে ২৪ পরগনার সুন্দরবনাঞ্চল থেকে উদ্ধার করে জমিকে চাষযোগ্য করার জন্য যে সব জমিদারি দেওয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাগর আইল্যান্ড সোসাইটি, পোর্ট ক্যানিং ল্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি, গোসাবা হ্যামিলটন স্টেট প্রভৃতি।

১ম মহাযুদ্ধ পরবর্তীকালে সুন্দরবনের গ্রামাঞ্চলে লক্ষ্য করা যাচ্ছিল মধ্যসত্ত্বভোগীদের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে আর সেই সঙ্গে জমিহারা খেতমজুরের সংখ্যা বাড়ছে, এ সময়ে খুলনা জেলায় শতকরা ১১ জন মানুষের বাস্তুজমি থাকলেও চাষের কোন জমি নেই; এর পাশাপাশি ২৪ পরগনা জেলার কতকগুলি থানাতে লক্ষ করা গেল, ক্ষেতমজুরদের সংখ্যা ৮-৯ শতাংশে পৌঁছে গেছে। খেতমজুরদের উপস্থিতি কৃষির ক্ষেত্রে ১৮৭০ খ্রীষ্টাব্দের দিকে সর্বপ্রথম সরকারি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে; তার আগে অবশ্য সরকারি নথিপত্রে উল্লেখিত হচ্ছে না। উনিশ শতকের শেষের দিকে প্রতি বছর গোরুর মড়ক লেগেই থাকত তার ফলে চাষিরা গোরু হারালে ঋণ জালে জর্জরিত থাকার জন্য জমি চাষ করতে পারত না, বাধ্য হত জমি ছেড়ে দিতে, গোরুর দাম এ সময়ে প্রচণ্ডভাবে বেড়ে গিয়েছিল।

১৮৬৯-৭০ এ গবাদি পশুর মৃত্যুর হার।

২৪ পরগনা জেলা ১৭.৬%

হুগলীজেলা ২৮.৫%

যশোর ২২.৪%

১৮৫০-৭০ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে গোরুর দামের ঊর্দ্ধগতি লক্ষ করা যাচ্ছিল। ২৪ পরগনা জেলায় ৮৭.৫% থেকে ১৩০% পর্যন্ত বেড়েছে। নদীয়া জেলায় ১০০% থেকে ১৫০% পর্যন্ত বেড়েছে। গোরু কিনতে না পারার ফলে চাষির খেতমজুর হওয়া ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা ছিল না। এজন্যই বহুলপরিচিত এই প্রবাদটির জন্ম-অভাগার গোরু মরে ভাগ্যবানের বউ মরে’।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল আবুল খায়ের গ্রুপ

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-৮১)

১২:০০:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪
শশাঙ্ক মণ্ডল

কৃষি ও কৃষক

চতুর্থ অধ্যায়

সুন্দরবনে বর্ষা শুরু হত একটু আগে। উত্তরের বিভিন্ন জেলার অসংখ্য কুটির শিল্পী ইংরেজের শিল্প বাণিজ্যনীতির ফলে পুরনো পেশা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছিল, এসব উদ্বৃত্ত লোকেদের সুন্দরবনের জমি সহজে আকৃষ্ট করেছিল। ১৮৬০ থেকে ১৯০৫-এর মধ্যে বাখরগঞ্জ জেলার ৫২৬ বর্গ মাইল বনভূমিকে সঙ্কুচিত করে ১৮৬ বর্গ মাইলে পরিণত করা হলো যার ফলে এ সময়ে এই জেলায় অতিরিক্ত চাষযোগ্য জমি বেড়ে গেলে ২৩.১ শতাংশ (৩) সরকার দ্রুত বন থেকে চাষযোগ্য জমি উদ্ধার করার প্রয়োজনে বড় বড় ধনীব্যক্তিদের জমিদারি দিতে লাগলেন কোথাও ছোট মালিকদের নিয়োগ করা হলেও ভূমি রাজস্বের শর্ত ছিল খুবই কঠোর। এই সময়ের মধ্যে ২৪ পরগনার সুন্দরবনাঞ্চল থেকে উদ্ধার করে জমিকে চাষযোগ্য করার জন্য যে সব জমিদারি দেওয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাগর আইল্যান্ড সোসাইটি, পোর্ট ক্যানিং ল্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি, গোসাবা হ্যামিলটন স্টেট প্রভৃতি।

১ম মহাযুদ্ধ পরবর্তীকালে সুন্দরবনের গ্রামাঞ্চলে লক্ষ্য করা যাচ্ছিল মধ্যসত্ত্বভোগীদের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে আর সেই সঙ্গে জমিহারা খেতমজুরের সংখ্যা বাড়ছে, এ সময়ে খুলনা জেলায় শতকরা ১১ জন মানুষের বাস্তুজমি থাকলেও চাষের কোন জমি নেই; এর পাশাপাশি ২৪ পরগনা জেলার কতকগুলি থানাতে লক্ষ করা গেল, ক্ষেতমজুরদের সংখ্যা ৮-৯ শতাংশে পৌঁছে গেছে। খেতমজুরদের উপস্থিতি কৃষির ক্ষেত্রে ১৮৭০ খ্রীষ্টাব্দের দিকে সর্বপ্রথম সরকারি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে; তার আগে অবশ্য সরকারি নথিপত্রে উল্লেখিত হচ্ছে না। উনিশ শতকের শেষের দিকে প্রতি বছর গোরুর মড়ক লেগেই থাকত তার ফলে চাষিরা গোরু হারালে ঋণ জালে জর্জরিত থাকার জন্য জমি চাষ করতে পারত না, বাধ্য হত জমি ছেড়ে দিতে, গোরুর দাম এ সময়ে প্রচণ্ডভাবে বেড়ে গিয়েছিল।

১৮৬৯-৭০ এ গবাদি পশুর মৃত্যুর হার।

২৪ পরগনা জেলা ১৭.৬%

হুগলীজেলা ২৮.৫%

যশোর ২২.৪%

১৮৫০-৭০ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে গোরুর দামের ঊর্দ্ধগতি লক্ষ করা যাচ্ছিল। ২৪ পরগনা জেলায় ৮৭.৫% থেকে ১৩০% পর্যন্ত বেড়েছে। নদীয়া জেলায় ১০০% থেকে ১৫০% পর্যন্ত বেড়েছে। গোরু কিনতে না পারার ফলে চাষির খেতমজুর হওয়া ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা ছিল না। এজন্যই বহুলপরিচিত এই প্রবাদটির জন্ম-অভাগার গোরু মরে ভাগ্যবানের বউ মরে’।