০৫:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
খরচ ও নিয়ন্ত্রণের চাপে ছোট ও দক্ষ এআই মডেলের দিকে ঝুঁকছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো শীতকালীন হামলা জোরদার হওয়ায় রাশিয়ার ভেতরে ড্রোন অভিযানে প্রস্তুতির ইঙ্গিত ইউক্রেনের চীনের পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট খাতে আইপিও সহজ করল বেইজিং, স্পেস প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রকে টপকানোর বার্তা নতুন রেকর্ডে রুপা রাশিয়ার নতুন অর্থায়নে তুরস্কের পারমাণবিক স্বপ্নে গতি, আক্কুইউ প্রকল্পে এল ৯ বিলিয়ন ডলার মার্কিন আদালতের নির্দেশ মানার আহ্বান ভেনেজুয়েলানদের, এল সালভাদরের কারাগার থেকে ফেরত বন্দিদের আইনি লড়াই নাইজেরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় সহযোগিতা, একক মার্কিন সামরিক হুমকি এড়াল আবুজা চীনের নিষেধাজ্ঞার কড়া বার্তা, তাইওয়ান অস্ত্র বিক্রিতে মার্কিন প্রতিরক্ষা সংস্থার ওপর চাপ রাশিয়ার ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কেঁপে উঠল কিয়েভ, সক্রিয় আকাশ প্রতিরক্ষা ট্রাম্পের সঙ্গে রোববার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে জেলেনস্কি, ভূমি ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে চূড়ান্ত সমঝোতার ইঙ্গিত

টলস্টয়ের স্মৃতি (পর্ব- ১৭)

  • Sarakhon Report
  • ০৩:৫০:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • 79

ম্যাকসিম গোর্কী

আটাশ

“মনে পড়ে না। তবে আমি যে বুঝতে পেরেছিলাম, তেমনটিও মনে হয় না।”

“কিন্তু, ব্যাপারটা তো অত্যন্ত স্পষ্ট! মেয়েটা যে তোমাকে পেতে চেয়েছিল, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।”

“কিন্তু তখন আমার জীবনের ওটাই উদ্দেশ্য ছিল না।”

“তোমার জীবনের যাই উদ্দেশ্য থাক না কেন, ব্যাপারটা কিন্তু একই। বেশ বোঝা যাচ্ছে যে মেয়েদের বিষয়ে তুমি খুব পটু ছিলে না। অন্য যে কেউ ওই অবস্থায় পড়লে অনেক কিছুই ক’রে ফেলতো,

এমন কি জমিদার পর্যন্ত হ’য়ে উঠতো, তারপর জীবন শেষ করতো মাতাল দম্পতীর একজন হয়ে।”

একটুক্ষণ নীরব থেকে পরে:

“সত্যি, তুমি অদ্ভুত-রাগ কোরো যেন-ভারী অদ্ভুত। আর সব চেয়ে আশ্চর্য লাগে এই যে, তুমি ঘৃণায় বিষিয়ে না উঠে, আজো ভালো মানুষটিই রয়ে গেছ।….. হ্যাঁ, তুমি ঘৃণায় বিষিয়ে উঠতে পারতে।…….. কিন্তু তোমার শক্তি আছে। সেই ভালো।”

আবার খনিকক্ষণ নীরব থেকে তিনি চিন্তাজড়িত সুরে বললেন: “তোমার মন আমি ঠিক বুঝি না-অত্যন্ত জটিল তোমার মন। কিন্তু তোমার হৃদয়টা বোঝা যায়… হ্যাঁ, সত্যই বোঝা যায়।”

এই প্রসংগে উল্লেখযোগ্য:

আমি যখন কাজানে ছিলাম, তখন আমি জেনারেল কর্ণেটের স্ত্রীর কাছে চাকরি নিই-দারোয়ান ও মালীর চাকরি। মৃত জেনারেলের বিধবা পত্নী; ফরাসী দেশের মেয়ে; বয়স অল্প; মাংসল দেহ; কিশোরী মেয়ের মতো ছোটো ছ’টি পা। চোখ দু’টি অদ্ভুত রকমের সুন্দর; চঞ্চল, আর সর্বদা লোভীর মতো সতর্ক। বিবাহের পূর্বে মেয়েটি, আমার মনে হয়, বাড়ির ঝি, কিম্বা রাঁধুনী ছিল।

কিম্বা সম্ভবত গণিকা থাকতে পারে। সে প্রতিদিন শেষরাত্রেই মদ খেয়ে মাতাল হয়ে উঠত। তারপর কেবল একটা সেমিজ পরে গাউন গায়ে জড়িয়ে, পায়ে লাল মরোক্কা চামড়ার কমলা-রঙের একটা তাতারী চটি লাগিয়ে এবং মাথার ঘন চুলগুলাকে কেশরের মতো ফাঁপিয়ে ফুলিয়ে উঠানে কিম্বা বাগানে এসে দাঁড়াতো। স্রস্ত চুলগুলো তার লাল গাল আর কাঁধের ওপর এসে পড়তো ঝুলে। হুবহু একটি যুবতী ডাইনী।

মাঝে মাঝে সে বাগান সম্বন্ধে আলাপ করত। কখনো বা ফরাসী গান গুনগুন ক’রে গাইতো। আর আমার কাজ করা লক্ষ্য করতো। একটু ক্ষণ বাদে বাদে রান্নাঘরের জানলায় গিয়ে হাঁকতো, “পলিন, আমাকে কিছু দিয়ে যা।”

 

জনপ্রিয় সংবাদ

খরচ ও নিয়ন্ত্রণের চাপে ছোট ও দক্ষ এআই মডেলের দিকে ঝুঁকছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো

টলস্টয়ের স্মৃতি (পর্ব- ১৭)

০৩:৫০:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

ম্যাকসিম গোর্কী

আটাশ

“মনে পড়ে না। তবে আমি যে বুঝতে পেরেছিলাম, তেমনটিও মনে হয় না।”

“কিন্তু, ব্যাপারটা তো অত্যন্ত স্পষ্ট! মেয়েটা যে তোমাকে পেতে চেয়েছিল, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।”

“কিন্তু তখন আমার জীবনের ওটাই উদ্দেশ্য ছিল না।”

“তোমার জীবনের যাই উদ্দেশ্য থাক না কেন, ব্যাপারটা কিন্তু একই। বেশ বোঝা যাচ্ছে যে মেয়েদের বিষয়ে তুমি খুব পটু ছিলে না। অন্য যে কেউ ওই অবস্থায় পড়লে অনেক কিছুই ক’রে ফেলতো,

এমন কি জমিদার পর্যন্ত হ’য়ে উঠতো, তারপর জীবন শেষ করতো মাতাল দম্পতীর একজন হয়ে।”

একটুক্ষণ নীরব থেকে পরে:

“সত্যি, তুমি অদ্ভুত-রাগ কোরো যেন-ভারী অদ্ভুত। আর সব চেয়ে আশ্চর্য লাগে এই যে, তুমি ঘৃণায় বিষিয়ে না উঠে, আজো ভালো মানুষটিই রয়ে গেছ।….. হ্যাঁ, তুমি ঘৃণায় বিষিয়ে উঠতে পারতে।…….. কিন্তু তোমার শক্তি আছে। সেই ভালো।”

আবার খনিকক্ষণ নীরব থেকে তিনি চিন্তাজড়িত সুরে বললেন: “তোমার মন আমি ঠিক বুঝি না-অত্যন্ত জটিল তোমার মন। কিন্তু তোমার হৃদয়টা বোঝা যায়… হ্যাঁ, সত্যই বোঝা যায়।”

এই প্রসংগে উল্লেখযোগ্য:

আমি যখন কাজানে ছিলাম, তখন আমি জেনারেল কর্ণেটের স্ত্রীর কাছে চাকরি নিই-দারোয়ান ও মালীর চাকরি। মৃত জেনারেলের বিধবা পত্নী; ফরাসী দেশের মেয়ে; বয়স অল্প; মাংসল দেহ; কিশোরী মেয়ের মতো ছোটো ছ’টি পা। চোখ দু’টি অদ্ভুত রকমের সুন্দর; চঞ্চল, আর সর্বদা লোভীর মতো সতর্ক। বিবাহের পূর্বে মেয়েটি, আমার মনে হয়, বাড়ির ঝি, কিম্বা রাঁধুনী ছিল।

কিম্বা সম্ভবত গণিকা থাকতে পারে। সে প্রতিদিন শেষরাত্রেই মদ খেয়ে মাতাল হয়ে উঠত। তারপর কেবল একটা সেমিজ পরে গাউন গায়ে জড়িয়ে, পায়ে লাল মরোক্কা চামড়ার কমলা-রঙের একটা তাতারী চটি লাগিয়ে এবং মাথার ঘন চুলগুলাকে কেশরের মতো ফাঁপিয়ে ফুলিয়ে উঠানে কিম্বা বাগানে এসে দাঁড়াতো। স্রস্ত চুলগুলো তার লাল গাল আর কাঁধের ওপর এসে পড়তো ঝুলে। হুবহু একটি যুবতী ডাইনী।

মাঝে মাঝে সে বাগান সম্বন্ধে আলাপ করত। কখনো বা ফরাসী গান গুনগুন ক’রে গাইতো। আর আমার কাজ করা লক্ষ্য করতো। একটু ক্ষণ বাদে বাদে রান্নাঘরের জানলায় গিয়ে হাঁকতো, “পলিন, আমাকে কিছু দিয়ে যা।”