০৫:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
ঘোড়া-থিমের ফুকুবুকুরো: জাপানে ২০২৬ নববর্ষে পণ্য নয়, অভিজ্ঞতাই মূল টান ডকুমেন্টারি আবার আলোয় আনতে নিউইয়র্কে ভ্যারাইটির ‘ডক ড্রিমস লাইভ’ আমাজনের বেলেং-এ শুরু হলো কপ৩০, যুক্তরাষ্ট্র নেই আলোচনার টেবিলে সপ্তাহের শুরুতেই শেয়ারবাজারে ধস: ডিএসই সূচক ৬৮ পয়েন্ট ও সিএসই ৩৫ পয়েন্ট কমেছে ২০২৫ সালের গিফট গাইডে এআই ও ওয়্যারেবলকে শীর্ষে তুলল এনগ্যাজেট তাইওয়ান প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে চীনা কূটনীতিককে ডেকে পাঠাল টোকিও ব্রিটেনকে বিনিয়োগকারীদের বার্তা: একটু আশাবাদী হোন ভারতের অদ্ভুত স্থিতিশীলতা: অস্থির প্রতিবেশে শান্ত শক্তি  ধানমন্ডিতে মাইডাস ও ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ তেহরানে এক কোটি মানুষের দুই সপ্তাহ চলার মতো পানি আছে

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-১১৪)

  • Sarakhon Report
  • ১২:০০:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • 59

শশাঙ্ক মণ্ডল

সাহিত্য

পঞ্চম অধ্যায়

১৮৪২ খ্রীষ্টাব্দের দিকে বারাসতে বালকদের জন্য ইংরেজি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হল সরকারি উদ্যোগে। ১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দে রামতনু লাহিড়ি উত্তরপাড়া স্কুল থেকে বারাসত স্কুলে যোগ দিলেন এবং দেড় বছরকাল এই বিদ্যালয়ের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীকালে প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগ দিলেন ফারস্টবুক রচয়িতা বিখ্যাত প্যারীচরণ সরকার। বারাসতের নিবাধই গ্রামে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সংবাদ তত্ববোধিনী পত্রিকাতে চৈত্র ১৭৭৪ শকে জানা যাচ্ছে- ‘সম্প্রতি বারাসত জেলার অন্তঃপাতি নিবাধই গ্রামস্থ বিদ্যালয়ের বিবরণ অবগত হইয়া অতিশয় আহ্লাদিত হওয়া গেল।

তথায় ইংরেজি বাঙ্গালা ও কিছু কিছু সংস্কৃতও অধীত হইয়া থাকে. . অন্য অন্য ইংরেজি বিদ্যালয়ে বাঙ্গালা ভাষা শিক্ষা বিষয়ে তদীয় অধ্যক্ষদের তাদৃশ মনোযোগ দৃষ্ট হয় না কিন্তু এ বিদ্যালয়ে বাঙ্গালা ভাষায় সমধিক অনুশীলন হইয়া থাকে’। নারীশিক্ষার ক্ষেত্রে পশ্চাদপদতা বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। ১৮৫০ খ্রীষ্টাব্দে বহু বাধা বিপত্তির মধ্য দিয়ে কলকাতায় বেথুন বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিতহল- বিদ্যাসাগর, মদনমোহন নারী শিক্ষা উপযোগী পাঠ্যপুস্তক রচনায় মনোনিবেশ করলেন। ১৮৫৪ এর মধ্যে বারাসতে কালীকৃষ্ণ মিত্রদের উদ্যোগে বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা কলকাতার বাইরে প্রথম বালিকা বিদ্যালয়।

নারীশিক্ষা বিস্তারে বরিশালের মহিলা উন্নয়ন সমিতি এগিয়ে এলেন- ১৮৭৯ খ্রীষ্টাব্দে বেশ কয়েকটি স্কুল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিলেন কিন্তু সমস্যা দেখা দিল শিক্ষকের এবং স্কুল চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের। সরকারি উদ্যোগে নারীশিক্ষা বিস্তারের জন্য Normal Training এর যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তাতে কয়েকজন বৈষ্ণবীকে শিক্ষিকা হিসাবে ট্রেনিং দেবার ব্যবস্থা হল কিন্তু গোড়া হিন্দুসমাজ অনেক জায়গায় এদের হাতে মেয়েদের শিক্ষার ভার তুলে দিতে রাজী হল না।

শিক্ষিকার সমস্যা দেখা দিল আর সরকারের পক্ষে নারীশিক্ষা বিস্তারের প্রতিশ্রুতি থাকলেও অর্থের অভাবে কোন কার্যকরী ভূমিকা লক্ষ করা গেল না। উনিশ শতক জুড়ে নারীশিক্ষার ক্ষেত্রে কোন উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা লক্ষ করা গেল না- উনিশ শতকের শেষ দশকে; বিংশ শতাব্দীর শুরুতে কয়েকটি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার খবর জানা যাচ্ছে রাডুলি কাঠিপাড়ায় প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের পিতার উৎসাহে বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, এছাড়া যশোর, খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল, গৈলা প্রভৃতি এলাকায় নারীশিক্ষা বিস্তারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

হান্টার কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশের পর সরকার কিছুটা আর্থিক বরাদ্দ বাড়ালেন এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে কিছু আর্থিক দায়িত্ব গ্রহণ করলেন এ সময়ে অনেকগুলি বালকদের স্কুল গড়ে উঠেছিল ১৮৭৭ খ্রীষ্টাব্দে বসিরহাট হাইস্কুল, ১৮৮৫ খ্রীষ্টাব্দে উপেন্দ্রনাথ সাউ, শ্যামাচরণ বল্লভ, মহেন্দ্রলাল গায়েনদের উদ্যোগে ধান্যকুড়িয়া হাইস্কুল, পরবর্তীকালে আড়বেলিয়ার গ্রামবাসীদের উদ্যোগে জানকীবল্লভ হাইস্কুল, ১৮৮৮ খ্রীষ্টাব্দে ২৪ পরগণার দক্ষিণে রাজনারায়ণ বসুর উৎসাহে বোড়াল হাইস্কুল, ১৮৯১ খ্রীষ্টাব্দে মধ্যে বরিশাল জেলার গৈলা হাইস্কুল, পটুয়াখালি হাইস্কুল, বাঘেরহাট এবং সাতক্ষীরার প্রাণনাথ হাইস্কুল গড়ে উঠল।

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

ঘোড়া-থিমের ফুকুবুকুরো: জাপানে ২০২৬ নববর্ষে পণ্য নয়, অভিজ্ঞতাই মূল টান

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-১১৪)

১২:০০:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

শশাঙ্ক মণ্ডল

সাহিত্য

পঞ্চম অধ্যায়

১৮৪২ খ্রীষ্টাব্দের দিকে বারাসতে বালকদের জন্য ইংরেজি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হল সরকারি উদ্যোগে। ১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দে রামতনু লাহিড়ি উত্তরপাড়া স্কুল থেকে বারাসত স্কুলে যোগ দিলেন এবং দেড় বছরকাল এই বিদ্যালয়ের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীকালে প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগ দিলেন ফারস্টবুক রচয়িতা বিখ্যাত প্যারীচরণ সরকার। বারাসতের নিবাধই গ্রামে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সংবাদ তত্ববোধিনী পত্রিকাতে চৈত্র ১৭৭৪ শকে জানা যাচ্ছে- ‘সম্প্রতি বারাসত জেলার অন্তঃপাতি নিবাধই গ্রামস্থ বিদ্যালয়ের বিবরণ অবগত হইয়া অতিশয় আহ্লাদিত হওয়া গেল।

তথায় ইংরেজি বাঙ্গালা ও কিছু কিছু সংস্কৃতও অধীত হইয়া থাকে. . অন্য অন্য ইংরেজি বিদ্যালয়ে বাঙ্গালা ভাষা শিক্ষা বিষয়ে তদীয় অধ্যক্ষদের তাদৃশ মনোযোগ দৃষ্ট হয় না কিন্তু এ বিদ্যালয়ে বাঙ্গালা ভাষায় সমধিক অনুশীলন হইয়া থাকে’। নারীশিক্ষার ক্ষেত্রে পশ্চাদপদতা বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। ১৮৫০ খ্রীষ্টাব্দে বহু বাধা বিপত্তির মধ্য দিয়ে কলকাতায় বেথুন বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিতহল- বিদ্যাসাগর, মদনমোহন নারী শিক্ষা উপযোগী পাঠ্যপুস্তক রচনায় মনোনিবেশ করলেন। ১৮৫৪ এর মধ্যে বারাসতে কালীকৃষ্ণ মিত্রদের উদ্যোগে বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা কলকাতার বাইরে প্রথম বালিকা বিদ্যালয়।

নারীশিক্ষা বিস্তারে বরিশালের মহিলা উন্নয়ন সমিতি এগিয়ে এলেন- ১৮৭৯ খ্রীষ্টাব্দে বেশ কয়েকটি স্কুল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিলেন কিন্তু সমস্যা দেখা দিল শিক্ষকের এবং স্কুল চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের। সরকারি উদ্যোগে নারীশিক্ষা বিস্তারের জন্য Normal Training এর যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তাতে কয়েকজন বৈষ্ণবীকে শিক্ষিকা হিসাবে ট্রেনিং দেবার ব্যবস্থা হল কিন্তু গোড়া হিন্দুসমাজ অনেক জায়গায় এদের হাতে মেয়েদের শিক্ষার ভার তুলে দিতে রাজী হল না।

শিক্ষিকার সমস্যা দেখা দিল আর সরকারের পক্ষে নারীশিক্ষা বিস্তারের প্রতিশ্রুতি থাকলেও অর্থের অভাবে কোন কার্যকরী ভূমিকা লক্ষ করা গেল না। উনিশ শতক জুড়ে নারীশিক্ষার ক্ষেত্রে কোন উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা লক্ষ করা গেল না- উনিশ শতকের শেষ দশকে; বিংশ শতাব্দীর শুরুতে কয়েকটি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার খবর জানা যাচ্ছে রাডুলি কাঠিপাড়ায় প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের পিতার উৎসাহে বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, এছাড়া যশোর, খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল, গৈলা প্রভৃতি এলাকায় নারীশিক্ষা বিস্তারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

হান্টার কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশের পর সরকার কিছুটা আর্থিক বরাদ্দ বাড়ালেন এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে কিছু আর্থিক দায়িত্ব গ্রহণ করলেন এ সময়ে অনেকগুলি বালকদের স্কুল গড়ে উঠেছিল ১৮৭৭ খ্রীষ্টাব্দে বসিরহাট হাইস্কুল, ১৮৮৫ খ্রীষ্টাব্দে উপেন্দ্রনাথ সাউ, শ্যামাচরণ বল্লভ, মহেন্দ্রলাল গায়েনদের উদ্যোগে ধান্যকুড়িয়া হাইস্কুল, পরবর্তীকালে আড়বেলিয়ার গ্রামবাসীদের উদ্যোগে জানকীবল্লভ হাইস্কুল, ১৮৮৮ খ্রীষ্টাব্দে ২৪ পরগণার দক্ষিণে রাজনারায়ণ বসুর উৎসাহে বোড়াল হাইস্কুল, ১৮৯১ খ্রীষ্টাব্দে মধ্যে বরিশাল জেলার গৈলা হাইস্কুল, পটুয়াখালি হাইস্কুল, বাঘেরহাট এবং সাতক্ষীরার প্রাণনাথ হাইস্কুল গড়ে উঠল।