০৪:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
চীনের পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট খাতে আইপিও সহজ করল বেইজিং, স্পেস প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রকে টপকানোর বার্তা নতুন রেকর্ডে রুপা রাশিয়ার নতুন অর্থায়নে তুরস্কের পারমাণবিক স্বপ্নে গতি, আক্কুইউ প্রকল্পে এল ৯ বিলিয়ন ডলার মার্কিন আদালতের নির্দেশ মানার আহ্বান ভেনেজুয়েলানদের, এল সালভাদরের কারাগার থেকে ফেরত বন্দিদের আইনি লড়াই নাইজেরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় সহযোগিতা, একক মার্কিন সামরিক হুমকি এড়াল আবুজা চীনের নিষেধাজ্ঞার কড়া বার্তা, তাইওয়ান অস্ত্র বিক্রিতে মার্কিন প্রতিরক্ষা সংস্থার ওপর চাপ রাশিয়ার ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কেঁপে উঠল কিয়েভ, সক্রিয় আকাশ প্রতিরক্ষা ট্রাম্পের সঙ্গে রোববার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে জেলেনস্কি, ভূমি ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে চূড়ান্ত সমঝোতার ইঙ্গিত সন্ত্রাস দমনে অপ্রবেশ্য নিরাপত্তা বলয়, সংঘটিত অপরাধে সর্বমুখী আঘাতের ঘোষণা অমিত শাহের ইসরায়েলের ঐতিহাসিক স্বীকৃতি সোমালিল্যান্ডকে, আফ্রিকার শিংয়ে নতুন ভূরাজনৈতিক ঢেউ

টলস্টয়ের স্মৃতি (পর্ব- ২৮)

  • Sarakhon Report
  • ০৩:৪৫:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • 81

ম্যাকসিম গোর্কী

একটি চিঠি

কারণ, তিনি বুঝেছিলেন, কোন উপদেশ প্রচারের দ্বারাই মানুষের মনে বিশ্বাস জন্মান যায় না; নিজের উপদেশ এবং ব্যক্তিত্ব সম্বন্ধে তিনি নিজেও যে কী রকম সংশয় পোষণ করতেন, তার দৃষ্টান্ত তুমি নিজেই হয়তো কোনোদিন তাঁর ডাইরিতেই পড়তে পাবে। শহীদ এবং সহাকারীরা যে কদাচিৎ দুই জন ভিন্ন সর্বদা স্বৈরাচারী এবং অত্যাচারী হ’য়ে থাকেন, তাও তিনি জানতেন। তিনি ছিলেন সর্বজ্ঞ।

তবু তিনি নিজেকে বলেছিলেন, “আমি যদি আমার মতবাদের জন্যে যন্ত্রণা সহ্য করি, তবে সেগুলির প্রভাব ও প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পাবে।” তাঁর মধ্যে এই বস্তুটি সর্বদাই আমাকে পীড়া দিয়েছে। কারণ, আমার প্রতি এ যেন এক প্রকার বলপ্রয়োগের চেষ্টা; আমার বিবেককে কবলিত করবার তীর বাসনা-শোণিতাক্ত এক ন্যায়ের মহিমায় আমার বিবেকের চক্ষুকে ঝলে দিয়ে আমার ঘাড়ে নীতির বাঁধা বুলি চড়িয়ে দেওয়ার কঠিন প্রয়াস; এমনিটি আমি না অনুভব ক’রে পারি না।

জীবনের ওপারের অমরতাটাকেই তিনি সর্বদা বড়ো ক’রে দেখিয়েছেন। অথচ জীবনের এপারে থাকতেই তিনি ভালোবেসেছেন সর্বদা। তিনি ছিলেন, এমন একজন লেখক, যাঁকে পরিপূর্ণতম অর্থে সত্যিকারের লেখক বলা চলে। তাঁর মহান আত্মার মধ্যে জাতির সকল দোষত্রুটি, ঐতিহাসিক অগ্নিপরীক্ষার ফলে সংঘটিত জাতির সকল অংগহানিই মূর্তিগ্রহ ক’রে উঠেছিল। তাঁর “নিষ্ক্রিয়তা” এবং “অজায়ের প্রতি নির্বিরোধের” ধোঁয়া ধোঁয়া বাণীগুলি পুরাতন পচা রুশ রক্তের সংগে মংগোলীয়দের বিষাক্ত নিয়তিবাদের সংমিশ্রনের ফলেই করেছিল জন্মলাভ।

এ-জিনিষটা প্রায়ই পশ্চিমের অশ্রান্ত সৃজনী শক্তি এবং তার সহজাত জীবনের অন্যায়ের প্রতি সক্রিয়, দুর্দম প্রতিরোধিতার সম্পূর্ণ বিরোধী। টলস্টয়ের অরাজকবাদ বলতে যা বোঝায়, তা হোলো মূলত এবং সারত, গ্লাভ জাতির চিরাচরিত রাষ্ট্রবিরোধিতার প্রকাশ মাত্র। আর এও আবার বাস্তবিক পক্ষে আমাদের একটি জাতীয় বৈশিষ্ট্য-যাযাবরের মতো ইতস্তত ছড়িয়ে পড়বার যে তীব্র বাসনা আমাদের মজ্জায় লুকিয়ে আছে, এ তাছাড়া আর কিছুই নয়। এই বাসনাকে আমরা আজ পর্যন্ত আবেগের সংগে প্রশ্রয় দিয়ে এসেছি। একথা তুমিও জানো, অনন্ত সবাইও জানে।

রাশিয়ানরা একথা জানে, কিন্তু তথাপি তারা সর্বাপেক্ষা স্বল্প প্রতিরোধের পথেই পা দেয়; আমরা জানি, ও-পথ বিপজ্জনক, কিন্তু তবু আমরা হামা- গুঁড়ি দিয়ে ও পথেই আরো, আরো এগিয়ে চলি; আর এই চুপি চুপি করুণ ভাবে এগিয়ে চলার নামই হল রাশিয়ার ইতিহাস অতি আকস্মিকভাবে প্রাণ হীন পদ্ধতিতে সংঘটিত একটি রাষ্ট্রের ইতিহাস। ভারিয়াগ তাতার, বাল্টিক জার্মান এবং ছোটোখাটে।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

চীনের পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট খাতে আইপিও সহজ করল বেইজিং, স্পেস প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রকে টপকানোর বার্তা

টলস্টয়ের স্মৃতি (পর্ব- ২৮)

০৩:৪৫:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

ম্যাকসিম গোর্কী

একটি চিঠি

কারণ, তিনি বুঝেছিলেন, কোন উপদেশ প্রচারের দ্বারাই মানুষের মনে বিশ্বাস জন্মান যায় না; নিজের উপদেশ এবং ব্যক্তিত্ব সম্বন্ধে তিনি নিজেও যে কী রকম সংশয় পোষণ করতেন, তার দৃষ্টান্ত তুমি নিজেই হয়তো কোনোদিন তাঁর ডাইরিতেই পড়তে পাবে। শহীদ এবং সহাকারীরা যে কদাচিৎ দুই জন ভিন্ন সর্বদা স্বৈরাচারী এবং অত্যাচারী হ’য়ে থাকেন, তাও তিনি জানতেন। তিনি ছিলেন সর্বজ্ঞ।

তবু তিনি নিজেকে বলেছিলেন, “আমি যদি আমার মতবাদের জন্যে যন্ত্রণা সহ্য করি, তবে সেগুলির প্রভাব ও প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পাবে।” তাঁর মধ্যে এই বস্তুটি সর্বদাই আমাকে পীড়া দিয়েছে। কারণ, আমার প্রতি এ যেন এক প্রকার বলপ্রয়োগের চেষ্টা; আমার বিবেককে কবলিত করবার তীর বাসনা-শোণিতাক্ত এক ন্যায়ের মহিমায় আমার বিবেকের চক্ষুকে ঝলে দিয়ে আমার ঘাড়ে নীতির বাঁধা বুলি চড়িয়ে দেওয়ার কঠিন প্রয়াস; এমনিটি আমি না অনুভব ক’রে পারি না।

জীবনের ওপারের অমরতাটাকেই তিনি সর্বদা বড়ো ক’রে দেখিয়েছেন। অথচ জীবনের এপারে থাকতেই তিনি ভালোবেসেছেন সর্বদা। তিনি ছিলেন, এমন একজন লেখক, যাঁকে পরিপূর্ণতম অর্থে সত্যিকারের লেখক বলা চলে। তাঁর মহান আত্মার মধ্যে জাতির সকল দোষত্রুটি, ঐতিহাসিক অগ্নিপরীক্ষার ফলে সংঘটিত জাতির সকল অংগহানিই মূর্তিগ্রহ ক’রে উঠেছিল। তাঁর “নিষ্ক্রিয়তা” এবং “অজায়ের প্রতি নির্বিরোধের” ধোঁয়া ধোঁয়া বাণীগুলি পুরাতন পচা রুশ রক্তের সংগে মংগোলীয়দের বিষাক্ত নিয়তিবাদের সংমিশ্রনের ফলেই করেছিল জন্মলাভ।

এ-জিনিষটা প্রায়ই পশ্চিমের অশ্রান্ত সৃজনী শক্তি এবং তার সহজাত জীবনের অন্যায়ের প্রতি সক্রিয়, দুর্দম প্রতিরোধিতার সম্পূর্ণ বিরোধী। টলস্টয়ের অরাজকবাদ বলতে যা বোঝায়, তা হোলো মূলত এবং সারত, গ্লাভ জাতির চিরাচরিত রাষ্ট্রবিরোধিতার প্রকাশ মাত্র। আর এও আবার বাস্তবিক পক্ষে আমাদের একটি জাতীয় বৈশিষ্ট্য-যাযাবরের মতো ইতস্তত ছড়িয়ে পড়বার যে তীব্র বাসনা আমাদের মজ্জায় লুকিয়ে আছে, এ তাছাড়া আর কিছুই নয়। এই বাসনাকে আমরা আজ পর্যন্ত আবেগের সংগে প্রশ্রয় দিয়ে এসেছি। একথা তুমিও জানো, অনন্ত সবাইও জানে।

রাশিয়ানরা একথা জানে, কিন্তু তথাপি তারা সর্বাপেক্ষা স্বল্প প্রতিরোধের পথেই পা দেয়; আমরা জানি, ও-পথ বিপজ্জনক, কিন্তু তবু আমরা হামা- গুঁড়ি দিয়ে ও পথেই আরো, আরো এগিয়ে চলি; আর এই চুপি চুপি করুণ ভাবে এগিয়ে চলার নামই হল রাশিয়ার ইতিহাস অতি আকস্মিকভাবে প্রাণ হীন পদ্ধতিতে সংঘটিত একটি রাষ্ট্রের ইতিহাস। ভারিয়াগ তাতার, বাল্টিক জার্মান এবং ছোটোখাটে।