প্রদীপ কুমার মজুমদার
ভারতীয় গণিতশাস্ত্রে “অঙ্ক” সংজ্ঞা ৯ খ্যাপন করে। সেইজন্য প্রাচীন ভারতীয় গণিতবিদেরা বলেন-নবৈব যোগো গণনেতি শশ্বৎ-অর্থাৎ গণনাযোগ সর্বদাই নব মাত্র। বিখ্যাত টীকাকার নীলকণ্ঠ সুরী উক্ত শ্লোকের টাকাতে বলেছেন “নবৈবাঙ্কা: ক্রমভেদেন স্বিত্বা যথেষ্টং সংখ্যাবাচিনো ভবস্তি”। সুতরাং প্রাচীন ভারতীয় গণিত- বিদেরা শূন্য চিহ্নকে ঐ সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত করেন নাই। কিন্তু প্রাচীন ভারতীয়দের শ্রেষ্ঠ সংখ্যা প্রণালীতে শূন্যকে ধরে মোট দশটি অঙ্ক আছে। সেইহেতু পাশ্চাত্য পণ্ডিতবর্গ এই প্রণালীকে দশাঙ্ক সংখ্যা প্রণালী বলেছেন।
মহাভারতের যুগে ভারতীয় গণিতবিদেরা সংখ্যা খ্যাপনার্থে অঙ্ক ব্যবহার করতেন সে নিদর্শন মহাভারতের বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ বনপর্বের কথাই ধরা যাক। দুর্যোধন, শকুনি প্রভৃতি পাণ্ডবদের বনবাস কি রকম চলছে তা দেখার জন্য চাতুরী করে ধৃতরাষ্ট্রকে বললেন-“স্মারণে সময়ঃ প্রাপ্তো বৎসানামপি চাঙ্কনম্”। অর্থাৎ স্মারণের এবং (নূতন) বৎসকূলকে অঙ্কনের সময় হয়েছে।
এখানে স্মারণ শব্দটির অর্থ হচ্ছে সংখ্যা পরিগণনা। নীলকণ্ঠ সুরী স্মারণ শব্দটির সংস্কৃত টীকা করতে গিয়ে বলেছেন-“স্মারণে স্মারণহেতৌ কৰ্ম্মণি গবাং সংখ্যা পূর্ব্বকং বয়োবর্ণজাতিনায়া লেখনে।” অঙ্কন শব্দটির অর্থ এখানে সংখ্যা স্থাপন বোঝান হয়েছে।
(চলবে)
Sarakhon Report 



















