০৪:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
চীনের পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট খাতে আইপিও সহজ করল বেইজিং, স্পেস প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রকে টপকানোর বার্তা নতুন রেকর্ডে রুপা রাশিয়ার নতুন অর্থায়নে তুরস্কের পারমাণবিক স্বপ্নে গতি, আক্কুইউ প্রকল্পে এল ৯ বিলিয়ন ডলার মার্কিন আদালতের নির্দেশ মানার আহ্বান ভেনেজুয়েলানদের, এল সালভাদরের কারাগার থেকে ফেরত বন্দিদের আইনি লড়াই নাইজেরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় সহযোগিতা, একক মার্কিন সামরিক হুমকি এড়াল আবুজা চীনের নিষেধাজ্ঞার কড়া বার্তা, তাইওয়ান অস্ত্র বিক্রিতে মার্কিন প্রতিরক্ষা সংস্থার ওপর চাপ রাশিয়ার ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কেঁপে উঠল কিয়েভ, সক্রিয় আকাশ প্রতিরক্ষা ট্রাম্পের সঙ্গে রোববার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে জেলেনস্কি, ভূমি ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে চূড়ান্ত সমঝোতার ইঙ্গিত সন্ত্রাস দমনে অপ্রবেশ্য নিরাপত্তা বলয়, সংঘটিত অপরাধে সর্বমুখী আঘাতের ঘোষণা অমিত শাহের ইসরায়েলের ঐতিহাসিক স্বীকৃতি সোমালিল্যান্ডকে, আফ্রিকার শিংয়ে নতুন ভূরাজনৈতিক ঢেউ

টলস্টয়ের স্মৃতি (পর্ব- ৩১)

  • Sarakhon Report
  • ০৩:৫৪:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • 80

ম্যাকসিম গোর্কী

একটি চিঠি

লিও নিকোলাইয়েভিচের মধ্যে এমন অনেক কিছু জিনিষ আছে, যা মাঝে মাঝে আমার মধ্যে ঘৃণার অনুরূপ একটি অনুভূতির উদ্রেক করে। এবং এই ঘৃণা একটা গুরুভার পাষাণের মতো আমার সমগ্র সত্তার উপর নেমে আসে। সমস্ত বস্তু অনুপাতের উর্ধ্বে তাঁর অতি পুষ্ট ব্যক্তিত্বটিকে সত্যই একটি দানবীয় দুর্ঘটনা ব’লে মনে হয়- অনেকটা কুৎসিত, অনেকটা বীভৎস। রূপকথার দৈত্যের মতো তাঁর সধ্যে এমন একটা কিছু আছে, যাকে পৃথিবী ধ’রে রাখতে পারে না। সত্যই, তিনি মহান, তিনি বিরাট।

আমার গভীর বিশ্বাস তিনি যা কিছু বলেছেন, সে সমস্ত সত্ত্বেও তাঁর মধ্যে এমন অনেক কিছু বস্তু রয়েছে যার সম্বন্ধে তিনি সম্পূর্ণ নীরব-এবং সম্ভবত চিরদিন নীরবই থাকবেন, কোনদিন কাউকে কিছু বলবেন-ও না। এই “অজ্ঞাত কিছুটি” কেবল মাত্র কখনো কখনো ইংগিতে ইসারায় তাঁর কথোপ- কথনে প্রকাশ পেয়েছে। তিনি আমাকে এবং এল সুলারঝি- স্কিকে তাঁর যে দু’খানি ডাইরির খাতা পড়তে দিয়েছিলেন, সেগুলির মধ্যেও এর সংকেত পাওয়া যায়। আমার মনে হয়, এ যেন সকল স্বীকারের অস্বীকার, সর্বাপেক্ষা গভীর এবং অনিষ্টকর এক ধ্বংস-অসীম এক, অমোঘ এক নৈরাশ্য। নিঃসংগতার মৃত্তিকা থেকে এর উদ্ভব, এবং এ সম্বন্ধে সম্ভবত তিনি ছাড়া আর কার-ও ভীষণতর কোনো অভিজ্ঞতা-ও নেই।

আমার প্রায়ই মনে হ’ত, তিনি এমন একটি মানুষ, যিনি তাঁর অন্তরতম অন্তর থেকে জনসাধারণের প্রতি চিরদিনই উদাসীন। তিনি তাদের কাছ থেকে এতো দূরে, এতো উর্ধ্বে আছেন যে, তারা তাঁর চোখে ক্ষুদ্র পতংগের মতো প্রতীয়মান হয়। তাদের কর্মতৎপরত। তাঁর কাছে হাস্যাস্পদ এবং অত্যন্ত করুণ লাগে। তাই তিনি তাদের কাছ থেকে সুদূর এক মরুভূমিতে চলে যান এবং সেখানে নির্জনে তাঁর সকল আধ্যাত্মিক শক্তি দিয়ে, শ্রেষ্ঠতম প্রচেষ্টা দিয়ে নিবিড়ভাবে পরীক্ষা ক’রে দেখেন সৃষ্টির “সারতম বস্তু”-মৃত্যুকে।

তাঁর সমস্ত জীবন ধ’রে তিনি মৃত্যুকে ভয় করেছেন, ঘৃণা করেছেন। সারা জীবন তাঁর আত্মার একটি আতংকের স্পন্দন তিনি অনুভব করেছেন,- আরসাম্যাক্সের মতো একটি আতংকের- তাঁকে কি অবশ্যই মরতে হবে? সমস্ত বিশ্ব, সমস্ত পৃথিবী তাঁর দিকে তাকিয়ে আছে; চীন, ভারত, আমেরিকা, সর্বত্র থেকে প্রাণময় ছন্দময় জীবনের অজস্র তন্তু তাঁর পানে প্রসারিত হ’য়ে আছে; তাঁর আত্মা যে সকলের, সর্বকালের, তাও ঘোষিত হয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

চীনের পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট খাতে আইপিও সহজ করল বেইজিং, স্পেস প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রকে টপকানোর বার্তা

টলস্টয়ের স্মৃতি (পর্ব- ৩১)

০৩:৫৪:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ম্যাকসিম গোর্কী

একটি চিঠি

লিও নিকোলাইয়েভিচের মধ্যে এমন অনেক কিছু জিনিষ আছে, যা মাঝে মাঝে আমার মধ্যে ঘৃণার অনুরূপ একটি অনুভূতির উদ্রেক করে। এবং এই ঘৃণা একটা গুরুভার পাষাণের মতো আমার সমগ্র সত্তার উপর নেমে আসে। সমস্ত বস্তু অনুপাতের উর্ধ্বে তাঁর অতি পুষ্ট ব্যক্তিত্বটিকে সত্যই একটি দানবীয় দুর্ঘটনা ব’লে মনে হয়- অনেকটা কুৎসিত, অনেকটা বীভৎস। রূপকথার দৈত্যের মতো তাঁর সধ্যে এমন একটা কিছু আছে, যাকে পৃথিবী ধ’রে রাখতে পারে না। সত্যই, তিনি মহান, তিনি বিরাট।

আমার গভীর বিশ্বাস তিনি যা কিছু বলেছেন, সে সমস্ত সত্ত্বেও তাঁর মধ্যে এমন অনেক কিছু বস্তু রয়েছে যার সম্বন্ধে তিনি সম্পূর্ণ নীরব-এবং সম্ভবত চিরদিন নীরবই থাকবেন, কোনদিন কাউকে কিছু বলবেন-ও না। এই “অজ্ঞাত কিছুটি” কেবল মাত্র কখনো কখনো ইংগিতে ইসারায় তাঁর কথোপ- কথনে প্রকাশ পেয়েছে। তিনি আমাকে এবং এল সুলারঝি- স্কিকে তাঁর যে দু’খানি ডাইরির খাতা পড়তে দিয়েছিলেন, সেগুলির মধ্যেও এর সংকেত পাওয়া যায়। আমার মনে হয়, এ যেন সকল স্বীকারের অস্বীকার, সর্বাপেক্ষা গভীর এবং অনিষ্টকর এক ধ্বংস-অসীম এক, অমোঘ এক নৈরাশ্য। নিঃসংগতার মৃত্তিকা থেকে এর উদ্ভব, এবং এ সম্বন্ধে সম্ভবত তিনি ছাড়া আর কার-ও ভীষণতর কোনো অভিজ্ঞতা-ও নেই।

আমার প্রায়ই মনে হ’ত, তিনি এমন একটি মানুষ, যিনি তাঁর অন্তরতম অন্তর থেকে জনসাধারণের প্রতি চিরদিনই উদাসীন। তিনি তাদের কাছ থেকে এতো দূরে, এতো উর্ধ্বে আছেন যে, তারা তাঁর চোখে ক্ষুদ্র পতংগের মতো প্রতীয়মান হয়। তাদের কর্মতৎপরত। তাঁর কাছে হাস্যাস্পদ এবং অত্যন্ত করুণ লাগে। তাই তিনি তাদের কাছ থেকে সুদূর এক মরুভূমিতে চলে যান এবং সেখানে নির্জনে তাঁর সকল আধ্যাত্মিক শক্তি দিয়ে, শ্রেষ্ঠতম প্রচেষ্টা দিয়ে নিবিড়ভাবে পরীক্ষা ক’রে দেখেন সৃষ্টির “সারতম বস্তু”-মৃত্যুকে।

তাঁর সমস্ত জীবন ধ’রে তিনি মৃত্যুকে ভয় করেছেন, ঘৃণা করেছেন। সারা জীবন তাঁর আত্মার একটি আতংকের স্পন্দন তিনি অনুভব করেছেন,- আরসাম্যাক্সের মতো একটি আতংকের- তাঁকে কি অবশ্যই মরতে হবে? সমস্ত বিশ্ব, সমস্ত পৃথিবী তাঁর দিকে তাকিয়ে আছে; চীন, ভারত, আমেরিকা, সর্বত্র থেকে প্রাণময় ছন্দময় জীবনের অজস্র তন্তু তাঁর পানে প্রসারিত হ’য়ে আছে; তাঁর আত্মা যে সকলের, সর্বকালের, তাও ঘোষিত হয়েছে।