০৫:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -২৪)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫
  • 17

আর্কাদি গাইদার

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

নৌবাহিনীর এক ছোকরা অফিসারকে গলা চড়িয়ে তিনি কী-যেন বলছিলেন। অফিসারটি প্ল্যাটফর্মের ওপর একটা ভারি লোহার ট্রাঙ্ক টানার চেষ্টা করছিল।

‘আঃ, ছেড়ে দাও তো,’ ছোকরাটি জবাব দিল, ‘এখানে কুলি পাবে কোথায়, শুনি! আঃ, চুলোয় যাক সব! এ্যাই, শোন!’ হঠাৎ ট্রাঙ্কটা নামিয়ে রেখে কাকে যেন ডাকল ও। দেখা গেল, পাশ দিয়ে চলে-যাওয়ার সময় একজন সৈনিককে ও ডেকে বলছে, ‘এই-যে, তুমি, তুমি! আমার এই মালপত্রগুলো ট্রেনে তুলতে একটু সাহায্য কর দেখি।’

খানিকটা অবাক হয়ে আর এই কর্তৃত্বপূর্ণ হুকুম শুনে যান্ত্রিকভাবেই সৈনিকটি অ্যাটেনশনের ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে পড়ল আর হাত দুটো ঝুলে পড়ল দু-পাশে। তারপর হঠাৎ-কিছু-না-ভেবেই, এরকম হুকুম মানায় আর ওর সঙ্গীদের বিদ্রূপভরা চোখের দৃষ্টি দেখে যেন কিছুটা লজ্জিতভাবে সহজ হবার চেষ্টা করল। আস্তে আস্তে হাতদুটো কোমরের বেল্টের মধ্যে গুঁজে দিয়ে এতক্ষণে ও অফিসারের দিকে চোখ সরু করে বিদ্রূপের ভঙ্গিতে তাকাল।

অফিসারটি আবার বলল, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ, আমি তোমাকেই বলছি। কী হল, কালা হয়ে গেলে নাকি?’

‘না, স্যার, কালা হব কেন? তবে কিনা, আপনার জিনিসপত্তর আপনার হয়ে টানাটানি করা আমার কাজ নয়।’

কথাটা বলে পেছন ফিরে ধীরে-সুস্থে ট্রেনের ধার-বরাবর এগিয়ে গেল।

অফিসারটির দিকে ঝাপসা চোখে কটমট করে তাকিয়ে বৃদ্ধা চে’চিয়ে উঠলেন, ‘গ্রেগরি! শিগগির, শিগগির একজন মিলিটারি পুলিশ ডাক, গ্রেগরি, অসভ্য লোকটাকে গ্রেপ্তার করুক এসে!’

কিন্তু অফিসারটি অসহায়ের ভঙ্গিতে হাত নেড়ে থামিয়ে দিল মহিলাকে। তারপর হঠাৎ খেপে উঠে ধমক দিয়ে বললে:

‘মেলা ফ্যাচফ্যাচ কোরো না তো। সব ব্যাপারে নাক গলানো চাই! কী বোঝো তুমি? কোথায় মিলিটারি পুলিশ? কার কথা বলছ তুমি আনব কাউকে? চুপটি করে মুখ বন্ধ করে বোসো দেখি।’ পরপার থেকে ডেকে হঠাৎ ট্রেনের একটা কামরার জানলা দিয়ে অপ্রত্যাশিতভাবে তিষ্কাকে মুখ বের করতে দেখা গেল।

 

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -২৪)

০৮:০০:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

নৌবাহিনীর এক ছোকরা অফিসারকে গলা চড়িয়ে তিনি কী-যেন বলছিলেন। অফিসারটি প্ল্যাটফর্মের ওপর একটা ভারি লোহার ট্রাঙ্ক টানার চেষ্টা করছিল।

‘আঃ, ছেড়ে দাও তো,’ ছোকরাটি জবাব দিল, ‘এখানে কুলি পাবে কোথায়, শুনি! আঃ, চুলোয় যাক সব! এ্যাই, শোন!’ হঠাৎ ট্রাঙ্কটা নামিয়ে রেখে কাকে যেন ডাকল ও। দেখা গেল, পাশ দিয়ে চলে-যাওয়ার সময় একজন সৈনিককে ও ডেকে বলছে, ‘এই-যে, তুমি, তুমি! আমার এই মালপত্রগুলো ট্রেনে তুলতে একটু সাহায্য কর দেখি।’

খানিকটা অবাক হয়ে আর এই কর্তৃত্বপূর্ণ হুকুম শুনে যান্ত্রিকভাবেই সৈনিকটি অ্যাটেনশনের ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে পড়ল আর হাত দুটো ঝুলে পড়ল দু-পাশে। তারপর হঠাৎ-কিছু-না-ভেবেই, এরকম হুকুম মানায় আর ওর সঙ্গীদের বিদ্রূপভরা চোখের দৃষ্টি দেখে যেন কিছুটা লজ্জিতভাবে সহজ হবার চেষ্টা করল। আস্তে আস্তে হাতদুটো কোমরের বেল্টের মধ্যে গুঁজে দিয়ে এতক্ষণে ও অফিসারের দিকে চোখ সরু করে বিদ্রূপের ভঙ্গিতে তাকাল।

অফিসারটি আবার বলল, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ, আমি তোমাকেই বলছি। কী হল, কালা হয়ে গেলে নাকি?’

‘না, স্যার, কালা হব কেন? তবে কিনা, আপনার জিনিসপত্তর আপনার হয়ে টানাটানি করা আমার কাজ নয়।’

কথাটা বলে পেছন ফিরে ধীরে-সুস্থে ট্রেনের ধার-বরাবর এগিয়ে গেল।

অফিসারটির দিকে ঝাপসা চোখে কটমট করে তাকিয়ে বৃদ্ধা চে’চিয়ে উঠলেন, ‘গ্রেগরি! শিগগির, শিগগির একজন মিলিটারি পুলিশ ডাক, গ্রেগরি, অসভ্য লোকটাকে গ্রেপ্তার করুক এসে!’

কিন্তু অফিসারটি অসহায়ের ভঙ্গিতে হাত নেড়ে থামিয়ে দিল মহিলাকে। তারপর হঠাৎ খেপে উঠে ধমক দিয়ে বললে:

‘মেলা ফ্যাচফ্যাচ কোরো না তো। সব ব্যাপারে নাক গলানো চাই! কী বোঝো তুমি? কোথায় মিলিটারি পুলিশ? কার কথা বলছ তুমি আনব কাউকে? চুপটি করে মুখ বন্ধ করে বোসো দেখি।’ পরপার থেকে ডেকে হঠাৎ ট্রেনের একটা কামরার জানলা দিয়ে অপ্রত্যাশিতভাবে তিষ্কাকে মুখ বের করতে দেখা গেল।