ম্যাকসিম গোর্কী
একটি চিঠি
তিনি একবার বললেন: শিল্পে ভাঙন বলে কোনো জিনিষ নেই। ইটালিয়ান লসো এই কথাটির উদ্ভাবন করেন। তাঁর পরে ইহুদি নর্দাউ এ কথাটাকে কাকাতুয়ার মত উচ্চ কর্কশ কণ্ঠে আওড়াতে থাকেন। ইতালি হোলো যতো হাতুড়ে আর এ্যাডভেঞ্চারারদের দেশ। ওখানে কেবল আরেন্টিনো, কাসানোভা, কালিওস্ত্রো, এবং ওই ধরণের লোকেরাই জন্মে।”
“আর গ্যারিবল্ডি?”
“সেট। রাজনীতি, আলাদা জিনিষ।”
রাশিয়ার সওদাগর শ্রেণীর জীবন থেকে সংগৃহীত ধারাবাহিক কতকগুলি তথ্যের জবাবে তিনি বলেনঃ “ওগুলো অসত্য। ওগুলো কেবল লেখা থাকে ধূর্ত কেতাবে।”
আমি একটি সওদাগর পরিবারের তিন পুরুষের বাস্তবিক ইতিহাস যা জানতাম, তাঁকে বললাম। এই ইতিহাসে ভাঙনের ধারাটি বিশেষ এক নৃশংসতার সংগে কাজ করেছে। কাহিনীটি শুনে তিনি উত্তেজিত হ’য়ে আমার হাতে চাপ দিয়ে এ সম্পর্কে লিখতে আমাকে উৎসাহিত ক’রে
বললেন: “ব্যাপারটা ঠিক। আমিও জানি, এই ধরণের দুটি পরিবার আছে টুলায়। এ সম্বন্ধে লেখা দরকার। সংক্ষেপে লিখিত একটি দীর্ঘ উপন্যাস, তাই না? তুমি লেখো।” তাঁর চোখ দু’টি দগ্ধপ্ করতে লাগলো।
“কিন্তু, লিও নিকোলাইয়েভিচ, তার মধ্যে তবে নাইট-ও থাকবে?”
“না না, নাইট না। ব্যাপারটা বাস্তবিক গুরুত্বপূর্ণ। একটি মানুষ, সে সমস্ত পরিবারের হ’য়ে উপাসনা করার জন্যে সন্ন্যাসী হ’য়ে যাচ্ছে- অতুলনীয়। এই হোলো সত্য: তুমি পাপ করো, আমি প্রার্থনা ক’রে তোমার পাপের প্রায়শ্চিত্ত করবো। অপরজন, সেই ক্লান্ত, পরিবারের অর্থগৃর প্রতিষ্ঠাতা-সে-ও, সে-ও সত্য। সে হোলে। মাতাল, ব্যভিচারী, পশু, সে ভালোবাসে সবাইকে, আবার অকস্মাৎ খুন-ও ক’রে বসে- চমৎকার।
এ সম্বন্ধে লেখো, লেখা দরকার। না, না, চোর আর ভিখারীদের মধ্যে আর তুমি তোমার গল্পের নায়কদের খুঁজে বেড়িয়ো না। নায়ক-ওটা-ও একটা মিথ্যে, বানানো কথা। কেবল আছে মানুষ আর মানুষ, আর কিছু না।”
তিনি প্রায়ই আমার গল্পগুলির মধ্যে আতিশয্যের উল্লেখ করতেন। তবে, তিনি একবার ‘ডেড সোল্স’। উপন্যাস সম্বন্ধে আলোচনা প্রসংগে সস্নেহভাবে মৃদু হেসে বলেন: