০৮:৩১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -৩৬)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫
  • 16

আর্কাদি গাইদার

চতুর্থ পরিচ্ছেদ

আমার কথা মা এভাবে মেনে নেয়ায় অবাক হলুম। এটা মোটেই মা-র স্বভাবে ছিল না। এমনিতে আমার ব্যাপারে তিনি বড়-একটা নাক গলাতেন না, কিন্তু একবার যদি তাঁর মাথায় কোনো-কিছ, ঢুকত তাহলে তাঁকে ঠেকানো সম্ভব ছিল না।
সে রাত্রে গভীর ঘুমে তলিয়ে রইলুম আমি। স্বপ্নে দেখলুম, তিকা এসেছে। আমার জন্যে সঙ্গে করে একটা কোকিল উপহার এনেছে। ‘কোকিল নিয়ে আমি কী করব, তিমুক্কা?’ তিমুক্কা জবাব দিল না। ‘কোকিল, কোকিল, বল তো আমার বয়েস?’ প্রশ্ন শুনে গুনে-গুনে ঠিক সতেরো বার কুউ-কুউ করে ডাকল ও। আমি বললুম, ‘উ’হঃ, হল না। আমার বয়েস পনেরো।’ ‘না,’ তিমুকাটা মাথা ঝাঁকিয়ে বললে, ‘তোর মা তোকে ঠকিয়েছে’। ‘দূর, মা আমার ঠকাতে যাবে কেন?’ হঠাৎ দেখি, ও মা, তিমুক্কা মোটেই তিকা নয়, ও তো ফেক্কা। দাঁত বের করে হাসছে ফে‌কাটা।
হঠাৎ ঘুমটা ভেঙে গেল। লাফ দিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে পাশের ঘরে উ’কি দিয়ে দেখি, সাতটা বাজতে পাঁচ মিনিট বাকি। মা বাড়ি নেই। এই সুযোগ, কাছে- পিঠে কেউ কোথাও নেই। মাওজারটা তাড়াতাড়ি বাগানে কোথাও লুকিয়ে ফেলতে হয়।
চট করে জামাটা মাথায় গলিয়ে চেয়ারের ওপর থেকে ট্রাউজার্সটা টানলুম। হঠাৎ একটা ঠান্ডা স্রোত আমার শিরদাঁড়া বেয়ে নেমে গেল। সন্দেহজনকরকম হালকা ঠেকল ট্রাউজার্স’টা। খুব সাবধানে, যেন আঙুলে ছ্যাঁকা লেগে যাবে এইভাবে, হাতটা পকেটে গলিয়ে দিলুম। যা ভেবেছি তাই, পকেট খালি। যখন আমি ঘুমোচ্ছিলুম মা তখন নিশ্চয়ই মাওজারটা সরিয়ে ফেলেছেন। ‘ওঃ, তাই বল…. মা-ও আমার বিরুদ্ধে! আর গতকাল আমি কিনা মাকে বিশ্বাস করেছিলুম। এখন বুঝতে পারছি কেন তিনি গতকাল অত সহজে আমার কথা মেনে নিয়েছিলেন। মা নিশ্চয় পিস্তলটা স্থানীয় রক্ষী-বাহিনীকে দিতে গেছেন।’
মা-র পেছনে ধাওয়া করব, ঠিক করলুম।
‘থাম্! থাম্! থাম্!’ ঠিক এই সময়ে বেজে উঠল দেয়াল-ঘড়িটা। হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ে ঘড়ির ডায়ালের দিকে তাকালুম। সত্যি, কে জানে? তখন সবে সকাল সাতটা। অত সকালে মা-র পক্ষে কোথায় যাওয়া সম্ভব ছিল? ফিরে তাকিয়ে দেখলস, বড় বেতের টুকরিটা ঘরে নেই। তার মানে, মা তখন গিয়েছিলেন বাজারে।

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -৩৬)

০৮:০০:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

চতুর্থ পরিচ্ছেদ

আমার কথা মা এভাবে মেনে নেয়ায় অবাক হলুম। এটা মোটেই মা-র স্বভাবে ছিল না। এমনিতে আমার ব্যাপারে তিনি বড়-একটা নাক গলাতেন না, কিন্তু একবার যদি তাঁর মাথায় কোনো-কিছ, ঢুকত তাহলে তাঁকে ঠেকানো সম্ভব ছিল না।
সে রাত্রে গভীর ঘুমে তলিয়ে রইলুম আমি। স্বপ্নে দেখলুম, তিকা এসেছে। আমার জন্যে সঙ্গে করে একটা কোকিল উপহার এনেছে। ‘কোকিল নিয়ে আমি কী করব, তিমুক্কা?’ তিমুক্কা জবাব দিল না। ‘কোকিল, কোকিল, বল তো আমার বয়েস?’ প্রশ্ন শুনে গুনে-গুনে ঠিক সতেরো বার কুউ-কুউ করে ডাকল ও। আমি বললুম, ‘উ’হঃ, হল না। আমার বয়েস পনেরো।’ ‘না,’ তিমুকাটা মাথা ঝাঁকিয়ে বললে, ‘তোর মা তোকে ঠকিয়েছে’। ‘দূর, মা আমার ঠকাতে যাবে কেন?’ হঠাৎ দেখি, ও মা, তিমুক্কা মোটেই তিকা নয়, ও তো ফেক্কা। দাঁত বের করে হাসছে ফে‌কাটা।
হঠাৎ ঘুমটা ভেঙে গেল। লাফ দিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে পাশের ঘরে উ’কি দিয়ে দেখি, সাতটা বাজতে পাঁচ মিনিট বাকি। মা বাড়ি নেই। এই সুযোগ, কাছে- পিঠে কেউ কোথাও নেই। মাওজারটা তাড়াতাড়ি বাগানে কোথাও লুকিয়ে ফেলতে হয়।
চট করে জামাটা মাথায় গলিয়ে চেয়ারের ওপর থেকে ট্রাউজার্সটা টানলুম। হঠাৎ একটা ঠান্ডা স্রোত আমার শিরদাঁড়া বেয়ে নেমে গেল। সন্দেহজনকরকম হালকা ঠেকল ট্রাউজার্স’টা। খুব সাবধানে, যেন আঙুলে ছ্যাঁকা লেগে যাবে এইভাবে, হাতটা পকেটে গলিয়ে দিলুম। যা ভেবেছি তাই, পকেট খালি। যখন আমি ঘুমোচ্ছিলুম মা তখন নিশ্চয়ই মাওজারটা সরিয়ে ফেলেছেন। ‘ওঃ, তাই বল…. মা-ও আমার বিরুদ্ধে! আর গতকাল আমি কিনা মাকে বিশ্বাস করেছিলুম। এখন বুঝতে পারছি কেন তিনি গতকাল অত সহজে আমার কথা মেনে নিয়েছিলেন। মা নিশ্চয় পিস্তলটা স্থানীয় রক্ষী-বাহিনীকে দিতে গেছেন।’
মা-র পেছনে ধাওয়া করব, ঠিক করলুম।
‘থাম্! থাম্! থাম্!’ ঠিক এই সময়ে বেজে উঠল দেয়াল-ঘড়িটা। হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ে ঘড়ির ডায়ালের দিকে তাকালুম। সত্যি, কে জানে? তখন সবে সকাল সাতটা। অত সকালে মা-র পক্ষে কোথায় যাওয়া সম্ভব ছিল? ফিরে তাকিয়ে দেখলস, বড় বেতের টুকরিটা ঘরে নেই। তার মানে, মা তখন গিয়েছিলেন বাজারে।