আর্কাদি গাইদার
চতুর্থ পরিচ্ছেদ
‘কু-উ-উ-উ!’ ডিসট্যান্ট সিগন্যালের বাড়িয়ে দেয়া হাতটাকে বন্ধুর মতো যেন ধরতে আসছে, এমনিভাবে আনন্দে আবার বাঁশি বাজিয়ে দিল এঞ্জিনটা।
‘আচ্ছা, আমি যদি…’
আস্তে-আস্তে উঠে বসে আবার ভাবতে শুরু করলুম আমি।
আর যতই ভাবতে লাগলুম রেলস্টেশনটা ততই সজোরে টানতে লাগল আমাকে।
এঞ্জিনের বাঁশি বাজিয়ে, সিগন্যাল গুমটিঘরের টুংটাং আওয়াজ তুলে, প্রায়-ধরা-ছোঁয়া- যায় এমন জ্বলন্ত পেট্রোলের গন্ধ ছড়িয়ে আর অচেনা দিকসীমায় হারিয়ে-যাওয়া চকচকে লাইনগুলোর লোভানি দিয়ে কেবলই হাতছানি দিতে লাগল।
ভাবলুম, ‘নিজনি নভগরোদে যাই। ওখানে দাঁড়কাককে পাওয়া যাবে। উনি তো সরমোভোয় আছেন। আমায় দেখে উনি খুশিই হবেন। নিশ্চয় আমায় ওঁর কাছে থাকতে দেবেন কিছুদিন। তারপর এদিকে সব ঠান্ডা হয়ে গেলে বাড়ি ফিরে আসব। কিংবা, কে জানে… মনে হল কে যেন আমার ভেতর থেকে কথা বলে উঠল, ‘কে জানে হয়তো আর ফিরবই না।’
‘হ্যাঁ, সেই ভালো,’ হঠাৎ শক্ত হয়ে মনস্থির করে ফেললুম। আর নিজের এই সিদ্ধান্তের গুরুত্ব ক্রমশ একটু-একটু করে বুঝতে পেরে, যখন আমি দাঁড়িয়ে উঠলুম তখন নিজেকে বেশ বড়সড়, শক্তসমর্থ আর দৃঢ়চিত্ত মনে হল।