০৮:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -৪২)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 17

আর্কাদি গাইদার

পঞ্চম পরিচ্ছেদ

হঠাৎ গান শুনে আমার ঘুম ভাঙল। মনে হল, মজুররা ভারি কিছু একটা তুলতে তুলতে গান জুড়েছে।

সাবাস, জোয়ান, হে’ই-ও!

ভাঙা, কিন্তু বেশ মিষ্টি চড়া গলায় কে একজন আগে আগে গাইছে। আর অন্য সবাই দোহার ধরছে কর্কশ গলায়:

হাত লাগাও, জোর হাত লাগাও।

প্রচণ্ড আওয়াজ করে এবার কী যেন নড়ে উঠল।

হেই… মারো ঠেলা,

সব ঠিক হায়,

কুত্তি তব ভি বৈঠা হায়।

বাক্স থেকে এবার মাথা বের করলুম। দেখলুম, যবের রুটির টুকরোর চারপাশে পিপড়েরা যে ভাবে ঘিরে দাঁড়ায় সেইভাবে মজুররাও প্রকান্ড একটা মরচে-ধরা কপিকলকে ঘিরে ধরে গড়ানো লোহার পাতের ওপর দিয়ে একটা মস্তখোলা মালগাড়ির ওপর সেটাকে টেনে তুলছে। ভিড়ের মধ্যে মিশে থাকা মূল গায়েন এই সময়ে ফের শুরু করল:

হেই… লাথসে ভাগ রহা নিকোলাই,

হেই… উসিসে ফায়দা ক্যা উঠা ভাই!

আবার একটা ঝনঝন আওয়াজ উঠল।

আ যা, ভেইয়া, বান্ধ লে কোমর, দরিয়ামে ডাল দে আলেককো লে কর।

এরপর আবার একটা ঝন আর তারপর ধূপ করে একটা জোর আওয়াজ। দেখি, দুম্বো কপিকলটা এবার মালগাড়ির ওপর চেপে বসেছে। গান থেমে গিয়ে এবার একটা হল্লা উঠল, অনেকে একসঙ্গে চে’চাচ্ছে, কথা বলছে, দিব্যি গালছে।

‘হ্যাঁ, গান বটে একখানা!’ মনে মনে ভাবলুম। ‘কিন্তু ওই আলেটা কে আবার? কে আর হবে, নিশ্চয়ই কেরোস্কি! আজামাসে অবিশ্যি অমন গান গাইলে আর দেখতে হত না, সঙ্গে সঙ্গেই পুলিপোলাও চালান হয়ে যেত। এখানে কিন্তু স্থানীয় রক্ষী-বাহিনীর লোক দিব্যি মুখ ফিরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, যেন কিছুটি কানে যাচ্ছে না।’

নোংরা পুঁচকে স্টিমারটা নোঙর ফেলে দাঁড়িয়ে ছিল স্টিমার-ঘাটায়। স্টিমার ভাড়া পঞ্চাশ কোপেক আমার সঙ্গে ছিল না, এদিকে স্টিমারে ওঠার সরু পথটার মুখে পাহারা দিচ্ছে একজন টিকিট কালেক্টর আর রাইফেল কাঁধে এক মাল্লা।

 

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -৪২)

০৮:০০:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

পঞ্চম পরিচ্ছেদ

হঠাৎ গান শুনে আমার ঘুম ভাঙল। মনে হল, মজুররা ভারি কিছু একটা তুলতে তুলতে গান জুড়েছে।

সাবাস, জোয়ান, হে’ই-ও!

ভাঙা, কিন্তু বেশ মিষ্টি চড়া গলায় কে একজন আগে আগে গাইছে। আর অন্য সবাই দোহার ধরছে কর্কশ গলায়:

হাত লাগাও, জোর হাত লাগাও।

প্রচণ্ড আওয়াজ করে এবার কী যেন নড়ে উঠল।

হেই… মারো ঠেলা,

সব ঠিক হায়,

কুত্তি তব ভি বৈঠা হায়।

বাক্স থেকে এবার মাথা বের করলুম। দেখলুম, যবের রুটির টুকরোর চারপাশে পিপড়েরা যে ভাবে ঘিরে দাঁড়ায় সেইভাবে মজুররাও প্রকান্ড একটা মরচে-ধরা কপিকলকে ঘিরে ধরে গড়ানো লোহার পাতের ওপর দিয়ে একটা মস্তখোলা মালগাড়ির ওপর সেটাকে টেনে তুলছে। ভিড়ের মধ্যে মিশে থাকা মূল গায়েন এই সময়ে ফের শুরু করল:

হেই… লাথসে ভাগ রহা নিকোলাই,

হেই… উসিসে ফায়দা ক্যা উঠা ভাই!

আবার একটা ঝনঝন আওয়াজ উঠল।

আ যা, ভেইয়া, বান্ধ লে কোমর, দরিয়ামে ডাল দে আলেককো লে কর।

এরপর আবার একটা ঝন আর তারপর ধূপ করে একটা জোর আওয়াজ। দেখি, দুম্বো কপিকলটা এবার মালগাড়ির ওপর চেপে বসেছে। গান থেমে গিয়ে এবার একটা হল্লা উঠল, অনেকে একসঙ্গে চে’চাচ্ছে, কথা বলছে, দিব্যি গালছে।

‘হ্যাঁ, গান বটে একখানা!’ মনে মনে ভাবলুম। ‘কিন্তু ওই আলেটা কে আবার? কে আর হবে, নিশ্চয়ই কেরোস্কি! আজামাসে অবিশ্যি অমন গান গাইলে আর দেখতে হত না, সঙ্গে সঙ্গেই পুলিপোলাও চালান হয়ে যেত। এখানে কিন্তু স্থানীয় রক্ষী-বাহিনীর লোক দিব্যি মুখ ফিরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, যেন কিছুটি কানে যাচ্ছে না।’

নোংরা পুঁচকে স্টিমারটা নোঙর ফেলে দাঁড়িয়ে ছিল স্টিমার-ঘাটায়। স্টিমার ভাড়া পঞ্চাশ কোপেক আমার সঙ্গে ছিল না, এদিকে স্টিমারে ওঠার সরু পথটার মুখে পাহারা দিচ্ছে একজন টিকিট কালেক্টর আর রাইফেল কাঁধে এক মাল্লা।