আর্কাদি গাইদার
পঞ্চম পরিচ্ছেদ
‘এ্যাই, চোপ, ফ্যাচফ্যাচ বন্ধ করো!’ বেসামরিক খি’চিয়ে উঠল। আর একটু বিরত হয়ে রক্ষী-বাহিনীর লোকেদের দিকে তাকাতে লাগল।
‘আরে, যা-যা, নিজেই চুপ থাক দেখি! চোরা-গোয়েন্দা কোথাকার! নোকটা ইস্তেহারগুলোর ওপর কীভাবে ঝাঁপ খেয়ে পড়ল দেখলে?’
এক টুকরো কাটা শশা এইসময়ে বেসামরিকের কান ঘে’ষে ছুটে বেরিয়ে গেল।
চারিদিক থেকে যাত্রীরা ভিড় করে হুমড়ি খেয়ে পড়ায় রক্ষী-বাহিনীর লোকেরা ভয় পেয়ে চারিদিকে তাকাতে-তাকাতে বুঝিয়ে বলতে লাগল:
‘অ্যাই, হটো, হটো, পিছু হটো! অ্যাই, চুপ, চুপ, নাগরিকবৃন্দ, চুপ কর!’
হঠাৎ একটা কান-ফাটানো সাইরেনের আওয়াজ শোনা গেল। ক্যাপ্টেনের ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে কে একজন পাগলের মতো চে’চাতে লাগল:
‘বাঁদিক থেকে সরে দাঁড়ান! বাঁদিক থেকে সরে দাঁড়ান! নইলে স্টিমার উলটে যাবে!’
অল্প কাত-হয়ে-যাওয়া বাঁ দিক থেকে স্টিমারের উলটো দিকে ছুটল জনতা।
এই সাময়িক হট্টগোলের সুযোগ নিয়ে বেসামরিক লোকটা রক্ষী-বাহিনীর লোকজনকে বাপান্ত করতে করতে ওপরের ব্রিজে ওঠবার মইয়ের মুখটায় সরে গেল। সেখানে তখন ফ্যাকাশে রক্তশূন্য মুখে উত্তেজিত অবস্থায় সেই দুই অফিসার দাঁড়িয়ে ছিল।
অবশেষে স্টিমার সরমোভোয় নোঙর করল। শ্রমিকরা আগেভাগে তাড়াতাড়ি নেমে গেলেন। পাড়ে নামবার পর দেখলুম, বন্ধুটি কখন আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ওর চোখ দুটো চকচক করছে, দোমড়ানো ইস্তাহারগুলো দুহাতে বুকে চেপে ধরে আছে ও।
যাবার সময় চে’চিয়ে বলে গেল, ‘এসি আমার সঙ্গে দেখা করবি কিন্তু! সোজা ভারিখায় চলি যাস, গিয়ে ভাস্কা কোরচাগিনের বাসা জিজ্ঞেসা করবি। সব্বাই কয়ে দেবে।’