আর্কাদি গাইদার
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ
‘তুমি? এখানে কী করতে?’
হঠাৎ লক্ষ্য করলুম জনতা উত্তেজিত হয়ে উঠেছে। চত্বরের ওপরের আকাশে একটা জোর গুঞ্জন উঠল। আর আমাদের চারপাশে সকলের মুখগুলোকে কেমন ক্রুদ্ধ, উত্তেজিত আর বিভ্রান্ত মনে হতে লাগল।
ওঁর প্রশ্নকে উপেক্ষা করেই আমি বললুম, ‘এত সোরগোল কেন, সেমিওন ইভানোভিচ?’
উনি চটপট বলে গেলেন, ‘এক্ষুনি একটা টেলিগ্রাম এসে পৌঁছেছে। কেরেনূষ্কি বিপ্লবের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করছে। জেনারেল কর্নিলভ দোন-অঞ্চলে পালিয়ে গিয়ে কসাক-বাহিনী সংগঠিত করছে।’
হেমন্তের ছোট-ছোট দিনগুলো দ্রুত কেটে যেতে লাগল আমার। আলোর তুফান তুলে ছুটন্ত এক্সপ্রেস ট্রেনের পাশ দিয়ে পথের ধারের ছোট স্টেশনগুলো যেমন দ্রুত পেছনে ছুটে যায়, তেমনিভাবে। একটা কাজও তাড়াতাড়ি জোগাড় হয়ে গেল আমার। আমিও একজন দরকারী লোক হয়ে উঠলুম। দ্রুত পরিবর্তনশীল ঘটনাচক্রের আবর্ত’ গ্রাস করে নিল আমায়।
এই রকম এক প্রচণ্ড আলোড়নের দিনে দাঁড়কাক আমায় ডেকে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে বললেন:
‘এক-দৌড়ে কমিটির কাছে যাও দেখি, বরিস। ওদের গিয়ে বল যে ভারিখা থেকে একজন প্রচারক চেয়ে পাঠানোয় আমি সেখানে যাচ্ছি। এরশভকে খুঁজে বের করে আমার বদলে ওকেই ছাপাখানায় যেতে বোলো। যদি এরশভকে না পাও, তাহলে… আচ্ছা, একটা পেন্সিল দাও তো। আচ্ছা, এই-চিঠিটাই ছাপাখানায় নিয়ে যাও। ছাপাখানার আপিসে এটা দিও না, মেক-আপ ম্যানের হাতে-হাতে দিও।
মেক-আপ ম্যানকে মনে আছে তো? সেই-যে কোরচাগিনদের বাসায় দেখেছিলে, চোখে-চশমা, ময়লামতো একটি লোক? কাজটা হয়ে গেলে ভারিখায় আমার কাছে চলে এস। আর দ্যাখো, কমিটিতে যদি নতুন কোনো ইস্তাহার থাকে তো কিছু সঙ্গে নিয়ে এস। পাভেলকে বোলো, আমি তোমায় ইস্তাহার নিয়ে যেতে বলেছি। এক মিনিট দাঁড়িয়ে যাও, বরিস!’ পেছন থেকে চে’চিয়ে বললেন উনি। ‘বাইরে বেশ ঠাণ্ডা। অন্ততপক্ষে আমার পুরনো বর্ষাতিটা তো গায়ে জড়িয়ে যাও।’
Sarakhon Report 



















