শশাঙ্ক মণ্ডল
কন্যা বিদায়ের গানে করুণ রসের আবাহন ঘটে করুণ মানবিক আবেদনে পূর্ণ হয়ে ওঠে। বসুর অন্তর বেদনা গভীর আর্তিতে ধরা পড়ে এভাবে-
-‘বাও নাই কো বাতাস নাইকো আমার পাল্কীর পরদা ওড়ে রে
আমার পাল্কীর পরদা ঘুচাইয়া আমার বিবি কেন কান্দেরে।
নববধূর মনে তার বাপের বাড়ির ছবি ভেসে ওঠে পুরানো পরিবেশ আত্মীয় স্বজনের কথা মনে পড়ে আর নতুন জীবনের প্রতি একটু শঙ্কা- তার মনে এক বিষাদঘন মুহূর্তের সৃষ্টি করে, তাই বিবি বলে ওঠে- আমি তারি লাগি কান্দি’ ‘আমার ঝরে চোখের পানি।’
নববধূ শ্বশুর বাড়িতে গেলে বাড়ির মেয়েরা নানা সামাজিক অনুষ্ঠানের মধ্যে নানা রকম গান করে, এসব গান মহিলামহলেই সীমাবদ্ধ থাকে, পুরুষের এখানে প্রবেশ নিষিদ্ধ। এসব গানে যৌবন জলতরঙ্গের মিঠে সুরের পাশাপাশি দুঃখদৈন্য সামাজিক বঞ্চনা সব কিছুই প্রকাশিত হয়। এধরনের কিছু গান গাওয়া হয়
(১) জল আনতে গিয়েছিলাম যমুনার ওই ঘাটে ভেসে এল চাঁপা ফুল খোপায় নিলাম তুলে।
ননদী কাল সাঁঝের বেলায় চুল কেন তোর এলোমেলো পিঠে কেন ধুলো। মোল্লারগা ঐ কালো এড়ে মারলো জোড়া লাথি। ও ননদী কাল সাঁঝের বেলায় চুল কেন তোর এলোমেলো টেবো কেন ফুলো খুদে বল্লায় চাক বেধেছে কালো গাছের আড়ে বাসনা ধারে দিলাম টান, এই কামড়েছে গালে।
সে যে কেন এল না, কিছু ভাললাগে না এবার আসুক তারে আমি মজা দেখাব। প্রজাপতি উড়ে গিয়ে বলনা তারে আমি নই তার হাতের খেলনা। সে যে যখন তখন মোরে করে জ্বালাতন এবার আসুক আমি তারে মজা দেখাব। যদি ফুলগুলি অভিমানে ঝরে যায় মালা গেঁথে আমি কারে পরাব সে যে কেন এল না কিছু ভাল লাগে না।