নিজস্ব প্রতিনিধি
দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের।
শনিবার সকাল থেকে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সেইসঙ্গে বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারিও। তবে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য জানায়নি কোর্ট প্রশাসন। সরেজমিনে দেখা গেছে, আদালতের প্রত্যেকটি প্রবেশ মুখে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর এপিসিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না কাউকে। এছাড়া চলমান রয়েছে তল্লাশি কার্যক্রমও। আইনজীবী পরিচয়ে কেউ প্রবেশ করতে চাইলে তাদের পরিচয়পত্র যাচাই করছেন নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সুপ্রিম কোর্ট অ্যান্ড স্পেশাল কোর্ট সিকিউরিটি বিভাগের উপকমিশনার মো. মিনহাজ-উল-ইসলাম সাংবাদিতকদের বলেন, দেশের চলমান পরিস্থিতির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সুপ্রিম কোর্ট ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তাবলয় বাড়ানো হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুপ্রিম কোর্টের এক কর্মকর্তা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের ভেতরে ম্যুরাল ভাঙার খবর এসেছে আমাদের কাছে। এই ম্যুরাল ভাঙার পাশাপাশি যদি সুপ্রিম কোর্টে হামলা হয় তাহলে সেটি হবে অত্যন্ত নেতিবাচক দিক। এই বিবেচনায় শনিবার সকাল থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যতক্ষন পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে ততক্ষণ সেনাবাহিনী শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করবে।
সুপ্রিম কোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের ভেতর শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য আছে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।’
সূত্র মতে, সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেনে ১৯৭২ সালের ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উদ্বোধন করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিন তিনি যেখানে ভাষণ দিয়েছিলেন, সেই স্থানটি সংরক্ষণের লক্ষ্যে নির্মিত হয়েছিল স্মৃতিস্তম্ভ । স্মৃতিস্তম্ভে শেখ মুজিবুরে ছবি ফলক ও ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৬৯ আইনজীবীর নাম খোদাই করা হয়েছিল। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের পর সেই স্মৃতিস্তম্ভে থাকা ছবি বিকৃত করে দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে পুরো স্মৃতিস্তম্ভটি কাপড়ে মুড়ে রাখা হয়। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর ও হামলার ঘটনার ধারাবাহিকতায় সুপ্রিম কোর্টের ভেতরকার স্মৃতিস্তম্ভটি ভেঙে ফেলা হবে বলে গুঞ্জন ওঠে। তাই শনিবার সকাল থেকে সুপিম কোর্টের সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
Sarakhon Report 
















