সত্যেন্দ্রকুমার বসু
তিএনশান্ – সমরখন্দ – তুখার
কুচা ছেড়ে হিউএনচাঙ কিজিল ও আকশূ হয়ে উত্তরে তিএন্শান্ পর্বতের দিকে চললেন। এ দেশ পশ্চিম তুরুস্কদের সাম্রাজ্যের ভিতরে ছিল বটে তবে এ সীমান্তে শান্তিরক্ষার ব্যবস্থা এ সময়ে ভালো ছিল না। এমনকি হিউএনচাঙ কুচা ছাড়বার পরই দু’ হাজার অশ্বারোহী তুরুস্ক দস্যুদের সাক্ষাৎ পান। এরা একটা মস্ত যাত্রীপ্রবাহ (caravan) লুট করে লুটের সামগ্রীর ভাগ নিয়ে ঝগড়া করছিল।
হিউএনচাঙ বেদাল গিরিপথ দিয়ে তিএশানের উত্তরে চলে গেলেন। অর্থাৎ তারিম অববাহিকা থেকে সীর দরিয়ার অববাহিকাতে গেলেন। তিএন্শানের এই উত্তরদিকটা তুষার নদে পূর্ণ। হিউএনচাঙ এই ভাবে তুষার নদের বর্ণনা দিয়েছেন- ‘এই তুষার পর্বত পামিরের উত্তর কোণে অবস্থিত। এটা ভীষণ বিপদ সংকুল, আকাশস্পর্শী পর্বত।
সৃষ্টির প্রথম থেকে এখানে বরফ জমেছে আর প্রকাণ্ড বরফের নদী হয়েছে- যা কোনো সময়েই গলে না। শক্ত ঝকঝকে সাদা বরফের চাংড়া ভেঙে গড়িয়ে পড়ছে আর মেঘের মধ্যে মিলিয়ে যাচ্ছে। একদৃষ্টে চেয়ে থাকলে চোখ ঝলসে যায়।
পথের উপর বরফের পাহাড় ভেঙে ভেঙে পড়ে; কোনো কোনোটা এক শো ফুট উঁচু, কোনো কোনোটা ত্রিশ-চল্লিশ ফুট চওড়া। এসব পাহাড় অতিক্রম করা কষ্টসাধ্য আর বিপদসংকুল। এর উপর বাতাসের আর তুষারের ঝড় আর ঘূর্ণীবাতাস সব সময়েই বইছে।
(চলবে)
হিউএনচাঙ (পর্ব-৩১)