০২:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ফারাক্কা গিয়ে যা দেখলেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল

  • Sarakhon Report
  • ০৩:৫৩:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫
  • 106

গঙ্গার জলবন্টন চুক্তি নিয়ে বৃহস্পতিবার আলোচনায় বসবেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। তার আগে ফারাক্কা ঘুরে গেলেন তারা।

গঙ্গার জল মাপতে

গঙ্গার জলবণ্টন চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৬ সালে। এই চুক্তির নবীকরণ করা নিয়েই বৃহস্পতিবার বৈঠক করবেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। তার আগে গঙ্গার জল মাপতে এবং পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রতিনিধিরা ফরাক্কা গেলেন। চড়ে বসলেন নৌকায়।

জল মাপার গুরুত্ব

ফারাক্কার গঙ্গায় কত জল আছে, সেটা মেপে দেখাটা খুবই জরুরি। কারণ, চুক্তি অনুসারে গঙ্গায় যদি ৭৫ হাজার কিউসেকের বেশি জল থাকে তাহলে ভারত ৪০ হাজার এবং বাংলাদেশ ৩৫ হাজার কিউসেক জল পাবে। ৭০ থেকে ৭৫ হাজার কিউসেক জল থাকলে বাংলাদেশ ৩৫ হাজার কিউসেক জল পাবে, বাকিটা ভারত। জল তার থেকে কম থাকলে দুই দেশ সমানভাবে ভাগাভাগি করে নেবে।

জল মাপার কাজ শুরু

নৌকা কিছুদূর যাওয়ার পর জল মাপার কাজ শুরু হলো। এই এক জায়গায় নয়, একাধিক জায়গায় জল মেপে দেখা হলো। গঙ্গায় জল কত আছে, তা দেখা হলো। বেশ খানিকক্ষণ জল মাপার কাজ করে আবার ঘাটে ভিড়লো তাদের নৌকা।

কী বললেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতা

বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতা মোহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, “এটা আমাদের রুটিন কাজ। বছরে একবার পরীক্ষা করতে আসি। দেখলাম চুক্তি বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রতিদিন জল মাপা হয়। আমাদের টিম আছে। তারা মাপছেন। আমরা শুধু পরীক্ষা করলাম যে চুক্তি অনুযায়ী পানি ভাগাভাগি হচ্ছে কি না। দেখলাম সেটা হচ্ছে। এই বছর জলের গতি কম, আমরা দুই পক্ষই কম জল পাচ্ছি।”

ভারতীয় প্রতিনিধি যা জানালেন

কেন্দ্রীয় জল কমিশনের সাব ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার সম্রাট দত্ত বলেছেন, “চুক্তি অনুযায়ী এখানে ফিডার ক্যানালে এবং গঙ্গাতে ঠিকঠাক জল ছাড়া হচ্ছে কি না সেটা পর্যবেক্ষণ করতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা এখানে এসেছিলেন। প্রতিবছরই মার্চ মাস নাগাদ একবার আসেন। দুই দেশের দলই করে এটা। আজ এই দলটি জল পরিমাপ করে দেখলেন যে চুক্তি অনুযায়ী জল ছাড়া হচ্ছে কি না।”

ফিডার ক্যানালের গুরুত্ব

এই ফিডার ক্যানাল দিয়েই গঙ্গার জল কলকাতার দিকে যায়। ফারাক্কা ব্যারাজ তৈরির উদ্দেশ্যই ছিলো কলকাতা বন্দরকে বাঁচানো। জলের নাব্যতা বজায় না থাকলে কলকাতায় জাহাজ আসবে না। সেই নাব্যতা বজায় রাখার জন্য গঙ্গার জল যাতে নির্দিষ্ট পরিমাণে আসে তা নিশ্চিত করা দরকার হয়।

গঙ্গায় জল কম

গঙ্গায় জলের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম বলে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতা জানিয়েছেন। আসলে বর্ষার কয়েকমাস বাদ দিলে বাকি সময় গঙ্গার জলের পরিমাণ এখন কম থাকে। সরেজমিনে গিয়ে সেটাই দেখতে পেয়েছেন প্রতিনিধিরা। প্রতিদিন গঙ্গার জল মাপা হয়। সেই অনুসারে জলবন্টন করা হয়।

সৌহার্দ্যের পরিবেশে

দুই দেশের প্রতিনিধিদলের কলকাতা থেকে আসা, গঙ্গায় জল মাপা এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার মধ্যে সৌহার্দ্যের ছবি ধরা পড়েছে। দুই দেশের প্রতিনিধিদের কথার মধ্যেও তা ফুটে উঠেছে।

ফিরে যাওয়া

বুধবার নিউ ফারাক্কা স্টেশন থেকে কলকাতায় ফেরার জন্য শতাব্দী এক্সপ্রেস ধরলেন বাংলাদেশ ও ভারতের প্রতিনিধিরা। সোমবার সন্ধ্যায় তারা কলকাতা থেকে এখানেই নেমেছিলেন।

একদিনের জন্য এসে ফারাক্কার পরিস্থিতি দেখে এবার গঙ্গার জলবন্টন নিয়ে বৈঠকে বসবেন তারা।

ডিডাব্লিউ ডটকম

ফারাক্কা গিয়ে যা দেখলেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল

০৩:৫৩:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫

গঙ্গার জলবন্টন চুক্তি নিয়ে বৃহস্পতিবার আলোচনায় বসবেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। তার আগে ফারাক্কা ঘুরে গেলেন তারা।

গঙ্গার জল মাপতে

গঙ্গার জলবণ্টন চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৬ সালে। এই চুক্তির নবীকরণ করা নিয়েই বৃহস্পতিবার বৈঠক করবেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। তার আগে গঙ্গার জল মাপতে এবং পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রতিনিধিরা ফরাক্কা গেলেন। চড়ে বসলেন নৌকায়।

জল মাপার গুরুত্ব

ফারাক্কার গঙ্গায় কত জল আছে, সেটা মেপে দেখাটা খুবই জরুরি। কারণ, চুক্তি অনুসারে গঙ্গায় যদি ৭৫ হাজার কিউসেকের বেশি জল থাকে তাহলে ভারত ৪০ হাজার এবং বাংলাদেশ ৩৫ হাজার কিউসেক জল পাবে। ৭০ থেকে ৭৫ হাজার কিউসেক জল থাকলে বাংলাদেশ ৩৫ হাজার কিউসেক জল পাবে, বাকিটা ভারত। জল তার থেকে কম থাকলে দুই দেশ সমানভাবে ভাগাভাগি করে নেবে।

জল মাপার কাজ শুরু

নৌকা কিছুদূর যাওয়ার পর জল মাপার কাজ শুরু হলো। এই এক জায়গায় নয়, একাধিক জায়গায় জল মেপে দেখা হলো। গঙ্গায় জল কত আছে, তা দেখা হলো। বেশ খানিকক্ষণ জল মাপার কাজ করে আবার ঘাটে ভিড়লো তাদের নৌকা।

কী বললেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতা

বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতা মোহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, “এটা আমাদের রুটিন কাজ। বছরে একবার পরীক্ষা করতে আসি। দেখলাম চুক্তি বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রতিদিন জল মাপা হয়। আমাদের টিম আছে। তারা মাপছেন। আমরা শুধু পরীক্ষা করলাম যে চুক্তি অনুযায়ী পানি ভাগাভাগি হচ্ছে কি না। দেখলাম সেটা হচ্ছে। এই বছর জলের গতি কম, আমরা দুই পক্ষই কম জল পাচ্ছি।”

ভারতীয় প্রতিনিধি যা জানালেন

কেন্দ্রীয় জল কমিশনের সাব ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার সম্রাট দত্ত বলেছেন, “চুক্তি অনুযায়ী এখানে ফিডার ক্যানালে এবং গঙ্গাতে ঠিকঠাক জল ছাড়া হচ্ছে কি না সেটা পর্যবেক্ষণ করতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা এখানে এসেছিলেন। প্রতিবছরই মার্চ মাস নাগাদ একবার আসেন। দুই দেশের দলই করে এটা। আজ এই দলটি জল পরিমাপ করে দেখলেন যে চুক্তি অনুযায়ী জল ছাড়া হচ্ছে কি না।”

ফিডার ক্যানালের গুরুত্ব

এই ফিডার ক্যানাল দিয়েই গঙ্গার জল কলকাতার দিকে যায়। ফারাক্কা ব্যারাজ তৈরির উদ্দেশ্যই ছিলো কলকাতা বন্দরকে বাঁচানো। জলের নাব্যতা বজায় না থাকলে কলকাতায় জাহাজ আসবে না। সেই নাব্যতা বজায় রাখার জন্য গঙ্গার জল যাতে নির্দিষ্ট পরিমাণে আসে তা নিশ্চিত করা দরকার হয়।

গঙ্গায় জল কম

গঙ্গায় জলের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম বলে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতা জানিয়েছেন। আসলে বর্ষার কয়েকমাস বাদ দিলে বাকি সময় গঙ্গার জলের পরিমাণ এখন কম থাকে। সরেজমিনে গিয়ে সেটাই দেখতে পেয়েছেন প্রতিনিধিরা। প্রতিদিন গঙ্গার জল মাপা হয়। সেই অনুসারে জলবন্টন করা হয়।

সৌহার্দ্যের পরিবেশে

দুই দেশের প্রতিনিধিদলের কলকাতা থেকে আসা, গঙ্গায় জল মাপা এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার মধ্যে সৌহার্দ্যের ছবি ধরা পড়েছে। দুই দেশের প্রতিনিধিদের কথার মধ্যেও তা ফুটে উঠেছে।

ফিরে যাওয়া

বুধবার নিউ ফারাক্কা স্টেশন থেকে কলকাতায় ফেরার জন্য শতাব্দী এক্সপ্রেস ধরলেন বাংলাদেশ ও ভারতের প্রতিনিধিরা। সোমবার সন্ধ্যায় তারা কলকাতা থেকে এখানেই নেমেছিলেন।

একদিনের জন্য এসে ফারাক্কার পরিস্থিতি দেখে এবার গঙ্গার জলবন্টন নিয়ে বৈঠকে বসবেন তারা।

ডিডাব্লিউ ডটকম