সারাক্ষণ রিপোর্ট
হাইকোর্ট একটি রুল জারি করেছে, যার মাধ্যমে প্রশ্ন তোলা হয়েছে কেন রাষ্ট্রপতিকে প্রধান বিচারপতির পরিবর্তে সংসদের স্পিকারের কাছে শপথ প্রদান করানো হবে এবং এই ১৫তম সংশোধনীর বিধানটি ১৯৭২ সালের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক কেন নয়।
পটভূমি
- বদলের ইতিহাস:
- প্রথাগত নিয়ম: পূর্বে রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতির কাছে শপথ গ্রহণ করতেন।
- পরিবর্তনের ধারা:
- প্রথমে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে শপথ সংসদের স্পিকারের কাছে নেওয়া হয়।
- পরে পঞ্চম সংশোধনীতে তা বাতিল করে পুনরায় প্রধান বিচারপতির কাছে নেওয়া হয়।
- ২০১১ সালে ১৫তম সংশোধনীতে পুনরায় রাষ্ট্রপতির শপথ সংসদের স্পিকারের কাছে নেবার বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
- চ্যালেঞ্জ:
কবি শহীদুল্লাহ ফরাজী রিট আবেদনের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়ার বৈধতা ও সংবিধানের মূল দর্শনের সাথে এর সামঞ্জস্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেন।
বিচারিক শুনানি ও পক্ষপাত
- শুনানির বিবরণ:
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের বেঞ্চ রিটের প্রাথমিক শুনানির পর রুল জারি করেন। - পক্ষ ও প্রতিনিধিত্ব:
- রিটের পক্ষে: আইনজীবী ব্যারিস্টার ওমর ফারুক (সহ ফাতেমা-তুজ-জোহরা) যুক্তি উপস্থাপন করেন।
- রাষ্ট্রপক্ষ: ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন।
- বিবাদী কর্মকর্তা: রিটে আইন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে বিবাদী হিসেবে নাম করা হয়েছে।
বিধানগত প্রক্রিয়া ও যুক্তি
- প্রথাগত ও আন্তর্জাতিক প্রথা:
অধিকাংশ গণতান্ত্রিক দেশে রাষ্ট্রপতির শপথ প্রধান বিচারপতির মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়, যা সংবিধানের মূল দর্শন ও বিচার বিভাগের মর্যাদা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ। - বিচারিক যুক্তি:
ব্যারিস্টার ওমর ফারুক বলেন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি একে অপরকে শপথ প্রদান করতেন। ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদের স্পিকারের কাছে শপথ নেবার সিদ্ধান্ত, সংবিধানের ঐতিহ্য ও দর্শনের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।- সংবিধানের মূল নীতি:
রাষ্ট্রপতির শপথ প্রদান একটি সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা, যা রাষ্ট্রের তিনটি শাখার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে। - দলগত প্রভাব:
এই বিধানের ফলে রাষ্ট্রপতির শপথ গ্রহণের প্রক্রিয়া বিচারের মর্যাদা ও স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হতে পারে বলে দাবি তোলা হয়েছে।
- সংবিধানের মূল নীতি:
উপসংহার ও ভবিষ্যৎ পথ
পিটিশনের মূল দাবী হল, রাষ্ট্রপতির শপথ প্রদান প্রধান বিচারপতিকে থেকে করা উচিত। এভাবে:
- সংবিধানের দর্শন ও আন্তর্জাতিক প্রথা বজায় থাকবে।
- রাষ্ট্রের তিনটি শাখার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা পাবে।
পিটিশন অনুযায়ী, প্রজাতন্ত্রের গণতান্ত্রিক ও শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থা বিকাশের জন্য এই প্রক্রিয়া পুনর্বহাল করা অপরিহার্য।